ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫
Sharenews24

যেভাব শেয়ারবাজারকে দক্ষিণ এশিয়ার রোল মডেলে পরিণত করা যায়

২০২৪ মে ২২ ২২:৫৪:২১
যেভাব শেয়ারবাজারকে দক্ষিণ এশিয়ার রোল মডেলে পরিণত করা যায়

জয়ন্ত দে

দেশের শেয়ারবাজার বর্তমানে এমন একটি অবস্থানে রয়েছে যেটি একদিকে বিনিয়োগকারীদের সর্বস্বান্ত করছে, অন্যদিকে দেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর শেয়ারবাজার গত এক দশকে এগিয়ে গেছে বহুদূর আর বিনিয়োগকারীরা যেমন লাভবান হয়েছেন, তাদের দেশের অর্থনীতিও হয়েছে সমৃদ্ধ। কিন্তু আমাদের দেশের শেয়ারবাজার ধমকে আছে একটি কুণ্ডলীতে। আর আমাদের শেয়ারবাজার দেশের অগ্রযাত্রায় যেমন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেনি, বেশিরভাগ বিনিয়োগকারীকে করেছে পুঁজিহারা।

বহুমুখী সমস্যায় জর্জরিত দেশের শেয়ারবাজারকে এগিয়ে নিতে হলে এখন সরকারের বলিষ্ঠ এবং বাস্তবমুখী পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন। দেশের উন্নয়ন বলতে শুধুমাত্র পরিকাঠামোগত উন্নয়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে সামগ্রিক উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জিত হবে না। জনজীবনের মান উন্নয়ন এবং প্রতিষ্ঠানগুলোকে শাক্তিশালী করা অতীব গুরুত্বপূর্ণ। একটি টেকসই ও সমৃদ্ধ অর্থনীতি গড়ে তুলতে এর বিকল্প নেই। দেশের শেয়ারবাজারে ৩০ লক্ষ বিনিয়োগকারী রয়েছে। এছাড়া শেয়ারবাজারের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে কয়েকশত প্রতিষ্ঠান। আর বর্তমানে শেয়ারবাজার যেভাবে চলছে এতে বিনিয়োগকারী টিকে থাকা যেমন মুশকিল হয়ে পড়েছে, ঠিক তেমনি শেয়ারবাজারের প্রতিষ্ঠানগুলো দুর্বল হয়ে পড়ছে। যেটি দেশের জন্য অশনি সংকেত বয়ে আনতে পারে। এমতবস্থায় শেয়ারবাজারকে শক্তিশালী করার কোনো বিকল্প পথ নেই।

যেভাবে শেয়ারবাজার এগিয়ে যেতে পারে

আমি ব্যাক্তিগতভাবে মনে করি সরকার এখন ২০ হাজার কোটি টাকার একটি বন্ড ইস্যু করা উচিত শেয়ারবাজারের জন্য। এই ২০ হাজার কোটি টাকা শেয়ারবাজারকে একদিকে যেমন সাপোর্ট দিবে, অন্যদিক থেকে এই ফান্ডটি কিছু Blue Chip স্টকে ইনভেষ্ট করলে বছর শেষে যে পরিমাণ ডিভিডেন্ড গেইন হবে, সে অর্থ দিয়ে বন্ড হোল্ডারদের ইন্টারেস্ট সার্ভ করা সম্ভব হবে।

শুধু তাই নয়, বর্তমানে Blue Chip স্টকগুলো তাদের Intrinsic Value থেকে অর্ধেক মূল্যে আছে। সরকার এই ফান্ডটিকে ETF ফান্ড হিসাবেও পরবর্তীতে ব্যবহার করতে পারে। এই উদ্দ্যোগটি নেয়া হলে একদিকে শেয়ারবাজার যেমন সমৃদ্ধ হবে, আর ভালো মূলভিত্তিক শেয়ারগুলো ক্রয় করলে মার্কেটে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরে আসবে। শেয়ারবাজারে জনজীবনের সম্পৃক্ততা বাড়বে ও সরকার এখান থেকে বড় অঙ্কের রাজস্ব পাবে। দেশের অর্থনীতির চাকা সচল হবে, বিভিন্ন শিল্প উদ্যোক্তারা শেয়ারবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহ করে আবারো নুতুন করে শিল্প বিপ্লব ঘটতে পারে।

আর এই ফান্ডটির পরিচালনা স্বচ্ছতা আর জবাবদিহিতা শতভাগ নিশ্চিত করতে হবে। সরকার যদি এই উদ্যোগটি নেয়, তাহলে এটি দেশের অর্থনীতিকে দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যাবে। শুধুমাত্র আমাদের গতানুগতিক চিন্তাভাবনা করলে চলবে না। আমাদেরকে ইনোভেটিভ হতে হবে। আর স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হলে স্মার্ট আর গতিশীল শেয়ারবাজারের কোনো বিকল্প নেই।

লেখক স্টক অবজারভারের টেকনিক্যাল অ্যানালিস্ট

শেয়ারনিউজ, ২২ মে ২০২৪

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে