ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪
Sharenews24

১৫ লাখ প্রবাসীর তথ্য যাচ্ছে বেসরকারি হাতে

২০২৪ এপ্রিল ৩০ ১৯:৫২:০৮
১৫ লাখ প্রবাসীর তথ্য যাচ্ছে বেসরকারি হাতে

প্রবাস ডেস্ক : বাংলাদেশ হাইকমিশন বিদেশে ৪৪তম মিশন হিসেবে মালয়েশিয়ায় ই-পাসপোর্ট সেবা চালু করেছে। এক্সপাট সার্ভিসেস কুয়ালালামপুর (ইএসকেএল) নামের একটি আইটি কোম্পানিকে ই-পাসপোর্ট সেবার পুরো প্রক্রিয়াটি পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এতে মালয়েশিয়ার প্রায় ১৫ লাখ প্রবাসীর তথ্য চলে যাচ্ছে বেসরকারি এই প্রতিষ্ঠানটির হাতে।

দূতাবাস সূ্ত্রে জানা গেছে, মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশন এবং পাসপোর্ট অধিদপ্তরের সাথে একটি চুক্তির মাধ্যমে প্রবাসী পরিষেবা ই-পাসপোর্ট পরিষেবা কার্যক্রমে অংশ নিয়েছে এক্সপাট সার্ভিস।

বহুমুখী পাসপোর্ট সেবা প্রদানের জন্য কোম্পানিটি ইতোমধ্যে মালয়েশিয়ার ১৩টি প্রদেশে কার্যক্রম শুরু করেছে। তারা তাদের সার্ভারে জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট, সেবা ব্যবহারকারী বাংলাদেশি নাগরিকদের ছবিসহ সব ধরনের তথ্য সংরক্ষণ করছে। এমনকি তারা আঙ্গুলের ছাপের মতো বায়োমেট্রিক তথ্যও রাখছে।

একটি বেসরকারি সার্ভারে ১৫ লাখ মানুষের তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে যথাযথ সুরক্ষা নিশ্চিত করার ওপর জোর দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলেছেন, তথ্য যেন পাচার না হয়, সে দিকে যথেষ্ট খেয়াল রাখতে হবে। সরকার যদি ডেটা সুরক্ষা নিশ্চিত না করে, তাহলে পরবর্তী সময়ে অনেক জটিলতা তৈরি হতে পারে।

বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির শিক্ষক ও সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ তানভীর হাসান জোহা একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের হাতে এভাবে তথ্য তুলে দেওয়াটা বড় ধরনের নিরাপত্তা-ঝুঁকি বলে মনে করেন। তিনি বলেন, এটা বড় ধরনের নিরাপত্তাঝুঁকি। পরবর্তী সময়ে এসব তথ্যের যেকোনো ধরনের অপব্যবহার হতে পারে।

তানভীর হাসান আরও বলেন, যে কোনো ধরনের তথ্য বিভিন্ন সমস্যার জন্য বিভিন্ন উপায়ে ব্যবহার করা যেতে পারে। সবচেয়ে বড় কথা এই তথ্য নেওয়া হচ্ছে, তবে তা ব্যক্তিগত সুরক্ষা আইনের পরিপন্থী।

জানতে চাইলে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের কাউন্সেলর (ভিসা ও পাসপোর্ট) মিয়া মো. কেয়াম উদ্দিন সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘মালয়েশিয়ায় মোট ১৩টি প্রদেশে আমাদের বিপুলসংখ্যক শ্রমিক রয়েছে; সেসব স্থানে আমাদের হাইকমিশনের পক্ষ থেকে সার্ভিস অফিস খুলে সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।’

তিনি বলেন, ‘তাই শুধু আবেদনপত্র পূরণের জন্য একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারা আবেদন প্রসেস করবে এবং হাইকমিশনের সাক্ষাতের সময় নির্ধারণ করে দেবে, কোনো ধরনের ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা অন্যান্য কাজ করতে পারবে না। এতে নাগরিকের সব তথ্য অন্যদের কাছে চলে যাবে, তা কিন্তু নয়।’

প্রসঙ্গত, ১৮ এপ্রিল ই-পাসপোর্ট সেবা চালু করে মালয়েশিয়া হাইকমিশন। রাজধানী কুয়ালালামপুরের সাউথ গেট কমার্শিয়াল সেন্টারে ‘এক্সপাট সার্ভিসেস’-এর অফিসে এ সেবা কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়। মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনার মো. শামীম আহসানের সভাপতিত্বে ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরী।

অনুষ্ঠানে আবদুল্লাহ আল মাসুদ বলেন, বিদেশে ৪৩টি মিশনে ই-পাসপোর্টের কার্যক্রম চালু হওয়ার পর ৪৪তম মিশন হিসেবে মালয়েশিয়ায় ই-পাসপোর্ট চালু হলো। আরও ৩৬টি মিশনে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম চালু প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

মালয়েশিয়ায় হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান বলেন, মালয়েশিয়ায় প্রায় ১৫ লাখ প্রবাসী বাংলাদেশি বসবাস করেন; সংখ্যার বিচারে যা সৌদি আরবের পর বিশ্বে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম কমিউনিটি। তাঁদের দাবি অনুধাবন করে ‘ই-পাসপোর্ট ও স্বয়ংক্রিয় বর্ডার নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের’ মাধ্যমে এই কর্মসূচি চালু করা হয়েছে।।

শেয়ারবাজার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪

পাঠকের মতামত:

প্রবাস এর সর্বশেষ খবর

প্রবাস - এর সব খবর



রে