ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারি ২০২৫
Sharenews24

কর্মহীন আনোয়ার থেকে শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার, ৪১ বছর পর ধরা

২০২৩ অক্টোবর ০১ ১৭:০০:২২
কর্মহীন আনোয়ার থেকে শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার, ৪১ বছর পর ধরা

নিজস্ব প্রতিবেদক : আনোয়ার হোসেন বাচ্চু (৫৮) পাবনার ঈশ্বরদী স্টেশন রোডে জনতা ফার্মেসিতে ৪১ বছর ধরে শিশু বিশেষজ্ঞ হিসেবে সব ধরনের চিকিৎসাপত্র, ওষুধ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আসছেন। কিন্তু তিনি কোনো শিশু বিশেষজ্ঞ নন। পড়েননি কোনো মেডিক্যাল কলেজেও। প্রয়াত বাবা হারান আলী ছিলেন পল্লী চিকিৎসক। তারা তিন ভাই মিলে পরিচালনা করেন এই ফার্মেসি।

বাবার জন্য খাবার নিয়ে যেতেন বাচ্চু। বাবার পাশে বসে চিকিৎসা দেওয়া দেখতেন। এভাবেই কর্মহীন আনোয়ার হোসেন বাচ্চু হয়ে ওঠেন শিশু বিশেষজ্ঞ। তবে স্থানীয় প্রশাসন, সিভিল সার্জনের চোখ ফাঁকি দিয়ে নবজাতকসহ সকল শিশুর চিকিৎসা দেওয়ার নামে দিয়ে যাচ্ছেন অপচিকিৎসা।

বিষয়টি জানানোর পর দুঃখ প্রকাশ করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে জানান পাবনা সিভিল সার্জন ডাক্তার শহীদুল্লাহ দেওয়ান।

চিকিৎসক হিসেবে আনোয়ার হোসেন বাচ্চু, ওষুধের দোকানদার ও সিরিয়াল দেওয়ার কাজে এক ভাই পান্না ও ল্যাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন আরেক ভাই কেশরু। এই ওষুধ বিক্রয়ের জন্যও নেই ড্রাগ লাইসেন্স। আবার ল্যাবেরও নেই লাইসেন্স। এমনকি ল্যাব টেকনিশিয়ান হিসেবেও নেই কোনো প্রশিক্ষণ সনদ। কেবল দেখেই তিন ভাই তিন বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হয়েছেন। প্রেসক্রিপশন ও ওষুধ দিয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হিসেবে ফি রোগীদের নিকট থেকে একসঙ্গে নেওয়া হয়।

ঈশ্বরদী উপজেলা পল্লী চিকিৎসক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলমগীর পারভেজ বলেন, একজন পল্লী চিকিৎসক হিসেবে নবজাতক ও শিশুদের সকল ধরনের চিকিৎসা দেওয়া অনুচিত। আনোয়ার হোসেন বাচ্চু পল্লী চিকিৎসক সমিতির একজন সদস্য। আগামী ৩ অক্টোবর পল্লী চিকিৎসকদের সভা আছে। সেখানে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার এফ এ আসমা খান বলেন, ‘আমরা এসব হাতুড়ে ডাক্তারের সঙ্গে পারছি না। নানাভাবে প্রলুব্ধ করে গ্রামের সহজ-সরল মানুষদের সঙ্গে প্রতারণা করে যাচ্ছে।’

ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুবীর কুমার দাশ বলেন, মেডিক্যালে লেখাপড়া না করে নবজাতক ও শিশুদের চিকিৎসা প্রদান করাটা বিস্ময়ের। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হবে।

বিস্ময় ও দুঃখ প্রকাশ করে পাবনা সিভিল সার্জন ডা. শহীদুল্লাহ দেওয়ান বলেন, একজন ব্যক্তি মেডিক্যালে লেখাপড়া না করে কিংবা এমবিবিএস পাস না করে শিশুদের চিকিৎসা দিয়ে আসছে কিভাবে! কেবল ৪১ বছর ধরে চিকিৎসা দিয়েই যদি ডাক্তার হওয়া যেত তাহলে মেডিক্যাল কলেজ, মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ করার প্রয়োজন হতো না। এ বিষয়ে অবশ্যই পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

শেয়ারনিউজ, ০১ অক্টোবর ২০২৩

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে