ঢাকা, মঙ্গলবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
Sharenews24

ব্যাংক নয়, বন্ডের মাধ্যমে টেকসই অর্থায়ন

২০২৫ সেপ্টেম্বর ০২ ১২:০২:০০
ব্যাংক নয়, বন্ডের মাধ্যমে টেকসই অর্থায়ন

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের ব্যাংক খাত বর্তমানে শিল্প খাতে বিনিয়োগের মতো সক্ষমতা ধরে রাখছে না—এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এতে করে মূলধনের সংকটে পড়ছেন উদ্যোক্তারা। অনেকেই বলছেন, ব্যাংক নির্ভরতা কমিয়ে এখন সময় এসেছে বাণিজ্যিক বন্ডের মাধ্যমে অর্থ সংস্থানের দিকে ঝুঁকবার।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বিনিয়োগের বিকল্প উৎস গড়ে তুলতে হলে উদ্যোক্তাদের শেয়ারবাজার ও করপোরেট বন্ড মার্কেট কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে হবে। তবে শক্তিশালী বন্ড বাজার গড়তে হলে সরকারি বন্ডকেও বাজারে অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি।

বর্তমানে ব্যাংকগুলো স্বল্পমেয়াদি আমানত থেকে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ দিচ্ছে, যার ফলে খেলাপি ঋণ বেড়েছে এবং ঝুঁকি বাড়ছে। এর প্রভাব পড়ছে অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগে, যা এখন প্রায় স্থবির।

মালয়েশিয়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি সাব্বির খান বলেন,"আমাদের আত্মবিশ্বাসের জায়গা এখন অনেক দুর্বল। এটিকে শক্তিশালী করতে বিকল্প অর্থায়নের পথ খুঁজতে হবে।"

রেডলাইনার নামে এক স্টার্টআপের প্রতিষ্ঠাতা ফুয়াদুর রহমান বলছেন,“এক লাখ টাকা দিয়ে বড় ব্যবসা সম্ভব নয়। তাই আমরা ক্রাউড ফান্ডিংয়ের দিকে ঝুঁকেছি। অল্প মূলধনের লোকজনও এতে অংশ নিতে পারছে।”

ছোট প্রতিষ্ঠানগুলো যেখানে ক্রাউড ফাইন্যান্স মডেল অনুসরণ করছে, সেখানে বড় কোম্পানিগুলোর জন্য করপোরেট বন্ড হতে পারে দীর্ঘমেয়াদি অর্থসংস্থানের প্রধান মাধ্যম।

বিশ্বে বন্ড বাজারের আকার দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৩৩ ট্রিলিয়ন ডলার, যার বড় অংশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র। অথচ বাংলাদেশের করপোরেট বন্ড বাজার এখনও বিশ্বের ১ শতাংশেরও কম।

বিআইবিএম-এর সাবেক মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরী বলেন,"শিল্প খাতে দীর্ঘমেয়াদি ফান্ড আনতে করপোরেটদের বন্ডের দিকে তাকাতে হবে। তবে সবার আগে দরকার সরকারি বন্ড মার্কেট চালু করা, যা বাংলাদেশে এখনও কার্যকরভাবে গড়ে ওঠেনি।"

বিএসইসি’র সাবেক কমিশনার আরিফ খান যুক্ত করেন,"লোন নেওয়া যতটা সহজ, বন্ড ইস্যু করা তার চেয়েও কঠিন। বন্ড প্রক্রিয়াকরণে সময় লাগে ছয় মাস, যেখানে ব্যাংক ঋণ পেতে লাগে এক মাস। সুদের হারও তুলনামূলক বেশি। তবুও ভবিষ্যতের জন্য এটাই টেকসই পথ।"

গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর পূর্বাভাস বলছে, ২০৩০ সাল নাগাদ বৈশ্বিক বন্ড বাজার দাঁড়াবে প্রায় ১৬০.৮ ট্রিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে ৪৫ শতাংশ থাকবে সরকারি বন্ডে।

অর্থনীতিবিদদের মতে, বাংলাদেশে শক্তিশালী বন্ড বাজার গড়ে উঠলে—অর্থনৈতিক কাঠামোয় ভারসাম্য আসবে,নতুন উদ্যোগগুলো নিরাপদ থাকবে, ঝুঁকিপূর্ণ খাতেও আসবে স্থিতিশীলতা

মুসআব/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

অর্থনীতি এর সর্বশেষ খবর

অর্থনীতি - এর সব খবর



রে