ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৩ জুলাই ২০২৫
Sharenews24

বিস্ফোরক স্বীকারোক্তি সাবেক সিইসি নূরুল হুদার

২০২৫ জুলাই ০৩ ১০:২০:৪২
বিস্ফোরক স্বীকারোক্তি সাবেক সিইসি নূরুল হুদার

নিজস্ব প্রতিবেদক: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন (২০১৮) ছিল পরিকল্পিত কারচুপিমূলক—এমন স্বীকারোক্তি দিয়েছেন তৎকালীন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা। মঙ্গলবার (১ জুলাই) ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমানের আদালতে তিনি এই জবানবন্দি দেন।

রাষ্ট্রদ্রোহ ও প্রহসনের নির্বাচন পরিচালনার অভিযোগে দায় স্বীকার করে তিনি আদালতকে জানান, ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচন ছিল কেন্দ্রীয়ভাবে পরিকল্পিত একটি প্রক্রিয়া, যেখানে তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ, প্রশাসন, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার কিছু কর্মকর্তার সক্রিয় সহযোগিতা ছিল।

জবানবন্দিতে সাবেক সিইসি বলেন,“আমি মনে করি, তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল প্রশাসন ও পুলিশের কিছু অসৎ কর্মকর্তার সঙ্গে মিলে দিনের ভোট রাতে গ্রহণ করেছে। অনেক কেন্দ্রে শতভাগ ভোট দেখানো হয়, যা নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।”

তিনি আরও বলেন,“আমার কমিশনের সদস্যদের অন্ধকারে রেখে এই অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করা হয়। আমি নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে অত্যন্ত বিব্রত ছিলাম।”

জবানবন্দিতে হুদা উল্লেখ করেন, তৎকালীন এনএসআই এবং ডিজিএফআই কর্মকর্তাদের মাধ্যমে নির্বাচন ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছিল।“পরে আমি বুঝতে পারি, পুরো নির্বাচন ব্যবস্থাই গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছিল।”

নূরুল হুদা অভিযোগ করেন,“নির্বাচনের আগে বিএনপির বহু নেতাকর্মীকে পুলিশ গণহারে গ্রেপ্তার করে। ভোটের রাতে কিছু পুলিশ সদস্য ব্যালট বাক্সে ব্যালট ভর্তি করে বলেও আমি শুনেছি।”

সিইসি হিসেবে তিনি কেন পদক্ষেপ নেননি—এ প্রশ্নে নূরুল হুদা বলেন,“গেজেট প্রকাশের পর নির্বাচন কমিশনের হাতে নির্বাচন বাতিলের কোনো ক্ষমতা থাকে না। তাই আমি কিছুই করতে পারিনি।”

এর আগে গত ২২ জুন উত্তরায় নিজের বাসভবনে জনতার হামলার শিকার হন কে এম নূরুল হুদা। পরে তিনি পুলিশের হেফাজতে যান এবং আদালত তাকে চার দিনের রিমান্ডে পাঠায়। মামলার তদন্তে আরও ১০ দিনের রিমান্ড চেয়েছে পুলিশ।

প্রহসনের নির্বাচনের অভিযোগে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ গত রবিবার রাজধানীর শেরেবাংলানগর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। সেখানে ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের তৎকালীন তিন সিইসি—কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ, কে এম নূরুল হুদা এবং কাজী হাবিবুল আউয়াল—সহ ২৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়।

মুসআব/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে