ঢাকা, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫
Sharenews24

সাবেক মন্ত্রীর পরিবারের ভুয়া সনদ নিয়ে চাঞ্চল্যকর চাকরি কাণ্ড

২০২৫ জুন ২৯ ১৯:৩৮:৪৪
সাবেক মন্ত্রীর পরিবারের ভুয়া সনদ নিয়ে চাঞ্চল্যকর চাকরি কাণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক: সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ভুয়া সনদ ব্যবহার করে চাকরি পাওয়া এবং নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের চার ঘনিষ্ঠ আত্মীয়ের বিরুদ্ধে। বিষয়টি যাচাই-বাছাই করে জেলা প্রশাসন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর প্রতিবেদন পাঠিয়েছে।

প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, সাবেক মন্ত্রীর শ্যালকের মেয়ে উম্মে হাবিবা, মামাতো ভাইয়ের মেয়ে আরিফা খানম, তার স্বামী নুরুল আলম হবু এবং মামাতো ভাইয়ের ছেলের স্ত্রী আমিনা খাতুন বিভিন্ন সময়ে শেখ জায়েদ বিন সুলতান আল নাহিয়ান ট্রাস্ট ও এর অধীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে নিয়োগ পেয়েছেন। অভিযোগে বলা হয়েছে, এই নিয়োগগুলিতে প্রয়োজনীয় যোগ্যতা, সনদপত্র ও অভিজ্ঞতার অভাব রয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা লাভলু শেখ ৪২ পৃষ্ঠার একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ক্ষমতার অপব্যবহার করে অযোগ্য আত্মীয়দের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ দিয়ে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করা হয়েছে। সাধারণ যোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে এই আচরণে অন্যায় হয়েছে।

অভিযোগ থেকে জানা গেছে, উম্মে হাবিবা ২০২১ সালের ৪ জানুয়ারি প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন এইচএসসি পাশের সনদ নিয়ে, যেখানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি ছিল বাধ্যতামূলক। পরে তিনি ছয় মাসের মধ্যে প্রয়োজনীয় সনদ জমা দেওয়ার অঙ্গীকার করেন, কিন্তু এখনও তা প্রদান করেননি। এরপর তাকে মিরপুর আল নাহিয়ান শিশু পরিবারের উপতত্ত্বাবধায়ক পদেও নিয়োগ দেওয়া হয়।

অভিযোগের অন্য অংশে বলা হয়েছে, ফ্ল্যাট ভাড়া বাবদ বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাতের ঘটনাতেও উম্মে হাবিবার নাম রয়েছে। এ ব্যাপারে কর্মীদের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত প্রতিবেদনও তৈরি হয়েছে।

আরিফা খানমের বিরুদ্ধে ভুয়া বিএড সনদের অভিযোগ রয়েছে, আমিনা খাতুনকে বিএড ও এমএড ছাড়াই সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, এবং নুরুল আলম হবুর বিরুদ্ধে যোগদানের তারিখ জালিয়াতি করে পদোন্নতির অভিযোগ উঠেছে। এসব অনিয়ম ও সনদ জালিয়াতির বিষয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

উম্মে হাবিবা অভিযোগের জবাবে বলেন, “আমি সনদ জমা দেওয়ার অঙ্গীকার করেছিলাম, কিন্তু সময়সীমা নির্দিষ্ট ছিল না। পুরোনো কর্মস্থল থেকে সনদ নিতে দেরি হয়েছে। আমি যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরি পেয়েছি, মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য হওয়ায় নয়।”

অভিযুক্ত নুরুল আলম হবু জানান, “যোগদানের তারিখ জালিয়াতি ও পদোন্নতির অভিযোগের তদন্তে প্রমাণিত হলে শাস্তি পাব, এর আগে এ নিয়ে কিছু বলতে চাই না।”

অপর অভিযুক্ত আরিফা খানম ও আমিনা খাতুনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।

লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার জানান, প্রাপ্ত অভিযোগ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় তদন্ত ও ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

উল্লেখ্য, সাবেক মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ বর্তমানে দুর্নীতি ও হত্যা মামলায় কারাগারে রয়েছেন। সরকার পরিবর্তনের পর তার সময়কালে সংঘটিত বিভিন্ন অনিয়মের তথ্য প্রকাশ পাচ্ছে।

মুসআব/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে