ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫
Sharenews24

দুদকের বিরুদ্ধে ভয়ংকর অভিযোগ: 'চা পানের নামে' লাখ টাকা ঘুষ দাবি

২০২৫ জুন ২৪ ২৩:০৯:২৮
দুদকের বিরুদ্ধে ভয়ংকর অভিযোগ: 'চা পানের নামে' লাখ টাকা ঘুষ দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক: স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে আজ এমন এক সময় এসেছে, যখন চা খাওয়ার বিল হিসেবেও ১ লাখ টাকা দাবি করছে দুদক। এমন বিস্ফোরক অভিযোগ করেছেন নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ।

মঙ্গলবার (২৪ জুন) তার ভেরিফাইড ফেসবুক পোস্টে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) বিরুদ্ধে তিনি এই অভিযোগ আনেন।

ওই পোস্টে হাসনাত আবদুল্লাহ লেখেন, "আপনার নামে দুর্নীতির কোনো অভিযোগ না থাকলেও সেটার ক্লিয়ারেন্স নিতে আপনাকে ১ লাখ টাকা দিতে হবে।"

তিনি জানান, সম্প্রতি ডা. মাহমুদা মিতুর কাছে দুদকের ডিজি আকতার ও তার ডিডি পরিচয়ে এই টাকা চাওয়া হয়েছে। মিতুকে নাকি বলা হয়েছে, "আপনি একজন ডাক্তার, আপনার তো টাকা-পয়সার অভাব থাকার কথা না, আপনি এক লাখ টাকা দিয়ে ক্লিয়ারেন্স নিয়ে যান।"

হাসনাত আবদুল্লাহ আরও অভিযোগ করেন, টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আকতার আবার ফোন দিয়ে জানতে চায়, টাকা দেবেন কিনা। টাকা না দিলে নাকি 'খবর করে ছেড়ে দেওয়া হবে' বলে হুমকি দেওয়া হয়।

এনসিপি নেতা আরও লেখেন, "রেড ক্রিসেন্টে মাহমুদা মিতু যোগ দিয়েছেন ৫ আগস্টের পরে। দুদক এখন তদন্ত করছে আওয়ামী লীগের সময়ের দুর্নীতি নিয়ে। অথচ হাস্যকরভাবে আওয়ামী আমলের কর্মকর্তাদের নাম না দিয়ে তখনকার দায় চাপানোর চেষ্টা করা হচ্ছে এখনকার লোকজনের ওপর।"

তিনি এতে "বড় অঙ্কের টাকার লেনদেনের সমূহ সম্ভাবনা" দেখছেন এবং প্রশ্ন তুলেছেন, "কিছু না করাদের কাছে থেকেই যদি এক লাখ করে নেয়, আওয়ামী লীগ আমলের কর্মকর্তাদের থেকে তাহলে কত করে নিয়েছে?"

হাসনাত আবদুল্লাহর অভিযোগ, "দুদকের এসব কাজ এই প্রথম নয়।" তিনি দাবি করেন, "হাসিনার আমলে খালেদা জিয়াসহ বিরোধী দলের বহু নেতাকে এরা হয়রানি করেছে। অথচ আওয়ামী লীগের হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি নিয়ে এরা কিছুই বলেনি।"

তিনি হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, "আমরা আশা করেছিলাম, ৫ আগস্টের পর এদের মধ্যে পরিবর্তন আসবে। কিন্তু আসেনি। বরং এরা এখন চা খাওয়ার জন্য ১ লাখ করে টাকা চাওয়া শুরু করেছে।"

মাহমুদা মিতুর সাহস করে ঘুষ না দিয়ে ভিডিও করে রাখার প্রশংসা করে তিনি বলেন, "কত সাধারণ মানুষ এদের এই চায়ের বিল দিতে বাধ্য হয়েছে জানা নেই।"

কারো বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ পেলে তা প্রকাশ করার আহ্বান জানিয়ে হাসনাত আবদুল্লাহ লেখেন, "আমাদের অবস্থান পরিষ্কার। মাহমুদা মিতু কেন, যদি আমার নামেও এক পয়সা দুর্নীতির অভিযোগ আসে, সেটা মানুষের সামনে প্রকাশ করে দিন। কাউকে ফোন করারও দরকার নেই। দুর্নীতি পেলেই সেগুলো প্রকাশ করে মামলা করে দেন। আইনের হাতে তুলে দিন। তা না করে নিরীহ লোকজনের ওপর এই চাঁদাবাজি কেন করছেন? কেন চা খাওয়ার বিল চান, কেন টাকা না দিলে হুমকি দেন? ফ্যাসিবাদের পতনের পর আমরা একটা নতুন বাংলাদেশ চাই।"

তিনি দুদকের দুর্নীতির বিচার দাবি করে বলেন, "হাসিনার করে যাওয়া দুর্নীতির পথে যেন আর কেউ না যেতে পারে সে জন্য দুদককেও আমরা নতুন রূপে দেখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু নতুন বাংলাদেশেও দুদক সেই পুরোনো পথেই হাঁটা শুরু করেছে। আমলাতন্ত্র আবারও বিষদাঁত নিয়ে কামড় বসাতে হাজির হয়েছে।"

পরিশেষে তিনি হুঁশিয়ারি দেন, "এই বিষদাঁত ভাঙতে না পারলে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন হেরে যাবে, আমরাও হেরে যাব। আমরা দুদকের এই দুর্নীতির বিচার চাই। আমলাদের এক লাখ টাকার চা খাওয়ানোর জন্যই কি জুলাইতে বাংলাদেশের মানুষ জীবন দিয়েছিল?"

মারুফ/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে