ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫
Sharenews24

একদিন ছুটির দাবিতে গৃহকর্মীদের গর্জন

২০২৫ মে ২৮ ১৯:৪৭:৩৪
একদিন ছুটির দাবিতে গৃহকর্মীদের গর্জন

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীতে বসবাসরত গৃহকর্মীরা প্রতি সপ্তাহে অন্তত একদিন ছুটি এবং সম্মানজনক আচরণের দাবি জানিয়েছেন। তাদের ভাষায়, “আমরাও মানুষ, আমাদেরও বিশ্রামের দরকার হয়।”

আজ বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজশাহী শহরের একটি হোটেলের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত জনসংলাপে গৃহকর্মীরা তাদের জীবনের বাস্তবতা তুলে ধরেন। বেসরকারি উন্নয়ন ও গবেষণা সংস্থা বারসিক এই জনসংলাপের আয়োজন করে।

শিরোনাম ছিল: ‘রাজশাহী নগরীর গৃহকর্মীদের অবদান, সমস্যা এবং সমাধানের উপায়’।

জনসংলাপের শুরুতে বারসিকের পলিসি রিসার্চ অ্যান্ড অ্যাডভোকেসি অফিসার আমরীন বিনতে আজাদ একটি গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। এতে বলা হয়:

রাজশাহী নগরে প্রায় ৮ থেকে ১০ হাজার গৃহকর্মী কাজ করছেন।

তাদের মধ্যে ১১ শতাংশ গৃহকর্মীর বয়স এখনো ১৫ বছরের নিচে।

৪০ শতাংশ গৃহকর্মী নিরক্ষর।

২৫ শতাংশ মাসে ২ হাজার টাকার কম আয় করেন।

মাত্র ১০ শতাংশ গৃহকর্মী পান ৪ হাজার টাকার বেশি।

গবেষণায় গৃহকর্মীদের জন্য সাপ্তাহিক ছুটি, স্বাস্থ্যসেবা, শিশুশ্রম বন্ধ এবং নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার সুপারিশ করা হয়।

৭০ বছর বয়সী শহরবানু বিবি বলেন,“এক বাড়িতে কাজ করি। মাস শেষে দেয় এক হাজার টাকা। হাত ভেঙে গেছে, তাও কাজ ছাড়তে পারি না। ভুল করলে খুব কড়া কথা শুনতে হয়। মানুষ মাত্রই ভুল করে।”

গৃহকর্মী মুনমুন বলেন,“একদিন মাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছিলাম, গৃহকর্তার স্ত্রী পা দিয়ে লাথি মেরে ওঠালেন। পরদিন ছুটি চাইলেও দেয়নি। অসুস্থ শরীরেই কাজ করতে হয়।”

আজেমা বেগম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,“চাকরিজীবীরা ছুটি পান। আমরা চাইলে বলা হয়, কাজ না করলে চলে যাও। এটা তো অবিচার।”

শিলা নামের আরেক গৃহকর্মী বলেন,“চাকরির সময় একটা কাজ বলা হয়, গিয়ে দেখি সাতটা কাজ। অসুস্থ হলে পরদিন দারোয়ানকে বলে দেওয়া হয় যেন ভেতরে ঢুকতে না দেই। এটা খুব কষ্টের।”

খোরশেদ আলম, নগর দরিদ্র অধিকার বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি:“গৃহকর্মীরা যে রান্না করেন, সেই খাবার অনেক সময় নষ্ট হয়, অথচ তাদের ভালো খাবার দেওয়া হয় না। অসুস্থ হলে বেতন কেটে নেওয়া হয়—এটা মানবিক নয়।”

সম্রাট রায়হান, উন্নয়নকর্মী:“গৃহকর্মীদের অধিকার আদায়ে সংগঠিত হওয়া দরকার। তাদেরও একটি অ্যাসোসিয়েশন থাকা উচিত।”

জনসংলাপে আরও উপস্থিত ছিলেন:

নীলা ইয়াসমিন, সহকারী পরিচালক, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, রাজশাহী

আব্দুল আমিন, শহর সমাজসেবা কর্মকর্তা

ফেরদৌস রাবিয়া, হোস্টেল সুপার, কর্মজীবী মহিলা হোস্টেল

আইনুল হক, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক

সংলাপ পরিচালনা করেন বারসিকের আঞ্চলিক সমন্বয়কারী শহিদুল ইসলাম।

মুয়াজ/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে