ঢাকা, রবিবার, ৯ মার্চ ২০২৫
Sharenews24

অর্থনৈতিক সংকট কাটাতে বাংলাদেশের জন্য তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ

২০২৫ মার্চ ০৬ ১১:১৭:০৩
অর্থনৈতিক সংকট কাটাতে বাংলাদেশের জন্য তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশের অর্থনীতি বর্তমানে এক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি, তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বেসরকারি খাতের সহায়তা ও বিশেষ প্রণোদনার মাধ্যমে অর্থনীতি পুনরুদ্ধার সম্ভব। উচ্চ মূল্যস্ফীতি, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং সামষ্টিক অর্থনীতির অস্থিতিশীলতা মোকাবিলা করার জন্য বেসরকারি খাতের সহায়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে তিনটি মূল পদ্ধতি অনুসরণ করা যেতে পারে - অর্থনৈতিক সহায়তা, আর্থিক প্রণোদনা এবং অবকাঠামো উন্নয়ন।

বিশ্লেষকরা বলেন, বেসরকারি খাতকে স্বল্প সুদে ঋণ এবং গ্যারান্টি প্রদান করার মাধ্যমে বাজারে নগদ টাকার সরবরাহ বাড়ানো সম্ভব। এতে বিনিয়োগ প্রবৃদ্ধি ঘটবে এবং অর্থনৈতিক পরিস্থিতি উন্নতি করবে। ঋণ পরিশোধের জন্য সুবিধাজনক সময়সীমা এবং ডাউন পেমেন্ট ছাড়া অথবা সর্বনিম্ন ডাউন পেমেন্টে ঋণ পুনঃতফসিল বা পুনর্গঠনের ব্যবস্থা করা হলে বেসরকারি খাত দ্রুত ঘুরে দাঁড়াবে। পাশাপাশি, দেশের ব্যাংক ব্যবস্থায় আন্তর্জাতিক মানের উদারনীতি প্রবর্তন করা দরকার, যা ব্যাংকিং খাত ও বেসরকারি খাত উভয়কে উপকৃত করবে।

বিশ্লেষকরা বলেন, বিশেষ খাতের জন্য করছাড় ও প্রণোদনা প্রদান ব্যবসায়িক চাপ কমাবে এবং বিনিয়োগে উৎসাহিত করবে। উদাহরণস্বরূপ, উৎপাদন এবং প্রযুক্তি খাতের মতো নির্দিষ্ট খাতকে সর্বনিম্ন করপোরেট ট্যাক্স সুবিধা দিলে প্রবৃদ্ধি বাড়বে এবং বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করবে। আবার, মূলধন বিনিয়োগ এবং গবেষণা ও উন্নয়নের জন্য ট্যাক্স ক্রেডিট প্রদান উদ্ভাবন এবং সম্প্রসারণে সাহায্য করবে।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারি ব্যবস্থার মাধ্যমে অবকাঠামো প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে ব্যবসার পরিবেশ উন্নত হবে এবং বিনিয়োগ আকৃষ্ট হবে। এছাড়া, দেশে মুদ্রানীতি আরও কঠোরভাবে ব্যবস্থাপনা করতে হবে এবং রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স প্রবাহ ধরে রেখে রিজার্ভ শক্তিশালী করতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংককে প্রাতিষ্ঠানিক এবং আইনিভাবে স্বাধীনতা নিশ্চিত করার গুরুত্ব রয়েছে। দুর্বল ব্যাংকগুলোকে বাজারভিত্তিক একীভূতকরণ বা অধিগ্রহণের মাধ্যমে শক্তিশালী ব্যাংকগুলোর সাথে মিশিয়ে ফেলে দেওয়া উচিত। এর ফলে ব্যাংক খাত আরও শক্তিশালী হবে এবং আর্থিক ব্যবস্থা স্থিতিশীল হবে।

১৯৯৭-১৯৯৮ সালে পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় আর্থিক সংকট পরবর্তী সময়ে থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া ও ফিলিপাইন জাতীয় অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করেছে, যা বাংলাদেশেও অনুসরণ করা যেতে পারে। তখন এসব দেশ একই ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করে অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংকট কাটানোর জন্য বেসরকারি খাতকে সহায়তা প্রদান, অর্থনৈতিক প্রণোদনা ও অবকাঠামো উন্নয়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ এবং আন্তর্জাতিক মানের ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে দেশ দ্রুত ঘুরে দাঁড়াতে পারে।

কেএইচ/

পাঠকের মতামত:

অর্থনীতি এর সর্বশেষ খবর

অর্থনীতি - এর সব খবর



রে