ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
Sharenews24

শেয়ার কারসাজিতে ১৯ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে ১ কোটি ৮২ লাখ টাকা জরিমানা

২০২৫ ফেব্রুয়ারি ১৩ ১৪:৩৬:২৮
শেয়ার কারসাজিতে ১৯ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে ১ কোটি ৮২ লাখ টাকা জরিমানা

নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত বস্ত্র খাতের কোম্পানি অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের শেয়ার কারসাজির দায়ে ১৫টি প্রতিষ্ঠান এবং চার ব্যক্তিকে ১ কোটি ৮২ লাখ টাকা জরিমানা করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে কমিশন সভায় বিএসইসি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গেছে। তবে এ বিষয়ে এখনো চিঠি জারি না হলেও খুব শীঘ্রই চিঠি জারি করা হবে।

কোম্পানিটির শেয়ার কারসাজির দায়ে বিএসইসি মোঃ জসিম উদ্দিনকে ১ লক্ষ টাকা, দেবরতা সরকারকে ৩ লক্ষ টাকা, মাসুদুর রহমান শেখকে ১ লক্ষ টাকা এবং শাহজালাল আল সাফিকে ১ লক্ষ টাকা জরিমানা করেছে।

জসিম উদ্দিন চাঁদপুর শিখিতো বেকার কেন্দ্রও সঞ্চয় এবং আরও পাঁচটি সংগঠনের সভাপতি।

যেসব প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়েছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে-জেএস এন্টারপ্রাইজ, শিক্ষিত বেকার সঞ্চয়, বাগড়া শিক্ষিত বেকার সঞ্চয়, চাঁদপুর শিক্ষিত বেকার সঞ্চয়, ওয়্যারলেস বাজার শিক্ষিত বেকার সঞ্চয়, শিক্ষিত বেকার কেন্দ্রিয় সঞ্চয়, চন্দ্র শিক্ষিত বেকার যুব, ফরিদগঞ্জ বেকার সঞ্চয়,এসবি আমাদের পণ্য আমাদের বাজার,গ্রিডাকালিন্দিয়া শিক্ষিত বেকার, পাটোয়ারী বাজার শিক্ষিত ও বেকার সঞ্চয়, শাহরাস্তি শিক্ষিত বেকার এসআরএস, মতলব শিক্ষিত বেকার সঞ্চয়, রূপসা শিক্ষিত বেকার সঞ্চয়, এসবিসিএল হাউজিংএবং তোরামনসিরাত শিক্ষিত বেকার সঞ্চয়। এরমধ্যে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানই জসিম উদ্দিনের নিয়ন্ত্রণাধীন।

কমিশনের মতে, ১৭ ডিসেম্বর ২০২১ থেকে ২২ মার্চ ২০২২ সালের মধ্যে কোম্পানিটির শেয়ার নিয়ে কারসাজি করা হয়। সে ময়ে কোনও যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়াই কোম্পানির শেয়ারের দাম প্রায় ৬২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছিল।

এর আগে, ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে ডিএসই কোম্পানির শেয়ারের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধির তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠন করে। তথ্য বিশ্লেষণ এবং শেয়ার কারসাজির উপর শুনানি করার পর কমিটি ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে তাদের প্রতিবেদন জমা দেয়।

কমিটির অনুসন্ধান অনুসারে, মোঃ জসিম উদ্দিন এবং তার সহযোগীদের একটি গোষ্ঠি দুই ডজন বেনিফিশিয়ারি ওনার (বিও) অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে কোম্পানির শেয়ারে ধারাবাহিক লেনদেন করে মূল্য বৃদ্ধি ঘটায়।

তদন্ত প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, জসিম এবং তার সহযোগীরা নিজেদের মধ্যে অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার লেনদেন করেছেন।

উল্লেখ্য, গত বছরের ডিসেম্বর মাসে রাষ্ট্রায়াত্ব সোনালী ব্যাংক বকেয়া ঋণ আদায়ের জন্য অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজের বন্ধকী সম্পদ নিলামের মাধ্যমে বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেয়।

সোনালী ব্যাংকের এক বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, ৩১ মার্চ ২০২২ তারিখ পর্যন্ত সোনালী ব্যাংকের কাছে অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজের পাওনা ছিল প্রায় ৩৮০ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। বকেয় ঋণ আদায়ের জন্য ব্যাংকটি অলটেক্সের ১৪.৭ একর জমি, এর উৎপাদন সুবিধা এবং অফিস, কাঁচামাল ও খুচরা যন্ত্রাংশ নিলাম করার পরিকল্পনা করেছে। যা ঋণের জন্য বন্ধক রাখা হয়েছিল।

এদিকে, ২৪ অক্টোবর ২০২৪ তারিখে বিএসইসি অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজের আর্থিক এবং সামগ্রিক ব্যবসায়িক কার্যক্রম তদন্তের জন্য তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে।

আর্থিক প্রতিবেদনে নিরীক্ষক মন্তব্য করেছে, অলটেক্স ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য সোনালী ব্যাংক থেকে ঋণের উপর সুদ দেয়নি। ঋণ অনুমোদন পত্রে ১০ শতাংশ সুদ পরিশোধ করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। যার পরিমাণ প্রায় ২৬ কোটি টাকা। এই সুদ বাস্তবিক পরিশোধ না করায় কোম্পানিটির কর-পূর্ব মুনাফা অতিরঞ্জিত হয়েছে।

কোম্পানিটির নিরীক্ষক তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, কোম্পানির খাতায় সোনালী ব্যাংকের কাছে ঋণের পরিমাণ ২২৮ কোটি টাকা দেখানো হলেও, ব্যাংকের রেকর্ডে দেখা গেছে যে ঋণের পরিমাণ ২৬১ কোটি টাকা।

চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর’২৪ পর্যন্ত দুই প্রান্তিকে অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার প্রতি লোকসান দেখানো হয়েছে ৫ পয়সা। যা আগের বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি লোকসান ছিল ৪৭ পয়সা।

মামুন/

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে