ঢাকা, বুধবার, ১৫ জানুয়ারি ২০২৫
Sharenews24

যে শঙ্কায় পদত্যাগের পথে হাঁটলেন টিউলিপ সিদ্দিক

২০২৫ জানুয়ারি ১৫ ১৫:৪৯:৩৬
যে শঙ্কায় পদত্যাগের পথে হাঁটলেন টিউলিপ সিদ্দিক

নিজস্ব প্রতিবেদক : ব্রিটিশ রাজনীতির অন্যতম পরিচিত মুখ, শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক, একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগে পড়ার পর তার পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন। শুরুতে, কনজারভেটিভ পার্টির প্রধান নেতা কেমি ব্যাডেনোচ টিউলিপ সিদ্দিকের বরখাস্তের আহ্বান জানান। তবে লেবার পার্টির প্রধান কিয়ার স্টারমারের নীরবতা এবং প্রথম দিকে টিউলিপের পক্ষ নেওয়ার কারণে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীও রাজনৈতিক চাপের মধ্যে পড়েন।

বর্তমানে, স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলে, টিউলিপের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো আরও গভীর আকার ধারণ করে এবং পরিস্থিতি লেবার পার্টির জন্য কঠিন হয়ে পড়ে। মন্ত্রিত্ব থেকে তাকে বরখাস্ত করার সম্ভাবনা যে তৈরি হচ্ছিল, তা টিউলিপ নিজেও বুঝতে পারেন। এর ফলে, টিউলিপ সিদ্দিক পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার ইতোমধ্যে বেশ পরিচিত হয়েছেন তার কঠোর প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য। দলীয় সদস্যদের বিরুদ্ধে যে কোনো বিতর্ক এবং দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া তার অভ্যেস। এই পদক্ষেপের মধ্যে সরকারী কর্মকর্তাদের বরখাস্ত করাসহ, দলের সদস্যদের জন্য ‘বিশুদ্ধতা’ বজায় রাখা নিশ্চিত করা হয়। এই প্রসঙ্গে, স্টারমারের প্রশাসন এতটাই কঠোর যে, কোনো বড় দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে, সরাসরি পদত্যাগ বা বরখাস্তের সিদ্ধান্ত হতে পারে।

গার্ডিয়ানের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, কিয়ার স্টারমার সবসময় বুঝতে পেরেছেন, টিউলিপ সিদ্দিকের ক্ষেত্রে বিষয়টি কেবল রাজনৈতিক নয়, বরং দলের স্বার্থে যা প্রয়োজন ছিল সেটি করতে হবে। এর আগে, ২০১৪ সালে, কিয়ার স্টারমার এবং টিউলিপ সিদ্দিকের মধ্যে একটি ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সম্পর্ক তৈরি হয় এবং তারা একসঙ্গে বহু নির্বাচনে লড়েছিলেন। যদিও সেই সময় তাদের সম্পর্ক ছিল দৃঢ়, কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি তাদের মধ্যকার রাজনৈতিক বন্ধনকে চ্যালেঞ্জের মধ্যে ফেলেছিল।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ জানায়, কিয়ার স্টারমার এবং টিউলিপ সিদ্দিকের মধ্যে দীর্ঘ বন্ধুত্ব ছিল, যা ২০১৪ সালে শুরু হয়েছিল এবং তাদের রাজনৈতিক জুটি ২০১৫ সালে আরও শক্তিশালী হয়েছিল। তবে, বর্তমান ঘটনাগুলোতে, টিউলিপের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগের পর কিয়ার স্টারমার জানতেন যে, দ্রুত পদক্ষেপ নিলেই পরিস্থিতি সামলানো সম্ভব।

এছাড়া, দ্য গার্ডিয়ান থেকে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, কিয়ার স্টারমার হয়তো টিউলিপের সম্পর্কের কারণে তাকে সরাতে দেরি করেছিলেন। তবে, সরকারী সূত্রে দাবি করা হয়েছে যে, টিউলিপের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাকে সরানো ছিল একান্তই বাস্তবতার দাবি।

টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের সিদ্ধান্ত তার জন্য ছিল একটি রাজনৈতিক পরীক্ষার মতো। দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক বন্ধুত্ব ও সম্পর্কের পরেও, যখন দলের ইমেজ রক্ষার প্রশ্ন ওঠে, তখন পদত্যাগ করতে বাধ্য হন তিনি। তার এই পদক্ষেপ একদিকে যেমন লেবার পার্টির ইমেজ রক্ষায় সহায়ক হয়েছে, তেমনি অন্যদিকে এটি টিউলিপের নিজস্ব রাজনৈতিক ভবিষ্যতকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দেয়।

এদিকে, কিয়ার স্টারমার এবং টিউলিপ সিদ্দিকের মধ্যে সম্পর্ক তেমন গভীর হলেও, সময়ের প্রয়োজনে স্টারমার বুঝতে পেরেছেন যে, দলের স্বার্থ রক্ষায় পদত্যাগ ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। যদিও টিউলিপ সিদ্দিক তার পদত্যাগের মাধ্যমে দল ও সরকারের উপর থেকে চাপ সরিয়ে দিয়েছেন, তবে রাজনৈতিক অঙ্গনে তার ভবিষ্যত কেমন হবে, তা এখনো প্রশ্নবোধক।

কেএইচ/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে