ঢাকা, রবিবার, ৮ জুন ২০২৫
Sharenews24

‘আ.লীগ শাসনামলে অর্থনৈতিক বিনিময় ছাড়া কোনো বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপিত হয়নি’

২০২৪ ডিসেম্বর ১৪ ২২:১৫:২৮
‘আ.লীগ শাসনামলে অর্থনৈতিক বিনিময় ছাড়া কোনো বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপিত হয়নি’

নিজস্ব প্রতিবেদক: জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. ম. তামিম বলেছেন, আওয়ামী লীগের শাসন আমলে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিনিময় ছাড়া কোনো বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপিত হয়নি। তিনি উল্লেখ করেন, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী এবং পিএম অফিসের শক্তিকে কেন্দ্র করে খাতটিতে দুর্নীতির ব্যাপকতা বৃদ্ধি পেয়েছে।

ড. ম. তামিম বলেন, রাজনীতিবিদ, আমলা এবং ব্যবসায়ী এই তিন পক্ষের যোগসাজশে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে চরম দুর্নীতি হয়েছে। ড. তামিম মনে করেন, যদি বাংলাদেশে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ করা হয়, তবে দুর্নীতি কমাতে সহায়তা হতে পারে।

শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) এফডিসিতে ‘ডিবেট ফর ডেমোক্র্যাসি’ আয়োজিত বিতর্ক প্রতিযোগিতায় তিনি বিগত সরকারের আমলে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের দুর্নীতি নিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) সম্পর্কে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এটি জ্বালানি খাতের অন্যতম অস্বচ্ছ প্রতিষ্ঠান। এই অস্বচ্ছতার পেছনে সরকারেরও ভূমিকা ছিল, কারণ তেল বিক্রির মুনাফা প্রকাশ করতে সরকার আগ্রহী ছিল না। ফলে, সাধারণ জনগণের ওপর বোঝা চাপিয়ে বিভিন্ন সময় তেলের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। বর্তমান সরকারও বিপিসির অস্বচ্ছতা দূর করার জন্য কার্যকরী উদ্যোগ নেয়নি, যা দ্রæত নেওয়া উচিত।

ড. তামিম বলেন, জবাবদিহিতা এড়ানোর জন্য আওয়ামী সরকার বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে গণশুনানির প্রক্রিয়া বন্ধ করে দিয়েছিল। তারা বিইআরসিকে পাশ কাটিয়ে দাম নির্ধারণ করেছিল। অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন-২০০৩ এর অধীনে জ্বালানি পণ্যের মূল্য নির্ধারণের গণশুনানি প্রক্রিয়া পুনরুদ্ধার করা।

তিনি আরও জানান, বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতে আমদানি নির্ভরতা কমবে না এবং ইতোমধ্যে ভারত এবং নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানি হচ্ছে। তবে, খরচ কমানোর জন্য আমাদের দেশের বিদ্যুৎ রপ্তানি করা সম্ভব।

ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাত অসাধু কার্যক্রম এবং দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। তিনি ২০১০ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের দ্বারা পাস করা বিতর্কিত ইনডেমনিটি আইনটির সমালোচনা করেন, যা দুর্নীতির ক্ষেত্র তৈরি করেছে। তিনি জানান, বিদ্যুৎ উৎপাদন, বিতরণ এবং সঞ্চালন খাতে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্য পাওয়া গেছে।

হাসান আহমেদ বললেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা ও চাহিদার সঠিক হিসাব নেই এবং অনেক বিদ্যুৎ কেন্দ্র কোন ছাড়পত্র ছাড়া নির্মাণ করা হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, বিদ্যুৎ বিতরণে সঠিক ব্যবস্থা না থাকার কারণে লোডশেডিং থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব হয়নি, যদিও সরকারের দাবি ছিল শতভাগ জনগণ বিদ্যুতের আওতায় এসেছে।

আদানির সঙ্গে বিদ্যুৎ কেনার চুক্তি সম্পর্কে কিরণ জানান, এটি একপাক্ষিক এবং দেশের স্বার্থবিরোধী। তিনি আর্জি জানান, সরকারের উচিত এই চুক্তির বিষয়টি জনগণের সামনে পরিষ্কার করে উপস্থাপন করা।

প্রতিযোগিতায় আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশকে হারিয়ে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিতার্কিকরা বিজয়ী হন।

মিজান/

পাঠকের মতামত:

অর্থনীতি এর সর্বশেষ খবর

অর্থনীতি - এর সব খবর



রে