ঢাকা, শুক্রবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৪
Sharenews24

বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠনো কে এই সচিব সবুর মন্ডল?

২০২৪ নভেম্বর ২৯ ২২:১৫:০৩
বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠনো কে এই সচিব সবুর মন্ডল?

নিজস্ব প্রতিবেদক: ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আব্দুস সবুর মণ্ডলকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়েছে সরকার। তিনি ছিলেন একজন সচিব।

বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এই সংক্রান্ত এক প্রজ্ঞাপনে তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। এরপরই শুরু হয় আলোচনা-কে এই সবুর মন্ডল?

জানা গেছে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় আব্দুস সবুর মণ্ডল ছিলেন একজন প্রভাবশালী ও আলোচিত সরকারি কর্মকর্তা। তিনি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই প্রকল্পের পরিচালক পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।

তবে আলোচনায় আসেন ২০১৯ সালের জুলাই মাসে। ওই বছরের ২৫ জুলাই নড়াইল জেলার কালিয়া পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৬ষ্ট শ্রেণির ছাত্র তিতাস ঘোষ মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়।

আহত হওয়ার পর প্রথমে তাকে খুলনার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে আইসিইউ সম্বলিত অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

তিতাসকে বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সটি রাত ৮টার দিক মাদারীপুরের কাঠালবাড়ী ১ নম্বর ফেরি ঘাটে পৌঁছায়। রাত ৯ টার দিক কুমিল্লা নামে ফেরিটি শিমুলিয়া থেকে কাঠালবাড়ি ঘাটে এসে গাড়ি আনলোড করে। এই সময় ওই রোগীর লোকজন ঘাটে কর্মরতদের তাদের রোগীর অবস্থা বললেও গাড়ি আনলোড শেষে ওই কর্মকর্তার গাড়ি না আসা পর্যন্ত ফেরি ছাড়তে রাজি হয়নি ঘাট কর্তৃপক্ষ।

এরপর দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পর রাত পৌনে ১১টার দিকে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের স্টিকার লাগানো সাদা রংয়ের নোহা একটি মাইক্রোবাস আসার পর ফেরিটি ছাড়ে। ফেরিটি মাঝ নদীতে পৌঁছলে মস্তিস্কে প্রচুর রক্তক্ষরণে অ্যাম্বুলেন্সেই মৃত্যু হয় তিতাসের।

তিতাসের মৃত্যুর পর তার পরিবার শিমুলিয়া ঘাট থেকে আবারও ফেরিতে কাঁঠালবাড়ি ঘাট পৌঁছে লাশ নিয়ে নড়াইলে ফিরে যায়।

তিতাসের মৃত্যুতে হাইকোর্টে রিট

তিতাসের মৃত্যুতে তদন্ত ও ক্ষতিপূরণ চেয়ে হাইকোর্টে একটি রিট করেন লিগ্যাল সাপোর্ট অ্যান্ড পিপলস রাইটসের চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. জহির উদ্দিন। পরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. রেজাউল হাসানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

তদন্ত কমিটি ফেরি বিলম্বে ছাড়ায় তিনজনকে অভিযুক্ত করেছে। তবে তৎকালীন যুগ্ম সচিব সবুর মণ্ডলকে দায়ি করেনি। কমিটি তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, সবুর মন্ডল জানতেন না যে, মুমূর্ষু রোগী অ্যাম্বুলেন্সে অপেক্ষা করছে। ওই তিনজন তাঁকে এই বিষয়ে জানায়নি। তাই সবুর মণ্ডলকে অভিযুক্ত করার যুক্তিসংগত কারণ নেই বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে তদন্ত কমিটির কর্মকর্তারা।

অভিযুক্ত তিনজন হলেন ঘাটের ব্যবস্থাপক সালাম হোসেন, প্রান্তিক সহকারী খোকন মিয়া ও উচ্চমান সহকারী ফিরোজ আলম।

সবুর মন্ডলের পরিচয়

১৯৯৪ সালে বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারে (১৩তম ব্যাচ) সহকারী কমিশনার হিসাবে চাকরি শুরু করেন সবুর মণ্ডল। খুলনা বিভাগে তার কর্মজীবন শুরু হয়। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরিসংখ্যান বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন।

সবুর মন্ডল নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক, চাঁদপুর জেলার জেলা প্রশাসক, বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের পরিচালক, একসেস টু ইনফরমেশন (a2i) প্রোগ্রামে পরিচালক, সরকারি আবাসন পরিদপ্তরের পরিচালক, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

আরিফ/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে