ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারি ২০২৫
Sharenews24

ব্যাংক খাতের অতিরিক্ত তারল্য ২ লাখ কোটি টাকা

২০২৪ অক্টোবর ১৪ ১৭:০৫:৪৭
ব্যাংক খাতের অতিরিক্ত তারল্য ২ লাখ কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিগত দেড় দশকে অনিয়ম, দুর্নীতি, পাচার এবং নামে বেনামে ঋণ নেওয়ার কারণে ব্যাংক খাতে তীব্র তারল্য সংকট বিরাজ করেছে। এখাতের অধিকাংশ ব্যাংককেই তারল্য সংকটে দেখা গেছে।

ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার সরকারের সময়ে উপরের চাপে ব্যাংক খাতের এই বেহাল ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলেছে। তবে অন্তবর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর ব্যাংক খাতের বাস্তব অবস্থা উঠে আসে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন গভর্ণর ড. আহসান এইচ মনসুরের সাহসী উদ্যোগে ব্যাংক খাত ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে। এখাতের তারল্য সংকেট থাকা দুর্বল ব্যাংকগুলোকে বিশেষ সহায়তায় তারল্য যোগানের ব্যবস্থা নেওয়া হয়। যার ফলে খাতটিতে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরতে শুরু করে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্যমতে, বর্তমানে দেশের ৭৫ শতাংশ ব্যাংকেই উদ্বৃত্ত তারল্য বা অতিরিক্ত অর্থ রয়েছে। সরকারি-বেসরকারি ৪৬টি ব্যাংকে অতিরিক্ত তারল্যের পরিমান প্রায় ২ লাখ কোটি টাকা। আমানতকারীদের মধ্যে আস্থা ফেরায় একে ব্যাংক খাতের জন্য স্বস্তিদায়ক বলে মনে করছেন ব্যাংকাররা।

তবে এখনো দুর্বল কিছু ব্যাংকে তারল্য সংকট অব্যাহত রয়েছে। বিপরীতে উল্টো চিত্র সবল ব্যাংকগুলোতে। প্রতিদিনই গ্রাহকের আমানতের পরিমান বাড়ছে এসব ব্যাংকে। বাংলাদেশ ব্যাংকে তথ্য বলছে, সরকারি ব্যাংকের পাশাপাশি বেসরকারি প্রায় ৩১টি ব্যাংকেই রয়েছে ৯১ হাজার ৬৭৪ কোটি টাকার অতিরিক্ত তারল্য।

আর রাষ্ট্রায়ত্ত পাঁচ ব্যাংকে তারল্যের পরিমান ছাড়িয়েছে ৬৩ হাজার ৬৭০ কোটি টাকা। এর মধ্যে শুধু সোনালী ব্যাংকেই রয়েছে ৪৯ হাজার ৪৩ কোটি টাকা। অতিরিক্ত তারল্যে পিছিয়ে নেই বিদেশি ৯ ব্যাংকও।

গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসির চেয়ারম্যান নুরুল আমিন সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘এটা একটা স্বস্তির খবর। যদিও ইনডিভিজুয়ালি কোনো কোনো ব্যাংক বা যে কয়টা ব্যাংকের ভল্ট ভাঙা হলো, তাদের ক্ষেত্রে কিছুটা তারল্য সংকট চলছে। আগামী ৬ মাসের ব্যবসার সেক্টরের ওপর নির্ভর করবে ব্যাংক কেমন যাবে। আমি আশা করছি, ডিসেম্বরের মধ্যে একটা স্থিতিশীলতা চলে আসবে।’

এদিকে, চতুর্থ প্রজন্মের ৯ ব্যাংকের মধ্যে ৬টিতেই রয়েছে অতিরিক্ত তারল্য। ব্যাংকের অতিরিক্ত এসব অর্থ নির্দিষ্ট কয়েকজনকে ঋণ হিসেবে না দিয়ে বেশিসংখ্যক গ্রাহককে দেওয়ার পরামর্শ অর্থনীতিবিদদের।

সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘এখন উচিত হবে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি তাড়াতাড়ি স্বাভাবিকের দিকে নিয়ে যাওয়া। এ ছাড়া মূল্যস্ফীতি কমিয়ে স্বাভাবিক একটি পরিস্থিতি নিয়ে আসতে হবে।’

রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও আস্থা সংকটের কারণে নতুন করে বিনিয়োগে যাচ্ছে না ব্যবসায়ীরা। বিনিয়োগে ভাটা পড়ায় ব্যাংকগুলোর ঋণ বিতরণও কমেছে। তাই ঋণপ্রবাহ বাড়াতে বিনিয়োগ বান্ধব পরিবেশ তৈরির তাগিদ বিশ্লেষকদের।

আর অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ব্যাংকের অতিরিক্ত তারল্য বিনিয়োগে কাজে লাগাতে না পারলে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে নতুন কর্মসংস্থানে।

মামুন/

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে