ঢাকা, বুধবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৪
Sharenews24

সাবেক দুই মন্ত্রীর জামিন নিয়ে তুমুল আলোচনা

২০২৪ অক্টোবর ১০ ১১:১৩:১৬
সাবেক দুই মন্ত্রীর জামিন নিয়ে তুমুল আলোচনা

নিজস্ব প্রতিবেদক: শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর কাঠগড়ায় দাঁড়াচ্ছেন অনেক মন্ত্রী-এমপি। দুর্নীতি থেকে শুরু করে হত্যা—নানা অভিযোগে মামলা হচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে।

এসব মামলায় কেউ কারাগারে আছেন, কেউ কেউ জামিন পেতে শুরু করেছেন। এর মধ্যে সাবেক পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী এবং সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নানের জামিন নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।

আলোচনায় বলা হচ্ছে, আওয়ামী লীগ সরকারের গণহত্যার এখনো দুই মাসও শেষ হয়নি। অন্তর্বর্তী সরকার তাদের সহযোগীদের বিচার না করে জামিন দিয়ে যাচ্ছে। অনেকে বলছেন, এ ধরনের কর্মকাণ্ড সাধারণ জনগণের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার করেছে।

গত ৪ আগস্ট শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় এমএ মান্নানকে তার সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারের এক সপ্তাহের মধ্যে গতকাল বুধবার জামিন দেওয়া হয়েছে সাবেক এই মন্ত্রীকে।

এদিকে, গত রোববার সন্ধ্যায় গুলশানের বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয় সাবের হোসেন চৌধুরীকে। পুলিশের গুলিতে মকবুল নামে বিএনপির এক কর্মী নিহতের মামলায় তাকে পাঁচদিনের রিমান্ড দেন আদালত। রিমান্ডের সময়সীমা পার হওয়ার আগেই সব মামলায় জামিন পেয়ে যান সাবের হোসেন চৌধুরী; মুক্তি পান আদালতের হাজতখানা থেকে।

এ দুই মন্ত্রীর জামিন নিয়ে চললে এখন তুমুল আলোচনা। এ বিষয়ে অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘বিষয়টা একটু চোখে লাগার মতো। আপনি রিমান্ড দিলেন, রিমান্ড শেষ হয়নি, তাকে আদালতে উপস্থিত করা হয়নি; আবার পরদিন সব মামলায় আপনি জামিন দিচ্ছেন। নরমালি কোর্ট প্রসিডিউরে যা হচ্ছে, তা কেউ সাধারণ হিসেবে বিশ্বাস করবে না। নরমাল জামিন হলে রিমান্ড শেষ হতো, তাকে কোর্টে আনা হতো, তারপর জামিন অনুমোদন করা হতো। তাছাড়া এখন পর্যন্ত এসব মামলায় কাউকে জামিন দেয়া হচ্ছে না। এখানে ব্যতিক্রম হওয়ায় সবার চোখে লেগেছে।’

বিশিষ্ট এই আইনজীবী বলেন, ‘বিচার বিভাগকে স্বাধীন রাখতে হবে। বিচার বিভাগ কাউকে জামিন দেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিলে সে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের সুযোগ থাকতে হবে। এটা তার এখতিয়ার।’

এদিকে, এমএ মান্নানের জামিনের বিষয়ে তার আইনজীবী আবদুল হামিদ বলেন, ‘বয়স ও অসুস্থতা বিবেচনা করে জামিন দিয়েছেন আদালত। আমরা আদালতে জামিনের মুচলেকানামা দাখিল করেছি। আদালত থেকে তার মুক্তির আদেশ প্রথমে পাঠানো হবে সুনামগঞ্জ জেলা কারাগারে। এ কারাগার থেকে সেটি পাঠানো হবে সিলেট কেন্দ্রীয় কারা হাসপাতালে। এরপর সেখান থেকে তিনি মুক্তি পাবেন।’

দুই মন্ত্রীর জামিনের প্রতিবাদে গতকাল বুধবার রাজধানীতে মশাল মিছিল করে ছাত্র অধিকার পরিষদ। বিজয়নগর পানির ট্যাংক মোড়ে এ মিছিল হয়। মশাল মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মধ্যে আওয়ামী লীগের যেসব দোসর ঘাপটি মেরে রয়েছে, তাদের চিহ্নিত করতে হবে। বিচার বিভাগ ও প্রশাসনে যেসব শপথবদ্ধ মুজিববাদী রয়েছে, তাদের সরিয়ে দিতে হবে। আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করার চেষ্টা করা হলে এ সরকারের বিরুদ্ধে জনগণ ফুঁসে উঠবে।’

এই ছাত্রনেতা আরো বলেন, ‘কেন সাবের হোসেন চৌধুরী ও এমএ মান্নানকে আটক করা হলো? কেনইবা ক্লিন ইমেজের দাবি করে মুক্তি দেয়া হলো? এর মাধ্যমে তো আওয়ামী লীগ সাহস পেয়ে যাবে। তারা মনে করবে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আওয়ামী লীগের প্রতি সফট কর্নার রয়েছে। আওয়ামী লীগ মাঠে নেমে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করবে। এক্ষেত্রে গণ-অভ্যুত্থান ব্যর্থ হলে কিন্তু এ সরকারকে তার দায় নিতে হবে।’

এর আগে সাবের হোসেন চৌধুরীর ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন করে ‘খুন ও গুমের শিকার শহীদ পরিবার’। মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা বলেন, আমরা সাবের হোসেন চৌধুরীর ফাঁসি দেখতে চাই। এজন্য আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব। আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে বলতে চাই, সাবের হোসেনকে আবার গ্রেফতার করা হোক। নয়তো আমরা ভাবব সরকার নিরপেক্ষ নয়।

মামুন/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে