ঢাকা, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪
Sharenews24

জেলা প্রশাসকের বাসবভনে তালা দিয়ে শিক্ষার্থীদের অবস্থান

২০২৪ অক্টোবর ০৯ ০৭:১২:০২
জেলা প্রশাসকের বাসবভনে তালা দিয়ে শিক্ষার্থীদের অবস্থান

নিজস্ব প্রতিবেদক: শেরপুর সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীরা নির্ধারিত স্থানে একাডেমি ভবন নির্মাণের দাবিতে জেলা প্রশাসকের (ডিসি) বাংলোয় তালা ঝুলিয়ে এক ঘণ্টা কার্যালয় ঘেরাও করে রাখে।

এরপর শিক্ষার্থীরা জেলা প্রশাসকের অফিস কক্ষে ঢুকে তাদের এক দফা দাবি মেনে নেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসককে চাপ দেয়। ঘণ্টাখানেক পর জেলা পুলিশ সুপার এবং কলেজের ভাইস প্রিন্সিপালসহ অন্য শিক্ষক এসে শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার জন্য আলোচনায় বসেন।

পরে জেলা প্রশাসক সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলে তারা জেলা প্রশাসকের বাংলোর তালা খুলে দিয়ে কলেজে ফিরে যায় শিক্ষার্থীরা।

ছাত্র-ছাত্রীরা জানিয়েছে, শেরপুর সরকারি মহিলা কলেজের একাডেমিক ভবন নির্মাণের জন্য সম্প্রতি কলেজ ক্যাম্পাসের ভেতরে একটি জায়গায় মাটি পরীক্ষার কাজ শেষ করা হয়। পরে শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগ ওই ভবন নির্মাণের জন্য কার্যক্রম শুরু করলে সাবেক জেলা প্রশাসক এতে বাধা দেয়।

বাধা দেওয়ার কারণ হিসেবে জানা যায়, জায়গাটি শত্রু সম্পত্তি। যে কারণে সেখানে স্থায়ী কোনও স্থাপনা নির্মাণ করার বাধা দেওয়া হয়। পরে বিষয়টি নিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ এবং জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কয়েক দফা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

কিন্তু এরপরও কোনও সুরাহা না হওয়ায় সোমবার (৭ অক্টোবর) এক দফা দাবি জানিয়ে বর্তমান জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমানের কাছে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে স্মারকলিপি দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

নির্ধারিত ২৪ ঘণ্টা পার হওয়ার পরও এ বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত না হওয়ায় মঙ্গলবার (০৮ অক্টোবর) দুপুরে শিক্ষার্থীরা কলেজ থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের‌ করে জেলা প্রশাসকের বাংলোর প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে দেয়। এরপর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় গিয়ে তারা অফিস কক্ষে প্রবেশ করেন। সেখানে তারা তাৎক্ষণিক দাবি মেনে নেওয়ার জন্য বিক্ষোভ করতে থাকে।

বিক্ষোভের চলা অবস্থায় জেলা পুলিশ সুপার আমিনুল ইসলামসহ জেলা প্রশাসনের অন্য কর্মকর্তারা এসে শিক্ষার্থীদের বোঝানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তারা কোনও কিছু না মেনে জেলা প্রশাসকের অফিস কক্ষে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন দাবি মেনে নেয়ার জন্য।

এরপর কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল আ জ ম রেজাউল করিম খানসহ অন্য শিক্ষকরা এসে বিষয়টি নিয়ে বৈঠকে বসেন। একপর্যায়ে জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান ওই ভবন নির্মাণের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী জয়িতা অধিকারীর সঙ্গে যোগাযোগ করে নির্ধারিত স্থানে ভ্রমণের কাজ শুরু করার আহ্বান জানান। সেই সঙ্গে তিনি নির্ধারিত স্থানে ভবন নির্মাণে জেলা প্রশাসকের কোনও আপত্তি নেই বলে জানিয়ে কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করেন।

এরপর জেলা প্রশাসককে ধন্যবাদ জানিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জেলা প্রশাসকের বাংলোর তালা খুলে দিয়ে কলেজে ফিরে যান। এ বিষয়ে কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল আ জ ম রেজাউল করিম খান বলেন, কলেজের যেখানে বহুতল ভবন নির্মাণ করার জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে, সেটি কলেজ প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই একাডেমি কাজে ব্যবহার করা হয়ে আসছিল এবং তা কলেজ ক্যাম্পাসের বাউন্ডারির মাঝেই অবস্থিত।

তিনি জানান, আগে সেখানে একটি আধাপাকা ঘর ছিল যা পাঠদানের জন্য ব্যবহার করা হতো। কিন্তু বছর খানেক আগে সেই আধাপাকা ঘর ভেঙে বহুতল ভবন নির্মাণ করতে গেলে জেলা প্রশাসন তাতে বাধা দেয়। কলেজ কর্তৃপক্ষ এবং শিক্ষার্থীরা এর আগে বহুবার জেলা প্রশাসনের কাছে এই বিষয়ে নিয়ম মাফিক আবেদন এবং প্রতিবাদ করে আসছিল।

এতে কোন ফলপ্রসূ কাজ না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা তাদের আবেগ ধরে রাখতে পারেনি। তাই তারা এমন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। আজ জেলা প্রশাসন আশ্বাস দিয়েছে, তারা বহুতল একাডেমিক ভবন নির্মাণে আর বাধা প্রদান করবে না এবং প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করবে। তাই শিক্ষার্থীরা তাদের আজকের কর্মসূচি স্থগিত করেছে।

মিজান/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে