ঢাকা, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪
Sharenews24

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিলুপ্তি দাবি, ১৭ সমন্বয়কের পদত্যাগ

২০২৪ অক্টোবর ০৩ ২১:৫২:৪৭
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিলুপ্তি দাবি, ১৭ সমন্বয়কের পদত্যাগ

নিজস্ব প্রতিবেদক: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দ্রুত বিলুপ্তির দাবি জানিয়ে পদত্যাগ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩ জন সমন্বয়ক ও চারজন সহসমন্বয়ক।

আজ বৃহস্পতিবার (০৩ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়টির ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের কনফারেন্স রুমে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা পদত্যাগের ঘোষণা দেন।

পদত্যাগ করা সমন্বয়করা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের বিরুদ্ধে সরকারি দলের মতো আচরণ ও গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটবিরুদ্ধ কাজে যুক্ত থাকার অভিযোগ তোলেন।

পদত্যাগ করা সমন্বয়করা হলেন আব্দুর রশিদ জিতু, রুদ্র মুহাম্মদ সফিউল্লাহ, হাসিব জামান, জাহিদুল ইসলাম ইমন, জাহিদুল ইসলাম, ফাহমিদা ফাইজা, রোকাইয়া জান্নাত ঝলক, মিশু খাতুন, রাফিদ হাসান রাজন, হাসানুর রহমান সুমন, আব্দুল হাই স্বপন, নাসিম আল তারিক ও ঐন্দ্রিলা মজুমদার।

পদত্যাগ করাদের মধ্যে আব্দুর রশিদ জিতু কেন্দ্রীয় সমন্বয়কের দায়িত্বও পালন করেন। পদত্যাগকৃত সহসমন্বয়করা হলেন জিয়া উদ্দিন আয়ান, তানজিম আহমেদ, জাহিদুল ইসলাম বাপ্পি ও সাইদুল ইসলাম। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে শুরু হওয়া কোটা সংস্কার আন্দোলন পরবর্তীতে ৯ দফার ওপর ভিত্তি করে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে রূপ নেয়। তার পরিপ্রেক্ষিতে ফ্যাসিবাদের পতনের মধ্য দিয়ে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়।’

তিনি বলেন, ‘তবে ৯ দফায় অন্তর্ভুক্ত দলীয় লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ, জুলাই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিচার এবং আহত ও ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণের দাবিগুলোতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এক প্রকার নিশ্চুপ রয়েছে। বর্তমানে তাদের ভূমিকা অনেকটা সরকারদলীয় ছাত্রসংগঠনের মতো।’

আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, ‘এ ছাড়া বাংলাদেশের সর্বস্তরের আন্দোলনকারীদের একই ব্যানারে অন্তর্ভুক্ত করতে এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছেন তারা। ফলে আমরা মনে করি, এই ব্যানার এখনো বজায় থাকা আন্দোলনে সর্বপেশার, সর্বস্তরের এবং সর্বদলের মানুষের অংশগ্রহণের ইতিহাসকে ম্লান করে দিচ্ছে। তাই এই ব্যানার যত দ্রুত সম্ভব বিলুপ্ত করে দিতে হবে।’ কেন্দ্রী এ সমন্বয়ক আরো বলেন, ‘জাবির বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কতিপয় সমন্বয়কের জাবিকে জাতীয় পর্যায়ে তুলে ধরতে অক্ষমতা, সহযোদ্ধাদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ এবং গত ১৮ সেপ্টেম্বর সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও সন্ত্রাসী শামীম মোল্লার গণধোলাইয়ের পর পুলিশের হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনায় ভিডিও ফুটেজের ভিত্তিতে একাধিক সমন্বয়কের নাম উঠে আসার ব্যাপারে ব্যানার কোনো ঐক্যবদ্ধ অবস্থানে আসতে না পারায় আমরা সমন্বয়ক পর্ষদ থেকে পদত্যাগ করছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা মনে করি, গত ৫ আগস্ট অর্জিত দ্বিতীয় স্বাধীনতা সর্বস্তরের, সর্বপেশার ও সর্বমতের। কেউ আন্দোলনের একক কৃতিত্বধারী নয়। একই সঙ্গে সহস্রাধিক শহীদ, আহতদের রক্ত ও অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিসর্জনের মাধ্যমে অর্জিত এই নতুন বাংলাদেশ শুধু একটি গোষ্ঠীর নয়, বরং সবার।’

তিনি প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, ‘গণমানুষের মেহনত, ঘাম ও রক্তের ফসল এই দ্বিতীয় স্বাধীনতাকে সমুন্নত করতে এবং এর স্পিরিটকে লালন করতে যার যার জায়গা থেকে আমরা সর্বাত্মক প্রচেষ্ঠা চালিয়ে যাব।’

মামুন/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে