ঢাকা, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪
Sharenews24

দীর্ঘ ১০ মাস পর ইতিবাচক ধারায় সঞ্চয়পত্র বিক্রি

২০২৪ অক্টোবর ০১ ১২:১৫:২৮
দীর্ঘ ১০ মাস পর ইতিবাচক ধারায় সঞ্চয়পত্র বিক্রি

নিজস্ব প্রতিবেদক: দীর্ঘ ১০ মাস পর জাতীয় সঞ্চয়পত্র বিক্রি ঋণাত্মক ধারা কাটিয়ে ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে মানুষ সঞ্চয়পত্র ভাঙার চেয়ে কিনেছে বেশি।

বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, এর আগের অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র বিক্রির চেয়ে সরকারকে আগের বিক্রি হওয়া ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধে অর্থ বরাদ্দ বেশি রাখতে হয়েছিল। অর্থাৎ বিনিয়োগকারীরা সঞ্চয়পত্র না কিনে ভাঙায় উৎসাহী ছিল বেশি। উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে সংসার চালাতে সাধারণ মানুষ সঞ্চয়পত্র ভাঙার উদ্যোগ নিয়েছিল।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন বলছে, সদ্য শেষ হওয়া ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ১২ মাসের মধ্যে ১০ মাসই ছিল সঞ্চয়পত্র বিক্রিতে ধস। প্রতি মাসেই আগের সুদ-আসল বাবদ বেশি পরিশোধ করতে হয়েছে সরকারকে।

তবে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রথম মাস জুলাইয়ে সঞ্চয়পত্রের বিক্রি ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে। এ মাসে আগের সুদ-আসল পরিশোধ করেও সরকারের ২ হাজার ১৮৭ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ইতিবাচক রয়েছে।

যেখানে এর আগের মাস অর্থাৎ গত অর্থবছরের শেষ মাস জুনে সঞ্চয়পত্র নিট বিক্রি ছিল ঋণাত্মক ৩ হাজার ৩৮১ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। অর্থাৎ বিক্রির চেয়ে আগের সুদ-আসল বাবদ বেশি পরিশোধ করতে হয়েছে ৩ হাজার ৩৮১ কোটি ৪৩ লাখ টাকা।

সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগকারীরা বলছেন, ব্যাংকে প্রতিযোগিতামূলক সুদের হারের পাশাপাশি উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষের খরচ বেড়ে যাওয়ায় সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ কমতে পারে ধরে নিয়েই সরকার চলতি অর্থবছরেও এ খাত হতে রক্ষণশীল ঋণের পরিকল্পনা করেছে। এ অর্থবছরে সরকার সঞ্চয়পত্র থেকে লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ১৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা করেছে।

খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিগত সরকারের করা অনিয়ম-জালিয়াতির কারণে কিছু ব্যাংকে তারল্য সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। গ্রাহকরা তাদের জমানো টাকা তুলতে গিয়ে ফিরে আসছে। এ কারণে সাধারণ মানুষ এখন বেশি লাভের চেয়ে আস্থার জায়গা খুঁজছে বেশি। কিছু ব্যাংকের চেয়ে তারা সঞ্চয়পত্রকে বেশি নিরাপদ মনে করেন। এ কারণে ব্যাংক থেকে টাকা তুলে সঞ্চয়পত্র সংগ্রহ করছেন।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন বলছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাস (জুলাই-আগস্ট) সঞ্চয়পত্র নিট বিক্রি ৫ হাজার ৫৬২ কোটি টাকা ইতিবাচক ধারায় ছিল। তবে এরপর থেকে নিট বিক্রি ঋণাত্মক হতে থাকে। সেপ্টেম্বরে ঋণাত্মক হয় ১৪৭ কোটি, অক্টোবরে ১ হাজার ৪০ কোটি, নভেম্বরে ১ হাজার ৫৫৪ কোটি, ডিসেম্বরে ২ হাজার ২০৪ কোটি, জানুয়ারিতে ১ হাজার ২৮৭ কোটি, ফেব্রুয়ারিতে ১ হাজার ৫৪১ কোটি, মার্চে ৩ হাজার ৬৫৩ কোটি, এপ্রিলে ২ হাজার ১০৩ কোটি ও মে মাসে ৩ হাজার ৯৪ কোটি টাকা ঋণাত্মক হয়।

খাতসংশিষ্টরা অভিযোগ করছেন, সঞ্চয়পত্র বিক্রির পরিমাণ যে কমবে, তা সরকার আগেই অনুমান করেছিল। তাই বিদ্যমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে সরকারও সঞ্চয়পত্র থেকে তুলনামূলক কম ঋণের পরিকল্পনা করেছিল। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে সরকারের নিট ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৮ হাজার কোটি টাকা।

আগের ২০২২-২৩ অর্থবছরে এই লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৫ হাজার কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে তা কমিয়ে ৩২ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছিল। ওই অর্থবছরের শেষে নিট বিক্রি ঋণাত্মক হয়ে দাঁড়ায় ৩ হাজার ২৯৫ কোটি টাকা।

শরীফ/

পাঠকের মতামত:

অর্থনীতি এর সর্বশেষ খবর

অর্থনীতি - এর সব খবর



রে