ঢাকা, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪
Sharenews24

বাংলাদেশের গার্মেন্টসের রপ্তানি বৃদ্ধি, আপত্তি ভারতীয়দের

২০২৪ মে ০৬ ১৬:১৭:৫৮
বাংলাদেশের গার্মেন্টসের রপ্তানি বৃদ্ধি, আপত্তি ভারতীয়দের

নিজস্ব প্রতিবেদক : ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানির জন্য দিল্লি বিমানবন্দরে বাংলাদেশ গার্মেন্টস থেকে তৈরি পোশাকের পরিমাণ এতটাই বেড়েছে যে ভারতীয় রপ্তানিকারকরা তাদের পণ্যের অগ্রাধিকার দাবি করছেন।

ভারতীয় রপ্তানিকারকরা বলছেন, অতিরিক্ত শুল্ক দিয়ে তাদের রপ্তানি পণ্যের জন্য জায়গা নিতে বাধ্য করা হচ্ছে বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

ভারতীয় রপ্তানিকারকদের শীর্ষ সংগঠনগুলি ইতিমধ্যেই ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

দিল্লি হয়ে রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশে গার্মেন্টসের পরিমাণ বৃদ্ধি ঘটেছে এ বছর জানুয়ারি মাস থেকে।

তবে বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ) বলছে, ভারতীয় রপ্তানিকারকদের দাবি খুবই অযৌক্তিক। কারণ বাংলাদেশের গার্মেন্টস রপ্তানির সামান্য একটা অংশই ভারতের মাধ্যমে যায়। ফলে তাদের পণ্যের কারণে দিল্লি বিমানবন্দরে ‘মালামালের জট’ লাগার কথা না।

এর আগে ঢাকা থেকে কলকাতা বিমানবন্দরে বাংলাদেশের পোশাকের একটি অংশ ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হতো। গত বছর অর্থাৎ ২০২৩ সাল থেকে কলকাতা বিমানবন্দর দিয়ে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি বন্ধ হয়ে যায় এবং তা চলে যায় দিল্লিতে।

সম্প্রতি জানা গেছে, বাংলাদেশি পোশাক ভর্তি প্রায় ৩০ ট্রাক রপ্তানির জন্য দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো টার্মিনালে যায়।

কী বলছে বিজিএমইএ?

বাংলাদেশি তৈরি পোশাক পণ্যের কারণে দিল্লি বিমানবন্দরে যে সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে ভারতীয় রপ্তানিকারকদের, তার সমাধান হিসাবে ভারতীয় রপ্তানি পণ্যকে অগ্রাধিকার দেওয়ার দাবি উঠেছে।

ভারতীয় রপ্তানিকারকদের একাংশের দাবি, বাংলাদেশি তৈরি পোশাক পণ্য, যা দিল্লি বিমানবন্দরের মাধ্যমে পশ্চিমা দেশগুলিতে পাঠানো হচ্ছে, তার ওপরে একটা ‘ল্যান্ডিং চার্জ’ বসানো হোক।

ফলে বাংলাদেশি রপ্তানি পণ্যের ওপরে বাড়তি মাশুল চাপবে, এতে ভারত হয়ে বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানি কমবে।

কিন্তু এর সঙ্গে একমত নন অ্যাপারেল এক্সপোর্ট প্রোমোশন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান সুধীর সেখরি। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশি পণ্যের ওপরে ল্যাণ্ডিং চার্জ লাগালে তাতে ভারতীয় রপ্তানিকারকদের কোনো সুবিধাই হবে না।

এতে বাংলাদেশি রপ্তানিকারকদের বাড়তি খরচ হবে, কিন্তু তাতে আমাদের তো কোনো লাভ নেই। ওই ল্যাণ্ডিং চার্জ তো যাবে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে।

তিনি বলেন, আমরা সরকারের সঙ্গে দুই দফায় আলোচনা করেছি। যেটা সরকারের করা উচিত, তা হল পরিকাঠামো উন্নত করা, পণ্যবাহী বিমান ভারতে আসার ব্যাপারে যেসব নিয়ন্ত্রণ চালু আছে, সেগুলো তুলে নিয়ে আরও বেশি বিমান এখানে আসার ব্যবস্থা করা।

আর যতক্ষণ না সেটা করা যাচ্ছে, ততক্ষণ বাংলাদেশি রপ্তানি পণ্যের ওপরে একটা লাগাম টানা দরকার, বলছিলেন সেখরি।

এদিকে বিজিএমইএ-ও ভারতীয় রপ্তানিকারকদের মতোই প্রতিক্রিয়া দিয়েছে। সংস্থাটি বলছে, দিল্লি বিমানবন্দরের পরিকাঠামো উন্নত করলেই এই সমস্যার সমাধান সম্ভব।

বিজিএমইএর পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, আমার জানা মতে, বাংলাদেশের গার্মেন্টস পণ্যের সামান্য কিছু অংশ ভারত হয়ে যায়।

কিন্তু তার জন্য ভারতীয়দের পণ্য রপ্তানিতে সমস্যা হবে বা এয়ারপোর্টে মালামালের জট লেগে যাবে, সেটি হওয়ার কথা না।

কিন্তু বাস্তবে যদি এমন হয়, তাহলে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ল্যান্ডিং চার্জ দাবি না করে বিমানবন্দরের সক্ষমতা বাড়ানোর কথা বলা উচিত।

বিষয়টি নিয়ে ভারত সরকারের সঙ্গে আলোচনা হলেও ভারতে চলমান নির্বাচনের কারণে তা এখনো চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছায়নি।

তবে ভারতীয় রপ্তানিকারকদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান এক্সপোর্ট অর্গানাইজেশনের সহ-সভাপতি ইশরার আহমেদ বলেন, রফতানিতে ভারতীয় পণ্যকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।

তিনি বলেন, আমরা সরকারের সঙ্গেও কথা বলছি। কিন্তু এখন নির্বাচন চলছে। আমরা আশাবাদী, নির্বাচনের পর একটি সমাধান পাওয়া যাবে।

শেয়ারনিউজ, ০৬ মে ২০২৪

পাঠকের মতামত:

অর্থনীতি এর সর্বশেষ খবর

অর্থনীতি - এর সব খবর



রে