ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারি ২০২৫
Sharenews24

পুলিশ-সাংবাদিকের স্টিকারযুক্ত গাড়ি দেখলেই যাচাই-বাছাই

২০২৪ মে ০৩ ১৫:৪১:৩৩
পুলিশ-সাংবাদিকের স্টিকারযুক্ত গাড়ি দেখলেই যাচাই-বাছাই

নিজস্ব প্রতিবেদক : মন্ত্রণালয়ের সরকারী লোগো ব্যবহার করে তিন বছর ধরে গাড়ি চালান জুবায়ের আহমেদ। কিন্তু জুবায়ের আহমেদ ওই মন্ত্রণালয়ের কেউ না। করেন ব্যবসা।

জানা গেছে, একটি সেমিনারে গিয়ে মন্ত্রণালয়ের লোগোটি সংগ্রহ করেছিলেন তিনি। সেই থেকে ব্যক্তিগত গাড়িতে ব্যবহার করতে থাকেন। তিন বছর পর বৃহস্পতিবার (০২ মে) গুলশান-১ পুলিশ প্লাজার সামনে ট্রাফিক পুলিশের একটি চেকপোস্টে ধরা পড়েন। গাড়ির কাগজপত্র ঠিক না থাকাসহ মোট সাত হাজার টাকার মামলা হয় জুবায়েরের বিরুদ্ধে।

ব্যক্তিগত গাড়িতে বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের স্টিকার ব্যবহার করে রাজধানীসহ সারা দেশে ঘুরে বেড়াচ্ছে নানা অপরাধীরা। পুলিশের চোখ ফাঁকি দিতেই তাঁদের গাড়িতে স্টিকার ও লোগো ব্যবহার করা হয়। এই সুবিধার জন্য অপরাধীরা নানাভাবে মন্ত্রণালয়ে স্টিকার ব্যবহার করতে বেশ আগ্রহী।

ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার (ডিএমপি) হাবিবুর রহমান বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, অপরাধীদের নিয়ে চলা এসব গাড়িগুলোর অধিকাংশতেই ব্যবহার হচ্ছে ভুয়া স্টিকার। তার মধ্যে পুলিশে স্টিকারই বেশি। যদিও অপরাধীদের সঙ্গে পুলিশের কোনো সম্পর্ক নেই। তাই রাস্তায় পুলিশের স্টিকারযুক্ত কোনো গাড়ি দেখলে ডিউটিরত থানা ও ট্রাফিক পুলিশকে যাচাইয়ের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনার দুই দিন পর বৃহস্পতিবার রাজধানীজুড়ে গাড়ির স্টিকারে বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান চালায় পুলিশ। ভুয়া স্টিকার-লোগো ব্যবহার যানবাহনের বিরুদ্ধে নেওয়া হচ্ছে কঠোর ব্যবস্থা।

মাঠপর্যায়ের সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যরা বলছেন, বিভিন্ন ধরনের গাড়িতে বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, বিভিন্ন বাহিনী, মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদপ্তর ও বিভিন্ন পেশার স্টিকার বিধি-বহির্ভূতভাবে ব্যবহার করে ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করছিল যানবাহনের কিছু চালক। এই অপরাধের রাশ টানতে তাঁদের এই অভিযান।

সরেজমিন দেখা যায়, রাজধানীর প্রবেশমুখসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে চেকপোস্ট বসিয়ে অভিযান চালাচ্ছেন ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা। ট্রাফিক ওয়ারী বিভাগের আওতাধীন ঢাকার অন্যতম এন্ট্রি পয়েন্ট ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করছেন ডিএমপির ট্রাফিক ওয়ারী বিভাগের উপ-কমিশনার আশরাফ ইমাম।

এখানে ট্রাফিক ওয়ারী বিভাগের সদস্যদের তিনটি দলে ভাগ করে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। দুপুর ১.৩০টা পর্যন্ত প্রায় ৫০টি গাড়ির স্টিকারের বৈধতা পরীক্ষা করা হয়েছে। ২৫টি গাড়ি ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল কারণ সেগুলি সামগ্রিকভাবে সঠিক বলে বিবেচিত হয়েছিল৷ বাকি ২৫টি গাড়ির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আইনি ব্যবস্থায় নেওয়া ২৫টি গাড়ির মধ্যে দুটি জব্দ করা হয়েছে এবং ২৩টি সড়ক পরিবহন আইনে মামলা করা হয়েছে।

একই অভিযান চলছে মগবাজার ও হাতিরঝিল এলাকায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাতিরঝিল এলাকার এক পুলিশ সদস্য বলেন, গাড়িতে বেশির ভাগই পুলিশ, সাংবাদিক ও মন্ত্রণালয়ের নাম ব্যবহার করা হয়। কিন্তু তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে কেউ সঠিক উত্তর দিতে পারছে না। এমনকি তারা এই গাড়িগুলির সাথে সংযুক্ত স্টিকার বা লোগোর সংস্থায় কাজও করে না। বন্ধু-বান্ধব-আত্মীয়-স্বজনের নামে এতদিন ধরে প্রভাব খাটিয়ে গাড়ি চালাচ্ছেন তারা। প্রমাণ পাওয়া সকলের বিরুদ্ধে ট্রাফিক আইনে মামলা করা হয়েছে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিকের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোঃ মুনিবুর রহমান সংবাদ মাধ্যমকে জানান, অপহরণকারী অপরাধীদের ধরতে এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।

শেয়ারনিউজ, ০৩ মে ২০২৪

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে