ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪
Sharenews24

নিউইয়র্কে পুলিশের গুলি

গ্রিনকার্ড ধরেও দেখা হলো না বাংলাদেশি যুবকের

২০২৪ মার্চ ৩১ ১০:৫৬:৪৪
গ্রিনকার্ড ধরেও দেখা হলো না বাংলাদেশি যুবকের

প্রবাস ডেস্ক : দশ বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে গিয়েছিলেন রোজারিও পরিবার। স্বপ্ন পূরণের জন্য আমেরিকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করতে চেয়েছিল তার পরিবার। তার জন্য আবেদনও করেছিলেন।

বছর দুয়েক আগে তাদের গ্রিনকার্ড অনুমোদিত হয়েছে। আর এক-দুই মাসের মধ্যে উইন রোজারিও তার স্বপ্নের সবুজ কার্ড পেয়ে যেতেন। তার স্বপ্ন ছিল গ্রিনকার্ড পাওয়ার পর মার্কিন নৌবাহিনীতে যোগ দেবেন।

কিন্তু তার আগেই পুলিশের গুলিতে নিহত হন বিজয়। কাঙ্খিত গ্রিন কার্ড বাস্তবায়িত হয়নি এবং নৌবাহিনীতে যোগদানের স্বপ্ন অপূর্ণই থেকে যায়।

নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় বুধবার ১৯ বছর বয়সী ভিনকে কুইন্সে তার বাড়িতে পুলিশ গুলি করে হত্যা করে। স্থানীয় কর্মকর্তারা বলছেন যে যুবকটি কাঁচি দিয়ে পুলিশ সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি করলে আত্মরক্ষার্থে পুলিশ গুলি চালায়।

বাবা ফ্রান্সিস রোজারিও ছেলে হারানোর শোকে ভালো করে কথা বলতে পারছেন না। তিনি শ্বাসরুদ্ধ কন্ঠে বললেন, 'আমার ছেলে নিউইয়র্কের জন অ্যাডাম স্কুল থেকে স্নাতক হয়েছে। তাকে নিয়ে আমাদের কত স্বপ্ন ছিল!'

ফ্রান্সিস রোজারিও বলেন, মানসিক সমস্যার কারণে দুইবার জ্যামাইকা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন উইন। এই সমস্যায় তিনি আমাদের প্রিয় ছিলেন। আর সেই ছেলেটা হারিয়ে গেল মায়ের কোলে।

উইনের ছোট ভাই উতস্য রোজারিও বলেছেন, পুলিশ গুলি চালানোর আগে তার মা তার ভাইকে পুরো সময় ধরে দম বন্ধ করে রেখেছিলেন। ভাইকে আটকে রাখার সময়ও পুলিশ গুলি চালায়। এই গুলি চালানোর দরকার ছিল না।

মর্মান্তিক ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মা ইভা ডি কস্তা কান্না থামাতে পারেননি। ছেলের কথা বলতে বলতে তিনি ক্রমাগত কাঁদছেন।

বাঙালি সম্প্রদায়ের আইন উপদেষ্টারা তাদের সান্ত্বনা দিতে এবং মামলার বিষয়ে পরামর্শ দিতে আসেন। ফ্রান্সিস রোজারিও বলেছেন, তিনি কমিউনিটি নেতাদের সিদ্ধান্ত মেনে নেবেন।

রোজারিও পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন আইনজীবী মঈন চৌধুরী। তিনি বলেন, "পরিবারের অনুমতি নিয়ে আমরা পুলিশের কার্যক্রম খতিয়ে দেখছি। তাদের পক্ষ থেকে কোনো ত্রুটি থাকলে আমরা শিগগিরই নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগের বিরুদ্ধে মামলা করব।"

সুচেন জোসেফ গোমেজ, মৃত উইনের দূরের আত্মীয়। তিনি বলেন, উইনের মায়ের বাড়ি গাজীপুরের কালীগঞ্জে এবং বাবার বাড়ি পুবাইলে। আমার মা এবং উইনের মা বাংলাদেশ থেকে পরিচিত। এ ছাড়া রোজারিও পরিবারের সঙ্গে আর কারও তেমন যোগাযোগ ছিল না।

সুখেন জানান, রোজারিও পরিবার এখানে আসার পর কয়েকটি পরিবারের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ হয়। ধর্মীয় অনুষ্ঠানে খুব একটা দেখা যায়নি। আমি যতবার ওদের বাড়িতে যেতাম ততবারই দেখতাম উইন পড়াশোনা ও অন্যান্য কাজে ব্যস্ত।

উইনের ভাই রোজারিও বলেন, 'ভাই খুব অন্তর্মুখী ছিলেন। সবসময় খেলাধুলা নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন। ইউএস মেরিনে যোগ দেওয়ার স্বপ্ন ছাড়াও, তিনি একজন দুর্দান্ত ক্রীড়াবিদ হতে চেয়েছিলেন। বাড়িতে অনুশীলনও করতেন। তার অনেক বন্ধু ছিল না। আমি তার বন্ধু ছিলাম।

শেয়ারনিউজ, ৩১ মার্চ ২০২৪

পাঠকের মতামত:

প্রবাস এর সর্বশেষ খবর

প্রবাস - এর সব খবর



রে