ঢাকা, শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪
Sharenews24

টানা পতনে শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের আর্তনাদ

২০২৪ মার্চ ১৪ ১৪:১৫:৫৫
টানা পতনে শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের আর্তনাদ

টানা পতনে শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের আর্তনাদ

নিজস্ব প্রতিবেদক : এক মাসের বেশি সময় ধরে টানা পতনে রয়েছে দেশের শেয়ারবাজার। গত ১১ ফেব্রুয়ারি প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ছিল ৬ হাজার ৪৪৭ পয়েন্ট। এক মাস অতিক্রান্তের পর আজ ১৪ মার্চ (বৃহস্পতিবার) ডিএসইর প্রধান সূচক কমে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৯৬৮ পয়েন্টে। এই সময়ে সূচক কমেছে ৪৭৯ পয়েন্ট।

সূচকের এমন ধারাবাহিক পতনে শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীরা পুঁজি হারিয়ে এখন দিশেহারা। অনেকের পুঁজি ২৫ শতাংশ থেকে ৩০ শতাংশের বেশি উধাও হয়ে গেছে। আর যারা মার্জিন ঋণে শেয়ার কিনেছিলেন, তাদের সিংহভাগ এখন প্রায় নিঃস্ব। গত কয়েকদিন যাবত তাদের পোর্টফোলির শেয়ার ছিল ফোর্স সেলের আওতায়-এমনটাই জানিয়েছেন বিভিন্ন হাউজের বিনিয়োগকারীরা।

বাজার সংশ্লিষ্টরা অভিযোগ করছেন, ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের ধাক্বা সামলিয়ে বাজার যখন ঘুরে দাঁড়াচ্ছিল, ঠিক তখন জেড ক্যাটাগরির শেয়ার নিয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থার সিদ্ধান্ত বাজারে দুর্যোগ নেমে আসে। এর সাথে যুক্ত হয় বহুজাতিক মেগা কোম্পানি গ্রামীণফোন ও বৃটিশ অ্যামেরিকান ট্যোবাকোর ফ্লোর প্রত্যাহার। চলতি সপ্তাহে আরও যুক্ত হয় বিএসইসি ও ডিএসই’র পারস্পরিক বিরোধ এবং বড় বিনিয়োগকারীদের রেষারেষি।

তাঁরা বলছেন, মার্চেন্ট ব্যাংক, ব্রোকারেজ হাউজ অ্যাসোসিয়েশন, ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের মতো ব্যাঙ্গের ছাতার সংগঠনগুলোর ভুঁইফোড় নেতারা যারা ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের জন্য উঠেপড়ে লেগেছিলেন, বাজারকে সাপোর্ট দিবেন বলে গলাবাজি করেছিলেন, এখন তাদের পাত্তা নেই। তারা সবাই এখন হাইবারনেশনে চলে গেছে। বিনিয়োগকারীদের আর্তনাদ যেন তাদের কানে বাজছে না।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শেয়ারবাজার দেখভাল করার জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা নামে একটি প্রতিষ্ঠানও দেশে রয়েছে। সেই প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তিরা এখন চুপচাপ। তাঁরাও যেন নিরবে বিনিয়োগকারীদের দুর্দশা অবলোকন করছেন। বিনিয়োগকারীদের দুর্দশা লাঘবে তাঁদের আশু উদ্যোগ দাবি করেন বিনিয়োগকারীসহ বাজার সংশ্লিষ্টরা।

তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত ১৮ জানুয়ারি ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের দিন প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ছিল ৬ হাজার ৩৩৬ পয়েন্ট। ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের পর ধারাবাহিক পতনে ৬ কর্মদিবসের মাথায় ২৮ জানুয়ারি ডিএসইর সূচক নেমে দাঁড়ায় ৬ হাজার ৭৯ পয়েন্টে।

পরের দিন ২৯ জানুয়ারি থেকে বাজার ঘুরে দাঁড়ায়। ১০ কর্মদিবসের মাথায় (১১ ফেব্রয়ারি) ডিএসইর সূচক বেড়ে দাঁড়ায় ৬ হাজার ৪৪৭ পয়েন্টে। এই সময়ে জেড ক্যাটাগরির শেয়ার নিয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থার সিদ্ধান্ত বাজারকে আবার অস্থির করে তোলে। শুরু হয় ধারবাহিক পতন। এরপর পতন আরও গভীর হয় যখন শীর্ষ মূলধনী কোম্পানি গ্রামীণফোন ও বৃটিশ অ্যামেরিকান ট্যোবাকোর ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়া হয়। চলতি সপ্তাহে পতন আর তীব্র হয়। সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর সূচক উবে যায় ১৪৪ পয়েন্ট।

বৃহস্পতিবারের বাজার পর্যালোচনা

আজ বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) ডিএসইর প্রধান প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৬.০৬ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৯৬৮ পয়েন্টে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরীয়াহ সূচক ১.০২ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ২৯৯ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৪.৯৮ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৫১ পয়েন্টে।

আজ ডিএসইতে ৫১৪ কোটি ৬৩ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কর্মদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৪৮৩ কোটি ৩০ লাখ টাকার।

আজ ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৯৪টি প্রতিষ্ঠানের ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৬৫টির, কমেছে ১৭১টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৫৮টির।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) আজ ১৩ কোটি ৯৩ লাখ ৯৪ হাজার টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১১ কোটি ৭২ লাখ ৫০ হাজার টাকার শেয়ার ও ইউনিট।

আজ সিএসইতে ২১২টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৮৫টির, কমেছে ৮৯টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৮টি প্রতিষ্ঠানের।

আগের দিন সিএসইতে ২১৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। যার মধ্যে দর বেড়েছিল ৬০টির, কমেছিল ১৩১টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ২৬টি প্রতিষ্ঠানের।

শেয়ারনিউজ, ১৪ মার্চ ২০২৪

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে