ঢাকা, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪
Sharenews24

মানুষ ডলার কিনে বালিশের নিচে রেখেছে: গভর্নর

২০২৪ মার্চ ০৮ ১৯:০৩:১৩
মানুষ ডলার কিনে বালিশের নিচে রেখেছে: গভর্নর

নিজস্ব প্রতিবেদক : ডলার কিনে মানুষ বালিশের নিচে রেখে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। তিনি বলেন, খুব আশ্চর্যজনক বিষয় হচ্ছে, আমরা ব্যাংকে ডলার জমার সুযোগ সহজ করে দেওয়ার পর প্রতিদিন গড়ে পাঁচ লাখ নগদ ডলার জমা হচ্ছে। এতে রিজার্ভ বাড়ছে। ব্যাংক কিন্তু কোনো প্রশ্ন করছে না।

বৃহস্পতিবার (০৭ মার্চ) সন্ধ্যায় রাজধানীর মিরপুরে অবস্থিত বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) আয়োজিত তৃতীয় এ কে এন আহমেদ স্মারক বক্তৃতায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

গভর্নর বলেন, বিদেশ থেকে আসার সময় কেউ যদি ঘোষণা দেয় আমি ডলার নিয়ে এসেছি। কেউ প্রশ্ন করবে না। সেই ডলার আরএফসিডি (রেসিডেন্ট ফরেন কারেন্সি ডিপোজিট অ্যাকাউন্ট) হিসেবে জমা রাখা যাবে।

বিআইবিএম মিলনায়তনে আয়োজিত এ স্মারক বক্তৃতায় মূল বক্তা ছিলেন সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন। স্বাগত বক্তব্য দেন বিআইবিএমের মহাপরিচালক মো. আখতারুজ্জামান। উপস্থিত ছিলেন সাবেক গভর্নর ফজলে কবির। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বিআইবিএমের সহযোগী অধ্যাপক মো. শিহাব উদ্দিন খান।

সভপতির বক্তব্যে আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, আরএফসিডি হিসাবে যে কেউ ডলার জমা রাখতে পারছে। যে জীবনে একবার বিদেশে গিয়েছে সে–ও ব্যাংকের একটি হিসাব খুলে ১০ হাজার ডলার জমা রাখতে পারবে। কেউ যদি চারবার বিদেশে যায়, তাহলে ৪০ হাজার ডলার জমা রাখার সুযোগ পাবে।

তিনি বলেন, ২০২০–২১ অর্থবছরে চলতি হিসাবে ঘাটতি ছিল মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির ৪ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই–জানুয়ারি) চলতি হিসাব উদ্বৃত্ত রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়ায় বাজার থেকে উদ্বৃত্ত টাকা উঠে এসেছে।

তিনি আরো বলেন, সরকারের অনেক কেনাকাটা আছে যা বাণিজ্যিক ব্যাংক সহায়তায় করতে পারছিল না। তাদের সহায়তা দেওয়ার জন্য রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তাতে বাজার থেকে আরও টাকা উঠে এসেছে। তারপর আবার বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে টাকার সংকট দেখা দেয়। তখন বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে টাকা–ডলার অদলবদল বা সোয়াপের মাধ্যমে টাকা সরবরাহ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এসময় প্রবাসী ও রপ্তানি আয় কমে যাওয়ার প্রসঙ্গেও গভর্নর বলেন, বাজারে গুজব ছড়িয়েছিল, ডলারের দাম এত হবে। সে জন্য অনেকে ডলার আনছিলেন না। গত ছয় মাসে ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন হয়েছে ২ শতাংশ। এখন খুব বেশি অবমূল্যায়ন আর হচ্ছে না। একধরনের স্থিতিশীলতা চলে এসেছে। নির্বাচনের পর রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আসছে। অর্থনীতির অন্য সূচকগুলো ইতিবাচক ধারা ফিরতে শুরু করেছে। এটি বজায় থাকবে।

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ব্যাংকের নেওয়া পদক্ষেপের বিষয়ে আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে মুদ্রানীতি ও আর্থিক নীতি একসঙ্গে প্রয়োগ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। চাহিদা নিয়ন্ত্রণে জোর দেওয়া হচ্ছে। সরকারের অনেক খরচ কমানো হয়েছে। আমরা হিসাব করে দেখেছি, তাতে চলতি বাজেটের খরচ ১৫ শতাংশ কম হবে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে মূল্যস্ফীতি দ্রুত নেমে আসবে। যে পর্যন্ত মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের ঘরে নামবে না ততক্ষণ খরচ কমানোর ধারা চলবে।

দেশে খেলাপিঋণের ক্ষেত্রে আগামী দুই বছরের মধ্যে বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে মন্তব্য করে গভর্নর বলেন, আর্থিক খাতে স্থিতিশীলতা আনতে পথনকশা ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতায় একটা বড় সমস্যা হচ্ছে মন্দ ঋণ।

শেয়ারনিউজ, ০৮ মার্চ ২০২৪

পাঠকের মতামত:

অর্থনীতি এর সর্বশেষ খবর

অর্থনীতি - এর সব খবর



রে