ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪
Sharenews24

‘নো ডিভিডেন্ড’র শেয়ারের বেসামাল রেকর্ড

২০২৪ জানুয়ারি ২৩ ১৯:২৯:৩৮
‘নো ডিভিডেন্ড’র শেয়ারের বেসামাল রেকর্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক : ২০২৩ সালের ১৩ এপ্রিল শেয়ারটির দাম ছিল ৯ টাকা ৯০ পয়সা। মাত্র ৯ মাসের মাথায় শেয়ারটির দাম উঠেছে ১৯৩ টাকা ৮০ পয়সায়। লোকসানের কারণে ২০২৩ সালে বিনিয়োগকারীদের কোনো ডিভিডেন্ডও দিতে পারেনি। তারপরও থেমে নেই কোম্পানিটির আকাশ ছোঁয়া যাত্রা।

কোম্পানিটি হলো শেয়ারবাজারে বেসামাল রেকর্ড করা অতি দুর্বল কোম্পানি খান ব্রাদার্স পিপি ওয়েভেন ব্যাগ ইন্ডাস্টিজ। অস্বাভাবিক দর বাড়ার কারণে গত ৭ মাসে ৫ বারের বেশি শোকজ করেছে ডিএসই কর্তৃপক্ষ। তারপরও কোম্পানিটির দর বৃদ্ধির প্রবণতা না কমে লাগামহীন অবস্থায়ই রয়েছে।

ডিএসই সূত্রে জানা যায়, অস্বাভাবিক হারে দর বেড়ে কোম্পানিটি আজ গেইনার তালিকায় ৩ নম্বরে অবস্থান করছে। এদিন কোম্পানিটির শেয়ার দর ১৭ টাকা ৬০ পয়সা বা ৯.৯৯ শতাংশ বেড়ে সর্বশেষ ১৯৩ টাকা ৮০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে।

গত বছরের ১৩ এপ্রিল থেকেই কোম্পানিটির দর বাড়তে থাকে। তারপর ৯ টাকা ৯০ পয়সা থেকে কারসাজির যাদুতে ১৯৩ টাকা ৮০ পয়সা সর্বোচ্চ রেকর্ড তৈরি করেছে। শেয়ারবাজারে এতো অল্প সময়ের মধ্যে নো ডিভিডেন্ড দেয়া আর কোনো কোম্পানির দর এভাবে বেড়েছে বলে তথ্য বিশ্লেষণে পাওয়া যায়নি।

সর্বশেষ ৩০ জুন ২০২৩ অর্থবছরে লোকসানের কারণে বিনিয়োগকারীদের কোনো ডিভিডেন্ড দিতে পারেনি কোম্পানিটি। সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৬ পয়সা।

এদিকে, চলতি অর্থবছরের ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ১ পয়সা। যে কারণে কোম্পানিটির পিই রেশিও নেগেটিভ।

প্রথম প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য (এনএভি) ১১ টাকা ৮৬ পয়সা।

২০১৪ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া ‘বি’ ক্যাটাগরির কোম্পানিটির অনুমোদিত ও পরিশোধিত মূলধন যথাক্রমে- ১৫ কোটি টাকা ও ৯৮ কোটি ৮ লাখ টাকা।

এই কোম্পানির ৯ কোটি ৮০ লাখ ৭৯ হাজার ৮৭৭টি শেয়ারের মধ্যে ৩০.১৩ শতাংশ উদ্যোক্ত পরিচালক, ৫.৭১ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী এবং ৬৪.১৬ শতাংশ শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে।

বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত অনেক ভালো মৌলভিত্তিসম্পন্ন কোম্পানির দর যেখানে তলানিতে অবস্থান করছে, সেখানে কিভাবে এমন একটি দুর্বল ও ঝুঁকিপূর্ণ কোম্পানির দর হাজার গুণ বেড়ে যায়। যে কোম্পানিটির দর এক বছর আগেও ফেসভ্যালুর নিচে ছিল, তা কোন কারণে এত উচ্চ দরে লেনদেন হচ্ছে?

ডিএসই শুধু শোকজ করেই দায় সারছে। কার্যকর কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায কোম্পানিটির দর হুহু করে বেড়েই চলেছে। এই দর বৃদ্ধি থামাতে হলে এর দর বৃদ্ধির কারণ অনুসন্ধান করে কারসাজিতে জড়িত ব্যক্তিদেরকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কোম্পানিটির কারসাজিকারিরা ৩৫-৪০ টাকার মধ্যে সব শেয়ার হাতিয়ে নিয়েছে। এরপর নিজেদের মধ্যে লেনদেন করে কৃত্রিমভাবে শেয়ারটির দাম আকাশে তুলছে। যার কোনো যুক্তিসংগত কারণ নেই। এখন লেনদেনে উত্থান-পতন দেখিয়ে লেনদেন বাড়িয়ে বিনিয়োকারীদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা চলছে।

তাঁরা বলছেন, এই শেয়ারে বিনিয়োগ করা মানে জেনে শুনে আগুনে হাত দেওয়া। শেয়ারটির দাম এই পর্যায়ে থাকার কোনো রকম সম্ভাবনা নেই। যখন পতন শুরু হবে, তখন যেভাবে বেড়েছে তার চেয়ে আরও দ্রুত গতিতে নামবে। সুতরাং বিনিয়োগকারীদের ভুলেও এই শেয়ারের আশে-পাশে যাওয়াও উচিত হবে না।

৬ গুরুত্বপূর্ণ স্টক নিয়ে আলোচনা

শেয়ারনিউজ, ২৩ জানুয়ারি ২০২৪

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে