ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪
Sharenews24

কারসাজি কোম্পানির শেয়ারে বিরল ঘটনা!

২০২৩ নভেম্বর ১৫ ২০:১৪:১৫
কারসাজি কোম্পানির শেয়ারে বিরল ঘটনা!

নিজস্ব প্রতিবেদক : শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ লোকসানের কারণে ৩০ জুন, ২০২৩ সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ডিভিডেন্ড দিতে পারেনি। তবে ডিভিডেন্ড দিতে না পারলেও আজ নো ডিভিডেন্ড ঘোষণার পর শেয়ারটির রেকর্ড দাম বেড়েছে। আজ কোম্পানিটির শেয়ার দাম বেড়েছে ৯ টাকা বা ১৫ শতাংশ। যা শেয়ারবাজারের ইতিহাসে বিরল বলা যায়।

‘নো ডিভিডেন্ড’ ঘোষণার পর এর আগে কোনো কোম্পানির শেয়ার দাম এভাবে বাড়তে দেখা যায়নি। আজ ডিএসইতে দাম বৃদ্ধির শীর্ষ কোম্পানি ছিল খান ব্রাদার্স এবং লেনদেনের দিক থেকে ছিল এটি চতুর্থ। কারসাজির কারণেই কোম্পানিটির এমন বহুমাত্রিক বিরল ঘটনা দেখা গেল। আবার কোম্পানিটির শেয়ারের দাম এমন বেপরোয়া হলেও বাজার সংশ্লিষ্ট সবাই একেবারে নিশ্চুপ; এখানেও দেখা যায় বিরল ঘটনা।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দীর্ঘদিন যাবত কোম্পানিটির শেয়ার নিয়ে একটি কারসাজি চক্র মেতে রয়েছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থার উচিত আর একদিনও দেরি না করে কারসাজি তদন্তের উদ্যোগ নেওয়া। কারা এবং কেন—এই ধরনের একটি লোকসানি ও ডিভিডেন্ড না দেওয়া কোম্পানির শেয়ার বেপোরোয়াভাবে কিনছে।

শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, বন্ধ ও লোকসানি একটি কোম্পানির শেয়ারের দাম যেভাবে বেড়েছে, সেটি একেবারেই অবাস্তব ও অগ্রহণযোগ্য। কোনো ধরনের তদন্ত ছাড়া খালি চোখে দেখেই বলা যায় কারসাজির মাধ্যমেই এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। তাই নিয়ন্ত্রক সংস্থার উচিত আর এক দিনও দেরি না করে কারসাজি তদন্তের উদ্যোগ নেওয়া। এরপর তদন্তে পাওয়া তথ্য অবশ্যই বিনিয়োগকারীসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ঘটা করে জানানো উচিত হবে। কারা এবং কেন—এ ধরনের একটি কোম্পানির শেয়ার কিনছে, সেটি সবার জানা দরকার।

ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ১৬ এপ্রিল কোম্পানিটির শেয়ারের বাজারমূল্য ছিল ৯ টাকা ৯০ পয়সা। অর্থাৎ গত এপ্রিলেও এটির শেয়ারের দাম ছিল ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের নিচে। আর আজ লেনদেন শেষে সেই দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৯ টাকা। সেই হিসাবে, ৭ মাসে এটির শেয়ারের দাম ৬০০ শতাংশ বেড়েছে। কয়েক মাস ধরে বন্ধ ও লোকসানি কোম্পানির শেয়ারের একটানা অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ঘটলেও কোনো ব্যবস্থাই নেয়নি নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। তাই নিয়ন্ত্রক সংস্থার ভূমিকা নিয়ে বাজার বিশেষজ্ঞদের মধ্যে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

খান ব্রাদার্সের কারখানা দীর্ঘদিন যাবত বন্ধ। পাশাপাশি ব্যবসা করতে না পারায় এটি দীর্ঘ সময় ধরে লোকসান গুনছে। ফলে ডিভিডেন্ড দেওয়ার আর্থিক সামর্থ্য নেই কোম্পানিটির। তা সত্ত্বেও শেয়ারবাজারে হু হু করে বাড়ছে কোম্পানিটির শেয়ারদর। এই ঘটনা শেয়ারবাজার–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মনে বড় ধরনের প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। পাশাপাশি বিনিয়োগকারী ব্যক্তিদের একটি অংশ বাজারের এই ধরনের আচরণে হতাশাও প্রকাশ করেছেন।

ডিএসইতে গত এক মাসে খান ব্রাদার্সের শেয়ারের দাম দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। আর ৭ মাসে এটির শেয়ারের দাম বেড়েছে ৫৯ টাকা বা প্রায় ৬০০ শতাংশ। এই মূল্যবৃদ্ধিকে অস্বাভাবিক ও অযৌক্তিক বলে মন্তব্য করেছেন বাজার–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। তাঁরা বলছেন, বন্ধ ও লোকসানি একটি কোম্পানির এভাবে মূল্যবৃদ্ধির পেছনে কারসাজি ছাড়া আর কোনো গ্রহণযোগ্য কারণ থাকতে পারে না।

শেয়ারনিউজ, ১৫ নভেম্বর ২০২৩

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে