ঢাকা, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪
Sharenews24

‘আইপিও যাচাই-বাছাইয়ে স্টক এক্সচেঞ্জের আরও ক্ষমতা থাকা উচিত’

২০২৩ নভেম্বর ১৪ ২২:৫৪:০৮
‘আইপিও যাচাই-বাছাইয়ে স্টক এক্সচেঞ্জের আরও ক্ষমতা থাকা উচিত’

নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. এটিএম তারিকুজ্জামান বলেছেন, বর্তমানে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবসহ (আইপিও) সব ধরনের পাবলিক অফারের অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আলাদা আলাদা আইন রয়েছে। কোথাও স্টক এক্সচেঞ্জ অনুমোদন দেয় আবার কোথাও রেগুলেটর অনুমোদন দেয়। আমাদের দেশে আগে থেকেই রেগুলেটর আইপিও অনুমোদন দিয়ে আসছে। তবে আইপিওর যাচাই-বাছাইয়ে স্টক এক্সচেঞ্জের আরও ক্ষমতা থাকা উচিত।

মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরাম (সিএমজেএফ) আয়োজিত সিএমজেএফ টক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

রাজধানীর পুরানা পল্টনে সিএমজেএফের নিজস্ব কার্যালয়ে সিএমজেএফ আয়োজিত অনুষ্ঠানে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক আবু আলীর সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিএমজেএফ সভাপতি জিয়াউর রহমান।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডিএসইর এমডি বলেন, শেয়ারবাজারের আস্থার উন্নয়নে ফ্লোর প্রাইস কোনো স্থায়ী কোনো সমাধান নয়। এটা শেয়ার প্রাইস নির্ধারণে সরাসরি হস্তক্ষেপ। রেগুলেটর বা স্টক এক্সচেঞ্জ প্রাইস ফিক্স করা ঠিক না। এটা বিশ্বের কোথাও নেই। স্টক এক্সচেঞ্জ প্রাইস ডিসকভারের জায়গা।

শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক নির্বাহী পরিচালক ড. এটিএম তারিকুজ্জামান গত সেপ্টেম্বর মাসে ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে তিনি ডিএসইর বর্তমান অবস্থার নানাদিক এবং এর উন্নয়নে বিভিন্ন পরিকল্পনা তুলে ধরেন।

প্রশ্নোত্তর পর্বে শেয়ারবাজারের ম্যানুপুলেশন বন্ধ, ডি-মিউচুয়ালাইজেশন, কৌশলগত বিনিয়োগ ও টেকনিক্যাল সহায়তা, ভালো কোম্পানি শেয়ারবাজারে আনা, বিনিয়োগকারীর সুরক্ষা ও তালিকাভুক্ত কোম্পানিতে সুশাসন প্রতিষ্ঠাসহ নানা বিষয় ওঠে আসে।

ডিএসইর এমডি বলেন, স্টক এক্সচেঞ্জে ব্যবস্থাপনা থেকে মালিকানা পৃথকীকরণে ডি-মিউচুয়ালইজেশন করা হয়। এই আইনে স্বতন্ত্র পরিচালকদের প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। ট্রেকহোল্ডারদের প্রতিনিধিও রয়েছে। তবে কাজ করতে গিয়ে মনে হচ্ছে, কিছু বিষয় পরিবর্তন আনা প্রয়োজন, সেটা নিয়ে রেগুলেটরের সঙ্গে আলোচনা করব আমরা।ডি-মিউচুয়ালাইজেশনের পর স্টক এক্সচেঞ্জে বেশ কিছু সুফলও এসেছে। মালিকানা ও ব্যবস্থাপনা আলাদা হয়েছে। সরাসরি কোনো হস্তক্ষেপে নেই। অপারেশনে বোর্ডের কোনো ইনফ্লুয়েশন নেই। তবে আরও কাজ করার সুযোগ রয়েছে।

কৌশলগত বিনিয়োগকারী থেকে কী পেলাম, এমন প্রশ্নের জবাবে ড. এটিএম তারিকুজ্জামান বলেন, সাংহাই ও শেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জের প্রস্তাবে টেকনিক্যাল কিছু প্রস্তাব ছিল। সেই প্রস্তাবের কিছু কাজ ইতোমধ্যে হয়েছে। আরও কিছু বাকি রয়েছে। করোনার কারণে বাস্তবায়নের বিলম্ব হয়েছে। আশা করি, অবশিষ্ট কাজও হবে।

বিনিয়োগকারীর সুরক্ষার বিষয়ে তিনি বলেন, বাজারে লাভ-লোকসান থাকবেই। কারো লোকসান হবে না-এমন নিশ্চয়তা দেওয়া সম্ভব নয়। তবে কেউ যাতে প্রতারণার শিকার না হয়, বিনিয়োগকারীর টাকা যাতে কেউ আত্মসাৎ করতে না পারে- সে ব্যাপারে আমরা তৎপর আছি।

শেয়ারবাজারে ম্যানুপুলেশন বন্ধে ডিএসই কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে কিনা এমন প্রশ্নোত্তরে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে শেয়ার কারসাজি নিয়ে যেসব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, অনেক তদন্তই ডিএসই করার পর নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে পাঠিয়েছে। কারসাজি নিয়ন্ত্রণের ডিএসইর সার্ভিলেন্স টিম কাজ করছে।

তিনি বলেন, কারসাজি বন্ধ ও গভীর অনুসন্ধানে ডিএসইর আরও ক্ষমতা প্রয়োজন। বিশেষ করে কারখানা পরিদর্শনের ক্ষেত্রে এটি খুবই জরুরি। কারণ কারসাজি ভালোভাবে ডিগ-আউট করতে ডিএসই তথ্য চাইলে, কেউ নাও দিতে পারে। না দিলে কিন্তু বাধ্য করা বা ব্যবস্থা নেওয়ার মতো এখতিয়ার আমাদের নেই, যা বিএসইসির আছে।

বর্তমানে কোনো কারখানায় প্রবেশ করতে না দিলে বা কেউ তথ্য দিতে না চাইলে সেটা নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে জানানো হয়। আবার কারখানা পরিদর্শনের জন্য বিএসইসির কাছ থেকে আগাম অনুমতি নিতে হয়। এই সময়ের মধ্যে ঘটনা আরও নাজুক হয়ে পড়ে। তাই কারসাজির গভীর তদন্তে ডিএসইর আরও ক্ষমতা প্রয়োজন। কারসাজি বন্ধে আরও কাজ করার সুযোগ রয়েছে।

দুর্বল কোম্পানি তালিকাভুক্তি সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থা নিশ্চয়ই দেখেশুনেই আইপিও অনুমোদন করে। আর বিএসইসি অনুমোদন করলে সেটি তালিকাভুক্ত করা আমাদের দায়িত্ব।

তিনি বলেন, বাজারের উন্নয়নে আইন-কানুনের কিছু পরিবর্তন ও সংশোধন প্রয়োজন। এগুলো আমরা নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে তুলে ধরব। বিএসইসি এই বাজারের উন্নয়নে অনেক ভূমিকা রাখছে। তাই আইনের পরিবর্তন ও সংশোধনের বিষয়ে তারা ইতিবাচক সাড়া দেবেন বলে আশা করছি।

শেয়ারনিউজ, ১৪ নভেম্বর ২০২৩

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে