ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪
Sharenews24

হাসপাতালের রোগীদের জীবন নিয়েও খেলছে ইসরায়েল

২০২৩ নভেম্বর ১৩ ১০:২৫:৩৩
হাসপাতালের রোগীদের জীবন নিয়েও খেলছে ইসরায়েল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনি গাজা উপত্যকার সবচেয়ে বড় হাসপাতাল আল শিফার কার্ডিয়াক ওয়ার্ড ইসরায়েলি হামলায় ধ্বংস হয়ে গেছে। হামলা ও জ্বালানি ও চিকিৎসা সরঞ্জামের ঘাটতির কারণে হাসপাতালের সব কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। চিকিৎসার অভাবে অনেক রোগী মারা যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বর্তমানে ৬৫০ রোগীর জীবন ঝুঁকিতে রয়েছে। তাদের মধ্যে ৩৭ জন শিশু। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের জীবন বাঁচাতে প্রতিবেশী মিশরীয় সরকারের কাছে আবেদন জানায়। এ ছাড়া আল শিফা হাসপাতাল চত্বরে আশ্রয় নিয়েছেন প্রায় দেড় হাজার মানুষ। পানি ও খাদ্য সংকটের কারণে তাদের বেঁচে থাকাও কঠিন হয়ে পড়েছে। এদিকে, গাজা শহরের দ্বিতীয় বৃহত্তম আল কুদস হাসপাতাল আল শিফা হাসপাতালও জ্বালানি সংকটের কারণে বন্ধ হয়ে গেছে।

শুধু এ দুটি নয়, এর আগে একই কারণে বন্ধ হয়ে গেছে গাজার আরও ২৫ থেকে ৩০টি হাসপাতাল। এখন সবচেয়ে বড় দুটি হাসপাতাল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ব্যাপক মানবিক বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় রোগীদের জীবন বাঁচানো নিয়ে শুরু হয়েছে স্বজন ও চিকিৎসকদের আরেক যুদ্ধ। ইসরায়েল সরকারের দাবি, হাসপাতালের নিচে রয়েছে হামাসের গোপন সুড়ঙ্গ। আর সে সুড়ঙ্গ ধ্বংস করতেই এসব হামলা চালানো হচ্ছে।

যদিও হামাস হাসপাতালের নিচে সুড়ঙ্গ থাকার দাবি নাকচ করে দিয়েছে। কিন্তু তা প্রত্যাখ্যান করে ইসরায়েলি বাহিনী গাজা শহরের প্রধান হাসপাতালগুলো ঘিরে রেখে হামলা চালাচ্ছে। খবর আল জাজিরার।

ইসরায়েলের অবরোধ আরোপ, জ্বালানি প্রবেশ করতে না দেওয়া ও অব্যাহত হামলার কারণে শনিবার রাতে গাজার সবচেয়ে বড় হাসপাতাল আল শিফা বন্ধ হয়ে গেছে। হামলার কারণে হাসপাতালটির হৃদরোগ ওয়ার্ড সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। এ ছাড়া হামলার কারণে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রটিও এখন অচল হয়ে পড়েছে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলেছে, ভেতরে থাকা ৬৫০ রোগীর জীবন এখন ঝুঁকিতে। তাদের মধ্যে ৩৭টি শিশু রয়েছে। হাসপাতালের ভেতর যেসব রোগী আছেন, তারা এখনো সেখানে আটকে আছেন, সদ্যই জন্ম নেওয়া দুটি শিশু মারা গেছে এবং হাসপাতালের আশপাশে প্রচণ্ড লড়াই হচ্ছে। হাসপাতাল চত্বরে আশ্রয় নেওয়া প্রায় দেড় হাজার মানুষ মারাত্মক ভীতিকর অবস্থার মধ্যে রয়েছেন। এই মুহূর্তে খাদ্য তো দূরের কথা, খাওয়ার পানি পর্যন্ত নেই তাদের।

আল শিফার এ ধরনের অবস্থার মধ্যে গাজার দ্বিতীয় বৃহত্তম আল কুদস হাসপাতালও বন্ধ হয়ে যাওয়ার খবর এসেছে। ফিলিস্তিনের রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (পিআরসিএস) জানিয়েছে, গাজার উত্তরাঞ্চলের আল কুদস হাসপাতালে আর কোনো ধরনের সেবা দেওয়া যাচ্ছে না। জ্বালানি শেষ হয়ে যাওয়ায় বাধ্য হয়েই ওই হাসপাতাল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

এক বিবৃতিতে পিআরসিএসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতি, চিকিৎসা সরঞ্জামের অভাব, খাদ্য ও পানির ঘাটতি এবং বিদ্যুৎ না থাকার পরও হাসপাতালের কর্মীরা রোগীদের সেবা দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। চলমান ইসরায়েলি বোমা বর্ষণে হাসপাতালটিতে আর কোনো কার্যক্রম চালানো যাচ্ছে না। সেখানকার চিকিৎসা কর্মী, রোগী এবং বাস্তুচ্যুত বেসামরিক নাগরিকদের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে।

বিবৃতিতে আরও জানানো হয়েছে, সেখানে ইসরায়েলি বাহিনীর উপস্থিতি আরও বেড়ে গেছে। রেড ক্রসের কর্মীরা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় অ্যাম্বুলেন্সও পাঠাতে পারছেন না।

এদিকে গাজার পূর্বাঞ্চলীয় খান ইউনিসের একটি আবাসিক ভবনে হামলার ঘটনায় ১৩ জন নিহত হয়েছেন। ওই হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া এক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলতে সক্ষম হয়েছে বিবিসি। তিনি জানিয়েছেন, হামলার সময় মাটি যেন কেঁপে উঠেছিল। হামলায় আবাসিক ভবনটি ধ্বংস হয়ে গেছে। এর আগেও এ ধরনের বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।

এর আগে জাতিসংঘ জানায়, গাজায় অবস্থিত তাদের একটি কার্যালয়ে রাতভর গোলাবর্ষণ করা হয়েছে। ওই কার্যালয়ে আশ্রয় নেওয়া বেশ কয়েকজন বেসামরিক নাগরিকের মৃত্যু এবং আহত হওয়ার খবর পেয়েছেন তারা।

শেয়ারনিউজ, ১৩ নভেম্বর ২০২৩

পাঠকের মতামত:

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ খবর

আন্তর্জাতিক - এর সব খবর



রে