ঢাকা, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪
Sharenews24

সরকারের উদ্দেশে যে বার্তা দিলেন সিইসি

২০২৩ অক্টোবর ০৪ ১৭:২২:৩৪
সরকারের উদ্দেশে যে বার্তা দিলেন সিইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকারকে উদ্দেশ্য করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, সম্ভাব্য পোলিং এজেন্টদের তালিকা নির্বাচন কমিশনকে দেওয়ার পর যদি তাদের গ্রেফতার করা হয়, তাহলে বুঝব সেটি বিশেষ উদ্দেশে করা হয়েছে।

আজ বুধবার (০৪ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁও নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে ‘অবাধ ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় প্রার্থী ও পোলিং এজেন্টদের ভূমিকা’ শীর্ষক কর্মশালায় তিনি একথা বলেন।

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘আমরা আশা করব এটি (গ্রেফতার) হবে না। আমরা বারবার সরকারকে এটা জানাব, যদি তাদের গ্রেফতার করতে হয় ছয় মাস আগেই করেন। আর যদি করতে হয় তো নির্বাচনের পরে। নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করা উচিত হবে না।’

কর্মশালায় বক্তারা ভোটকেন্দ্রে পোলিং এজেন্ট নিশ্চিত করা ও তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনে জোর দিয়েছেন। একই সঙ্গে নির্বাচন কর্মকর্তাদের নিরপেক্ষ দায়িত্ব পালনেরও তাগিদ দিয়েছেন তারা।

পোলিং এজেন্ট প্রসঙ্গে সিইসি আউয়াল বলেন, ‘আপনারা প্রায়ই বলেন এজেন্টদের নামতে দেবে না, কারণ পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে ফেলবে। তাদেরকে শক্তিশালী কর্তৃপক্ষ মারধর করতে পারে, নানা কারণ থাকতে পারে। এই বক্তব্য শুনেছি যে সাধারণত ভোটের দিন সকাল পর্যন্ত পোলিং এজেন্টদের নামটা খুবই গোপন রাখা হয়। যাতে তারা নিরাপদে ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত হতে পারেন। এটা আমাদের মাথায় আছে।’

তিনি বলেন, ‘অনেক সময় দেখি ১০০ জনের জায়গায় ১৫০ জন পোলিং এজেন্টের নাম দেয়। পরে যদি আমরা দেখি ভোটের আগে ১৫০ জন গ্রেফতার হয়ে গেছেন। তখন আমাদের একটা নেগেটিভ ইমপ্রেশন নিতে হবে কেন তারা এক মাস আগে গ্রেফতার হলেন না, কেন তারা দুই মাস আগে গ্রেফতার হলেন না। ভোটের আগের দিন সবাই উধাও হয়ে গেল কেন?’

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘আমরা সৎভাবে ভোট করতে চাচ্ছি। কোনো দলের পক্ষপাতিত্ব করতে আমরা দায়িত্ব গ্রহণ করিনি। সেজন্য একটা তালিকা যদি আগে দেওয়া হয়, এরপর থেকে যদি পটাপট গ্রেফতার হতে থাকে। দেখা গেল ১০ জন বাকি আছে ১৪০ জনই গ্রেফতার হয়ে গেল। একটা বিষয় মিন করে যে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে বিশেষ একটা উদ্দেশে।’

সিইসি বলেন, ‘তবে আমরা আশা করব, এই ক্ষেত্র কখনোই হবে না। আমরা সরকারকে এটা জানাব যদি তাদেরকে গ্রেফতার করতে হয় ছয় মাস আগেই সবাইকে গ্রেফতার করে ফেলেন। আর যদি না করেন তবে নির্বাচনের পরে গ্রেফতার করে ফেলেন। নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা ঠিক হবে না। এতে আমরা কলঙ্কিত হব বলে মনে করি।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের দায়িত্ব কিন্তু অনেক কমে যাবে যদি নির্বাচনগুলো প্রতিযোগিতামূলক হয়। কেউ শব্দটা ব্যবহার করছেন পারটিসিপেটরি, কেউ ব্যবহার করছেন ইনক্লুসিভ। পারটিসিপেটরি ও ইনক্লুসিভের অর্থ কী- এটি নিয়ে আমি কনফিউশনে পড়েছি। পারটিসিপেটরি বলতে আমি যেটা বুঝেছি- ব্যাপক ভোটার যদি এসে ভোটদান করে, কে এলো কে এলো না, আমরা সেটা নিয়ে মাথা ঘামাব না। আমার জেনুইন টার্নআউট হয়েছে ৭০ শতাংশ। তারপরে যদি কনটেস্টেটেড হয়, তাহলে কনটেস্টের ক্ষেত্রে আমাদের অল্পকিছু রেফারির ভূমিকা থাকবে।’

হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘কনটেস্টটা হবে পার্টিদের মধ্যে। ওরাই ওদের অবস্থান সুদৃঢ় রাখবে। সেই ক্ষেত্রে আমরা বিশ্বাস করি, ইফেকটিভ কনটেস্ট হলে ভোটকেন্দ্রের ভেতরে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভারসাম্য সৃষ্টি হয়ে যায়। আমাদের দায়িত্বটা সেই ক্ষেত্রে অনেকটা কমে আসে। সেই জন্য আমরা ইনক্লুসিভ নির্বাচন লাইক করি, এটা আমাদের দায়িত্ব না কাউকে নিয়ে আসা। তবুও আমরা আমাদের নৈতিক অবস্থান থেকে অনেকবার দাওয়াত করেছি আসুন, আমাদের সঙ্গে চা খান। ডিও লেটার পর্যন্ত লিখেছি, এর বেশি আমরা আর কিছু করতে পারছি না।’

তিনি বলেন, আমাদের দেশে যদি এক শতাংশ ভোট পড়ে, ৯৯ শতাংশ না পড়ে তবুও ওই নির্বাচন আইনগতভাবে সঠিক। তবে প্রশ্ন উঠতে পারে ওই নির্বাচনের বৈধতা নিয়ে, কিন্তু আইনগতভাবে ঠিক কিনা- সে প্রশ্ন আসবে না।

সিইসি আরও বলেন, ‘আমরা লেজিটিমেসি (বৈধতা) নিয়ে মাথা ঘামাব না। আমরা দেখব ভোটটা অবাধ, নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ হয়েছে কিনা। এক শতাংশ লোক মাত্র ভোট দিয়েছে। তারপরও যদি দেখি ভোটার যারা এসেছিলেন, তাদেরকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়নি, ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়েছে এবং তারা নির্বিঘ্নে, স্বাধীনভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন।’

সিইসির সভাপতিত্বে কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ, গণমাধ্যম ব্যক্তিসহ বিশিষ্টজনেরা।

ভার্চুয়াল মাধ্যমে ৬৪ জেলায় নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিরা এই কর্মশালায় অংশ নিয়েছেন।

শেয়ারনিউজ, ০৪ অক্টোবর ২০২৩

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে