ঢাকা, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪
Sharenews24

নতুন আয়কর আইনে স্বনির্ধারণী রিটার্ন বাধ্যতামূলক

২০২৩ সেপ্টেম্বর ২৪ ১৭:২৬:১৫
নতুন আয়কর আইনে স্বনির্ধারণী রিটার্ন বাধ্যতামূলক

নিজস্ব প্রতিবেদক : আয়কর আইন ২০২৩ অনুযায়ী, আয়কর রিটার্ন স্ব-ফাইল করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হবে। আয়কর আইন-২০২৩ গত ২২ জুন রাষ্ট্রপতির অনুমোদন পেয়েছে। আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ বাতিল করা হয়েছে এবং একটি আধুনিক এবং সময়োপযোগী পদ্ধতিতে নতুন আইন প্রণয়ন করা হয়েছে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) পৃষ্ঠপোষকতায় নতুন আইন সম্পর্কে জানাতে অংশীজনদের সাথে গণশুনানি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এরপর রাজধানীর সেগুনবাগিচায় কর অঞ্চল-২-এর কর কমিশনারের কার্যালয়ে নতুন আইন নিয়ে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। যেখানে বিভিন্ন স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। নতুন আইনে কী কী পরিবর্তন আনা হয়েছে এবং আয়কর রিটার্ন দাখিল করার ক্ষেত্রে কী কী নতুন যোগ-বিয়োগ করা হবে তা বিশদভাবে তুলে ধরে।

নতুন আইনে স্বনির্ধারণী রিটার্ন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে জানিয়ে আয়কর কর্মকর্তারা জানান, যেখানে পূর্বের নিয়মে নরমাল রিটার্ন দাখিল করা যেত। ৩০ নভেম্বরের মধ্যে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হবে। এর ব্যত্যয় হলে করদাতা প্রত্যাশিত রিবেট পাবেন না এবং বিলম্ব মাশুলও গুণতে হবে। আয়কর দাতার রিটার্ন প্রস্তুত সহজলভ্য করতে ফি নির্ধারণ করে এজেন্সিকে দায়িত্ব দেওয়াসহ নতুন নীতিমালা করা হচ্ছে। নতুন আইন অনুযায়ী প্রত্যেক গণকর্মচারীকে রিটার্ন দিতে হবে।

বার্ষিক করযোগ্য আয় ৫ লাখ টাকার কম হলেই এক পাতার আয়কর বিবরণী জমা দিলেই হবে জানিয়ে আয়কর কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন বলেন, এ ছাড়া সম্পদের পরিমাণ ৪০ লাখ টাকার কম হতে হবে, এমন শর্তও রয়েছে। কম আয় ও সম্পদের এই করদাতাদের জন্য এক পাতার একটি ফরম প্রকাশ করেছে এনবিআর। কম আয়ের করদাতার রিটার্ন জমা সহজ করতেই এক পাতার রিটার্ন ফরম চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নতুন আইনের আলোকে এই পাতা সাজানো হয়েছে। এক পাতার ওই ফরমে সব মিলিয়ে ১৬ ধরনের তথ্য দিতে হবে।

এগুলো হলো নাম, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন), সার্কেল, কর অঞ্চল, কর বর্ষ, আবাসিক মর্যাদা, মোবাইল নম্বরসহ যোগাযোগের ঠিকানা, আয়ের উৎস, মোট পরিসম্পদ, মোট আয়, আরোপযোগ্য কর, কর রেয়াত, প্রদেয় কর, উৎসে কাটা করের পরিমাণ (যদি থাকে), এই রিটার্নের সঙ্গে প্রদত্ত কর, জীবনযাপন ব্যয়।

তিনি জানান, এক পাতার রিটার্ন ফরমের সুবিধা হলো এখানে কোনো খাত থেকে কত কর আয় হয়েছে, এর বিস্তারিত লিখতে হবে না। শুধু মোট আয়ের তথ্য দিলেই হবে। এভাবে মোট সম্পদ, জীবনযাত্রার খরচ, করের পরিমাণ- এসবের মোট পরিমাণ লিখলেই হবে। এক পাতায় রিটার্ন জমা দিতে হলে কিছু শর্তও দেওয়া হয়েছে। যেমন কোনো কোম্পানির শেয়ারহোল্ডার হওয়া যাবে না এবং মোটরগাড়ি থাকবে না।

এ ছাড়া সিটি করপোরেশন এলাকায় গৃহসম্পত্তি বা অ্যাপার্টমেন্টে বিনিয়োগ থাকলেও এক পাতার ফরম প্রযোজ্য হবে না। বিদেশে সম্পদ থাকলেও চলবে না বলেও জানান তিনি।

আয়কর কর্মকর্তারা বলেন, আয়কর রিটার্ন ফরমের জটিল হিসাব-নিকাশের কারণে অনেকে বার্ষিক রিটার্ন দিতে চান না। আগেও এক পাতার ফরম ছিল। তবে এবার নতুন আইনের আলোকে আরও সহজ করা হলো। এখন শুধু মোট আয় ও করের পরিমাণ লিখলেই হয়। এক পাতার রিটার্ন ফরমের পাশাপাশি এবার এক পাতার আয়কর বিবরণী জমার প্রাপ্তি স্বীকারপত্র বা প্রত্যয়নপত্র দেওয়া হবে। সেই প্রত্যয়নপত্রের অনুলিপিও প্রকাশ করেছে এনবিআর। এর আগে স্লিপের মতো প্রাপ্তি স্বীকারপত্র ছিল। রিটার্ন ফরমের একটি অংশ কেটে দেওয়া হতো।

বর্তমানে প্রায় ৯০ লাখ টিআইএনধারী আছেন। তাদের মধ্যে প্রতিবছর ৩০ লাখের মতো নিজেদের আয়-ব্যয়ের বিস্তারিত জানিয়ে রিটার্ন জমা দেন। নতুন আইনে অনেক কিছু সহজতর হওয়ায় রিটার্ন দাখিলের সংখ্যা বাড়বে বলে আশাপ্রকাশ করেন কর্মকর্তারা।

শেয়ারনিউজ, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩

পাঠকের মতামত:

অর্থনীতি এর সর্বশেষ খবর

অর্থনীতি - এর সব খবর



রে