ঢাকা, রবিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৫
Sharenews24

১১ বছরের শিশুর পেটে নয় মাসের বাচ্চা!

২০২৩ আগস্ট ২৫ ১৯:০৩:০৭
১১ বছরের শিশুর পেটে নয় মাসের বাচ্চা!

নিজস্ব প্রতিবেদক : নাটোরের গুরুদাসপুরের একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী (১১) ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। ঘটনাটি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে এলাকায়।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, গর্ভবতী শিশুটির বাবা-মা খালাতো ভাই-বোন। শিশুটির বয়স যখন ৩ বছর, তখন বাবা আরেকজনকে বিয়ে করে ঢাকায় থাকতেন। কিছুদিন পর মা অন্যত্র বিয়ে করে চলে যান। এরপর থেকে শিশুটি বিধবা দাদির কাছে থাকে। দাদি স্থানীয় চানাচুর কারখানায় কাজ করেন। সকালে গিয়ে রাতে বাসায় ফিরতেন। বাড়িতে কেউ না থাকায় সম্পর্কে নানা কালু খানের ছেলে জাহিদুল ইসলাম (৪৫) এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে থানায় মামলা হয়েছে।

শিশুটি জানায়, অনেক আগে থেকেই তাকে আদর করতেন জাহিদুল। বিভিন্ন কিছু কিনে দিতেন। প্রায়ই তার ভ্যানযোগে তাকে স্কুলে আনা-নেওয়া করতেন। ঘটনার দিন স্কুলে যাওয়ার জন্য গোসল করে বাড়ির ভেতর কাপড় পরিবর্তন করছিল সে। বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে ধর্ষক জাহিদুল ইসলাম বাড়ির ভেতর ঢুকে ঘরে গিয়ে কাপড় পরিবর্তন করতে বলে। ঘরে ঢুকতেই পেছন থেকে তাকে জাপটে ধরে মুখে গামছা পেঁচিয়ে ধর্ষণ করেন। বিষয়টি কাউকে জানালে মেরে ফেলার হুমকি দেন তিনি। ফলে ওই ঘটনা কাউকে বলতে সাহস পায়নি সে।

ঘটনার ৫ মাস পর শিশুটির শারীরিক পরিবর্তন দেখা যায়। জিজ্ঞেস করলে কোনো উত্তর দেয় না। একপর্যায়ে হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর গর্ভে সন্তান থাকার বিষয়টি জানতে পারেন তারা। এরপর স্থানীয় একটি ক্লিনিকে আল্ট্রাসনোগ্রাফি করে চিকিৎসক বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এখন পরিবারের সবাই চিন্তিত। বাচ্চার পেটে বাচ্চা। প্রসবের সময় শিশুটি মারা যাবে বলে আতঙ্কে রয়েছে পুরো পরিবার।

শিশুর দাদি জানান, মেয়েটির বাবা-মা দুজনই আলাদা বিয়ে করে অন্যত্র থাকেন। ছোটবেলা থেকেই সন্তানের দেখাশোনা করছেন তিনি। সে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। গর্ভধারণের কারণে দীর্ঘদিন ধরে স্কুলে যাওয়া ও পরীক্ষা দেওয়া বন্ধ রয়েছে। তিনি জানান, ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর গ্রাম্যসালিশে রফা করতে চেয়েছিলেন ধর্ষক জাহিদুল কিন্তু তা হয়নি। মামলা দায়ের হলেও আসামি গ্রেফতার হয়নি। এখন প্রতিবেশীদের কটুকথা শুনতে হচ্ছে তাদের।

অন্তঃসত্ত্বা ওই শিশুর নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে জানিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, আল্ট্রাসনোগ্রাফির রিপোর্ট অনুযায়ী আগামী ৮ সেপ্টেম্বর তার সন্তান প্রসবের ডেট রয়েছে। ছোট্ট মানুষ তাই নরমাল ডেলিভারি করানো সম্ভব নয়। ডেটের ৫-৭ দিন পূর্বেই সিজার করা হবে বলে তিনি জানান।

এ বিষয়ে গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শ্রাবণী রায় জানান, এমন দুঃখজনক ঘটনা গুরুদাসপুরে এই প্রথম। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অন্তঃসত্ত্বা শিশুটির দায়িত্ব নেওয়া হয়েছে। অফিসার ইনচার্জ ওসি মনোয়ারুজ্জামান বলেন, আসামি পলাতক থাকায় তাকে এখানো গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। তবে অভিযান অব্যাহত আছে।

শেয়ারনিউজ, ২৫ আগস্ট ২০২৩

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে