ঢাকা, মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর ২০২৫
Sharenews24

কেঅ্যান্ডকিউ শেয়ারে কারসাজির আলামত, তদন্তের নির্দেশ বিএসইসির

২০২৫ অক্টোবর ০৭ ২০:৪১:৫৮
কেঅ্যান্ডকিউ শেয়ারে কারসাজির আলামত, তদন্তের নির্দেশ বিএসইসির

নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কেঅ্যান্ডকিউ বাংলাদেশ লিমিটেডের শেয়ারে অস্বাভাবিক উত্থান ও লেনদেন খতিয়ে দেখতে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। সাম্প্রতিক সময়ে শেয়ারটির অস্বাভাবিক দরবৃদ্ধি ও লেনদেন নিয়ে বাজারে উদ্বেগ সৃষ্টি হওয়ায় বিএসইসি এমন নির্দেশনা দিয়েছে বলে জানা গেছে।

বিএসইসির সহকারী পরিচালক লামিয়া আক্তার স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)-কে কেঅ্যান্ডকিউ শেয়ারের অস্বাভাবিক লেনদেন ও মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে বিএসইসিতে জমা দিতেও ডিএসইকে বলা হয়েছে।

বাজারের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ১৫ জুন কেঅ্যান্ডকিউ’র শেয়ারের দাম ছিল ১৯০ টাকা ৭০ পয়সা। মাত্র তিন মাসের মধ্যে রবিবার (০৬ অক্টোবর) শেয়ারের দাম দুই বছরের সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছে ৪৫০ টাকা ৯০ পয়সা। আজ সোমবার (০৭ অক্টোবর) দর কিছুটা কমে ৪৪২ টাকা ৫০ পয়সায় অবস্থান করছে।

চিঠিতে বিএসইসি জানিয়েছে, এই অস্বাভাবিক গতিবিধি ‘সন্দেহজনক’ এবং এতে ‘কৃত্রিম চাহিদা’ সৃষ্টির ইঙ্গিত রয়েছে। সংস্থার মতে, এমন আচরণ বাজারের স্বচ্ছতা ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের আস্থাকে দুর্বল করে। ইতিমধ্যেই স্টক ডিলার, স্টক ব্রোকার ও অনুমোদিত প্রতিনিধিদের সতর্ক করা হয়েছে যেন কেউ ম্যানিপুলেটিভ লেনদেনে জড়িত না হয়।

বিএসইসি স্পষ্ট করেছে, এই ধরনের সন্দেহজনক লেনদেন গুরুতর বিধিভঙ্গ হিসেবে বিবেচিত হবে। এটি সিকিউরিটিজ আইনের দ্বিতীয় তফসিলের আচরণবিধি ৬ ও ৮ এবং সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ কমিশন (স্টক ডিলার, স্টক ব্রোকার ও অনুমোদিত প্রতিনিধি) বিধিমালা, ২০০০-এর বিধি ১১-এর লংঘন হিসেবে গণ্য হবে।

এ বিষয়ে বিএসইসির মুখপাত্র মোহাম্মদ আবুল কালাম শেয়ারনিউজকে বলেন তদন্ত করার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সাম্প্রতিককালে কেঅ্যান্ডকিউ-এর শেয়ারের লেনদেন ও দামে যে অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে, তা আমাদের নজর এড়ায়নি। সেজন্য কোম্পানিটির শেয়ারে কোনো কারসাজি হয়েছে কি না, তা খুঁজে বের করতে ডিএসইকে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।"

বিএসইসির মুখপাত্র আরও জানান, "কেঅ্যান্ডকিউ, জিকিউ বলপেনের মতো যেসব কোম্পানির লেনদেন ও দামে অস্বাভাবিক গতিবিধি দেখা যাচ্ছে, আমাদের সার্ভিল্যান্স টিম সেগুলোকে বিশেষ নজরে রাখেছে। এই তদন্তের মাধ্যমে আমরা স্পষ্ট করে দিতে চাই: কারসাজি করে এবার আর কেউ পার পাবে না।"

আইন ভঙ্গের এই কঠোর সতর্কবার্তার পর বাজার সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, এবার বিএসইসি দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নেবে, যা বিনিয়োগকারীর আস্থা ফিরিয়ে আনবে এবং পুরো শেয়ারবাজারের স্থিতিশীলতার জন্য ইতিবাচক সংকেত দেবে। শেয়ারবাজারে শৃঙ্খলা ফেরাতে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি এবার জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যদি বিএসইসি সময়মতো দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে পারে, তাহলে ভবিষ্যতে এ ধরনের কারসাজি এবং অস্বাভাবিক লেনদেনের প্রবণতা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসবে। ফলে বাজার হবে আরও স্বচ্ছ, বিশ্বাসযোগ্য ও সুরক্ষিত।

সালাউদ্দিন/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে