ঢাকা, বুধবার, ২৭ আগস্ট ২০২৫
Sharenews24

দুর্বল ব্যাংকে আমানত রেখে বিপদে সরকারি তিন প্রতিষ্ঠান

২০২৫ আগস্ট ২৭ ১০:২৬:২২
দুর্বল ব্যাংকে আমানত রেখে বিপদে সরকারি তিন প্রতিষ্ঠান

নিজস্ব প্রতিবেদক: আওয়ামী লীগঘনিষ্ঠ এস আলম গ্রুপ এবং দল-সমর্থিত কয়েকজন রাজনীতিবিদের নিয়ন্ত্রিত কয়েকটি দুর্বল বেসরকারি ব্যাংকে বিপুল পরিমাণ অর্থ রেখে আর্থিক ঝুঁকিতে পড়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত তিনটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান—বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি), পেট্রোবাংলা এবং রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)।

বিপিসির অর্থের অবস্থান

২০২৪ সালের জুন শেষে বিভিন্ন ব্যাংকে বিপিসির ২ হাজার ১৩২ কোটি টাকার স্বল্পমেয়াদি আমানত এবং চলতি হিসাবে ক্যাশ জমা রয়েছে ২৫ হাজার ২০৫ কোটি টাকা। সুদ বাবদ আয় হয়েছে ১ হাজার ৭৩৭ কোটি টাকা।

তবে ১১টি দুর্বল বেসরকারি ব্যাংকে বিপিসির ২ হাজার ১৯০ কোটি টাকা গচ্ছিত রয়েছে। সবচেয়ে বেশি—৭০১ কোটি টাকা রয়েছে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকে।

পেট্রোবাংলার আর্থিক চিত্র

২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত, পেট্রোবাংলার বিভিন্ন ব্যাংকে মেয়াদি আমানত রয়েছে ৩ হাজার ৪৭ কোটি টাকা এবং চলতি হিসাবে ক্যাশ জমা রয়েছে ৬ হাজার ৩৭৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৯১৬ কোটি টাকা আটকে আছে ১০টি দুর্বল ব্যাংকে। আইএফআইসি ব্যাংকে রয়েছে সবচেয়ে বেশি—৫৭০ কোটি টাকা।

ইপিবির আটকে থাকা টাকা

ইপিবির ১৭৯ কোটি ৭২ লাখ টাকার এফডিআর আটকে আছে ৯টি বেসরকারি ব্যাংক ও একটি সরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে। এর মধ্যে ৪৬ কোটি ৯৮ লাখ টাকা আটকে আছে ইউনিয়ন ব্যাংকের সাতটি শাখায়, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকে রয়েছে ৩৯ কোটি ৩২ লাখ টাকা এবং আইসিবিতে রয়েছে ৩১ কোটি টাকা।

ইপিবির তিনটি তহবিলে মোট ৫৯টি এককালীন স্থায়ী আমানত (এফডিআর) রয়েছে—রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো প্রশাসনিক তহবিল, রপ্তানি বাজার উন্নয়ন তহবিল ও ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার তহবিল।

পেট্রোবাংলার পরিচালক (অর্থ) একেএম মিজানুর রহমান বলেন, ‘‘যেসব ব্যাংকে পেট্রোবাংলার স্বল্পমেয়াদি আমানত রয়েছে, তার অনেকটাই ক্যাশ করা হয়েছে। যেসব ব্যাংকে তারল্য সংকট, সেখান থেকে অর্থ পেতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালানো হচ্ছে।’’

ইপিবির অর্থ ও হিসাব শাখার একজন কর্মকর্তা (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) বলেন, ‘‘দুর্বল ব্যাংকগুলো থেকে টাকা তোলার জন্য চাপ দেওয়া হলেও, কেউ কেউ শুধু ডিভিডেন্ড দিচ্ছে, আবার কেউ বলছে নবায়নের মেয়াদ শেষে টাকা ফেরত দেওয়া হবে। বেশির ভাগ ব্যাংকই আর্থিক সংকটের অজুহাত দিচ্ছে।’’

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান বলেন, ‘‘কোনো আমানতকারীর টাকা হারাবে না। কয়েকটি ব্যাংকের একীভূতকরণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রক্রিয়া শেষ হলে আমানতকারীরা টাকা ফেরত পাবেন। পদ্মা ব্যাংকের জন্য রোডম্যাপ তৈরি হয়েছে। ডিভিডেন্ডসহ আমানত ফেরত দিতে তারল্য সহায়তা চাওয়া হয়েছে। তবে ধৈর্য ধরতে হবে।’’

এই পরিস্থিতি বাংলাদেশের শেয়ার বাজার ও আর্থিক খাতের জন্য উদ্বেগজনক। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর ডিপোজিট যদি ফেরত না পাওয়া যায়, তবে এটি পুরো অর্থনৈতিক কাঠামোর ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

জাহিদ/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে