ঢাকা, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫
Sharenews24

গঙ্গা চুক্তি নিয়ে ভারতের কঠোর অবস্থান

২০২৫ জুন ২৮ ১৫:৩৪:১০
গঙ্গা চুক্তি নিয়ে ভারতের কঠোর অবস্থান

নিজস্ব প্রতিবেদক: ভারত গঙ্গা নদীর পানি বণ্টন চুক্তি পুনর্বিবেচনার ইঙ্গিত দেওয়ায় উদ্বেগ বাড়ছে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে। ১৯৯৬ সালে স্বাক্ষরিত ৩০ বছর মেয়াদি এই চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২০২৬ সালের ডিসেম্বরে। তার আগেই নয়াদিল্লির কঠোর অবস্থান দক্ষিণ এশিয়ায় পানিকেন্দ্রিক উত্তেজনার ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

ভারতের কৃষি মন্ত্রণালয় ও পানি উন্নয়ন সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, গত এক দশকে দেশটির উত্তরাঞ্চলে সেচের পানির চাহিদা বেড়েছে প্রায় ২০ শতাংশ। পাশাপাশি হুগলি নদীর নাব্যতা রক্ষা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটেও ফারাক্কা ব্যারেজে পানি আটকে রাখার যৌক্তিকতা দেখাচ্ছে ভারত।

সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু নদ চুক্তি স্থগিত করার বিষয়টিকে কেন্দ্র করে অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন, এখন ‘পানি’ ভারতের একটি কৌশলগত অস্ত্র। এর পরিপ্রেক্ষিতে গঙ্গা চুক্তির ভবিষ্যৎ নিয়েও উদ্বেগ বাড়ছে।

বাংলাদেশের জন্য গঙ্গার পানি শুষ্ক মৌসুমে একপ্রকার জীবনরেখা। দেশের ৮৫ শতাংশ পানির চাহিদা পূরণ হয় এই নদীর মাধ্যমে। ফারাক্কা ব্যারেজে পানিপ্রবাহ কমে গেলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কৃষি, পানি ব্যবস্থাপনা ও পরিবেশ চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

২০২১ সালে ইউনেস্কোর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ফারাক্কার প্রভাবে বাংলাদেশের খাদ্য উৎপাদন, মাছ ধরা ও নদীব্যবস্থা উল্লেখযোগ্যভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে।

বিশ্বব্যাংকের ২০২৪ সালের তথ্য অনুযায়ী, ভারতের জল সংরক্ষণের সক্ষমতা প্রায় ১৪০ মিলিয়ন হেক্টরজুড়ে বিস্তৃত। বিশ্লেষকদের মতে, ভারত যদি গঙ্গার পানি আরও বেশি পরিমাণে কৃষি ও শিল্পের জন্য সরিয়ে নেয়, তাহলে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল পাকিস্তানের মতো এক গভীর জলসংকটের মুখে পড়তে পারে—যেখানে নদী শুকিয়ে যায়, কৃষি ভেঙে পড়ে এবং জীবনযাত্রা হুমকির মুখে পড়ে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার করতে হবে। যৌথ নদী ব্যবস্থাপনা, আধুনিক সেচ প্রযুক্তি ও জল সংরক্ষণের যৌথ উদ্যোগ গড়ে তুলতে হবে। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতা গ্রহণ করাও হতে পারে একটি কার্যকর কৌশল।

গঙ্গা শুধু একটি নদী নয়, বরং এটি পুরো অঞ্চলের অস্তিত্বের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা একটি জীবনধারা। তাই বৈরিতার বদলে সহযোগিতার মনোভাবেই দীর্ঘমেয়াদি সমাধান খুঁজে বের করাই এখন সময়ের দাবি।

মুসআব/

পাঠকের মতামত:

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ খবর

আন্তর্জাতিক - এর সব খবর



রে