ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫
Sharenews24

নাগরিকত্বের ১৬০ বছরের নিয়ম ভাঙলেন ট্রাম্প

২০২৫ জুন ২৮ ১১:২৭:৫১
নাগরিকত্বের ১৬০ বছরের নিয়ম ভাঙলেন ট্রাম্প

নিজস্ব প্রতিবেদক: যুক্তরাষ্ট্রে জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিলের লক্ষ্য নিয়ে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জারি করা নির্বাহী আদেশ বাস্তবায়নের পথে বড় পদক্ষেপ এসেছে। শুক্রবার (২৭ জুন) যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট একটি গুরুত্বপূর্ণ রায় দিয়েছে, যা ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষে গেছে এবং প্রেসিডেন্টের নির্বাহী আদেশের ওপর নিম্ন আদালতের হস্তক্ষেপের ক্ষমতা সীমিত করেছে।

এর ফলে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিতর্কিত আদেশ—যা যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া শিশুদের স্বয়ংক্রিয় নাগরিকত্বের অধিকার হরণ করে—আংশিকভাবে কার্যকর হতে যাচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণমাত্র নাগরিকত্ব পাওয়ার অধিকার (birthright citizenship) ১৪তম সংশোধনী অনুসারে ১৮৬৮ সাল থেকে প্রচলিত। ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ এই শতবর্ষী নীতিকে চ্যালেঞ্জ করছে। প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরদিনই ট্রাম্প এই আদেশ জারি করেন।

হোয়াইট হাউজে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “এই রায় আমাদের জন্য বিশাল ও গৌরবময় জয়। এখন আমরা আমাদের অনেক নীতি নির্ভয়ে বাস্তবায়ন করতে পারব। আমি একটি বিশাল তালিকা প্রস্তুত রেখেছি।”

সুপ্রিম কোর্ট এই আদেশের বৈধতা নিয়ে চূড়ান্ত কোনো রায় দেয়নি, তবে নিম্ন আদালতগুলো দেশজুড়ে আদেশটি স্থগিত রাখতে পারবে না বলে জানিয়েছে। ফলে নির্দিষ্ট কিছু রাজ্যে এই আদেশ কার্যকর হতে যাচ্ছে।

কার্যকর রাজ্যগুলো: টেক্সাস, মিসিসিপি, আর্কানসাস, নর্থ ডাকোটা ইত্যাদি।

যেখানে কার্যকর নয়: ক্যালিফোর্নিয়া, নিউইয়র্ক, মেরিল্যান্ড, নর্থ ক্যারোলাইনা, ওয়াশিংটনসহ ২২টি রাজ্যে এখনও আদেশটি আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে।

আদালত আরও এক মাস সময় দিয়েছে নতুন আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য।

আইনজীবীরা এখন ক্লাস-অ্যাকশন মামলা প্রস্তুত করছেন, যেখানে বৃহৎ জনগোষ্ঠীকে অন্তর্ভুক্ত করে আদেশ চ্যালেঞ্জ করা যাবে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, এই আদেশ মূলত অভিবাসী পরিবার ও শিশুদের লক্ষ্যবস্তু করছে।

টিয়ানা মেইস, ডেমোক্রেসি ডিফেন্ডার্স ফান্ড-এর আইনি পরিচালক বলেন, “আমাদের সংবিধান জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব নিশ্চিত করে। আমরা এই অধিকারের জন্য আইনি লড়াই চালিয়ে যাব।”

যেসব দেশে পিতামাতার মাধ্যমে নাগরিকত্ব পাওয়া যায় না, সেইসব অবৈধ অভিবাসী পরিবারে জন্ম নেওয়া শিশুরা রাষ্ট্রহীন হয়ে পড়তে পারে। ফলে তারা পাসপোর্ট, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা বা সামাজিক সহায়তা থেকেও বঞ্চিত হতে পারে।

অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডি এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্ন এড়িয়ে গেলেও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকার শিশুকে আলাদাভাবে নয়, পিতামাতার অভিবাসন মর্যাদার ভিত্তিতে পুরো পরিবারকে বহিষ্কার করতে পারে।

এইচ-১বি বা স্টুডেন্ট ভিসাধারী পিতামাতার সন্তানরাও আর স্বয়ংক্রিয়ভাবে মার্কিন নাগরিক হবেন না। তারা হয়তো পিতামাতার ভিসার অধীনে অস্থায়ী অভিবাসী হিসেবে গণ্য হতে পারে, তবে নাগরিকত্বের অভাবে সরকারি সুবিধা পাওয়া কঠিন হবে।

ভবিষ্যতে যদি সুপ্রিম কোর্ট এই আদেশকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করে, তবে ততদিনে অনেক পরিবার দেশত্যাগে বাধ্য হবে, এবং শিশুরা গুরুত্বপূর্ণ সেবা থেকে বঞ্চিত হবে।

ক্রিস্টিনা রদ্রিগেজ, ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন প্রফেসর বলেন, “সরকারের সিদ্ধান্ত শুধু আইনগত নয়, মানবিকভাবেও গভীর প্রভাব ফেলবে।”

মুসআব/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ খবর

আন্তর্জাতিক - এর সব খবর



রে