ঢাকা, শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫
Sharenews24

জাতিসংঘে দ্বিতীয়বারের মতো কালো তালিকাভুক্ত ইসরায়েল

২০২৫ জুন ২০ ২৩:০৬:৩৯
জাতিসংঘে দ্বিতীয়বারের মতো কালো তালিকাভুক্ত ইসরায়েল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: জাতিসংঘের বার্ষিক প্রতিবেদন ‘চিলড্রেন ইন আর্মড কনফ্লিক্ট’ অনুসারে, শিশুদের ওপর গুরুতর সহিংসতার অভিযোগে টানা দ্বিতীয় বছরের মতো ইসরায়েলকে জাতিসংঘের ‘কালো তালিকায়’ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, প্রায় ২০ মাস ধরে গাজায় ইসরায়েলের নৃশংস হামলার মধ্যেই এই সিদ্ধান্ত এসেছে। এই তালিকায় সেসব দেশ বা সশস্ত্র গোষ্ঠীকে রাখা হয়, যারা সশস্ত্র সংঘাতে শিশুদের ওপর গুরুতর নির্যাতন চালায়।

জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে বিশ্বজুড়ে সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে শিশুদের ওপর সহিংসতা নজিরবিহীন মাত্রায় পৌঁছেছে, যা ২০২৩ সালের তুলনায় ২৫ শতাংশ বেশি। প্রতিবেদনে ১৮ বছরের কম বয়সী শিশুদের ওপর ৪১ হাজার ৩৭০টি গুরুতর সহিংসতার ঘটনা যাচাই করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে হত্যা, অঙ্গহানি, যৌন সহিংসতা এবং স্কুল ও হাসপাতালের ওপর হামলা।

বিশেষ করে, গাজা উপত্যকা ও অধিকৃত পশ্চিম তীরেই শিশুদের অধিকাংশ অধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে, যার জন্য মূলত ইসরায়েলি বাহিনীকে দায়ী করা হয়েছে। শুধু অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড ও ইসরায়েলে ২ হাজার ৯৫৯ শিশুর ওপর ৮ হাজার ৫৫৪টি গুরুতর সহিংসতার ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে ২ হাজার ৯৪৪ জন ফিলিস্তিনি শিশু এবং ১৫ জন ইসরায়েলি শিশু।

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গাজায় ১ হাজার ২৫৯ জন ফিলিস্তিনি শিশু নিহত হয়েছে এবং আরও ৯৪১ জন আহত হয়েছে। এই সহিংসতা ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের ইসরায়েল আক্রমণের পর শুরু হয় এবং তারপর থেকে গাজায় ইসরায়েল লাগাতার বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যা জাতিসংঘের প্রকাশিত সংখ্যার তুলনায় অনেক বেশি, এবং আরও ৪ হাজার ৪৭০ শিশুর নিহত হওয়ার তথ্য যাচাই করছে জাতিসংঘ।

অধিকৃত পশ্চিম তীর এবং পূর্ব জেরুজালেমেও সহিংসতার মাত্রা উদ্বেগজনক। সেখানে গত বছর ৯৭ জন ফিলিস্তিনি শিশু নিহত হয়েছে এবং ৩ হাজার ৬৮৮টি সহিংসতার ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে। প্রতিবেদনে লেবাননে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় পাঁচ শতাধিক শিশু নিহত বা আহত হওয়ার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।

জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্টনিও গুতেরেস শিশুদের ওপর এই মাত্রার সহিংসতায় গভীর মর্মাহত বলে জানান। তিনি ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে এবং শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আহ্বান জানান। বিশেষ করে জনবহুল এলাকায় বিস্ফোরক অস্ত্রের ব্যবহার সীমিত করা এবং স্কুল ও হাসপাতালের নিরাপত্তা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। এ বিষয়ে এখনো ইসরায়েলের জাতিসংঘ মিশনের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য আসেনি।

২০২৪ সালে গাজা ছাড়াও যেসব দেশে শিশুদের ওপর সবচেয়ে বেশি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে কঙ্গো প্রজাতন্ত্র (প্রায় ৪ হাজার), সোমালিয়া (প্রায় ২ হাজার ৫০০), নাইজেরিয়া (প্রায় ২ হাজার ৫০০) এবং হাইতি (প্রায় ২ হাজার ২০০)। শতকরা হারে সবচেয়ে বেশি সহিংসতা বেড়েছে লেবাননে (৫৪৫ শতাংশ), মোজাম্বিকে (৫২৫ শতাংশ), হাইতিতে (৪৯০ শতাংশ) এবং ইউক্রেনে (১০৫ শতাংশ)।

মিরাজ/

পাঠকের মতামত:

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ খবর

আন্তর্জাতিক - এর সব খবর



রে