ঢাকা, শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫
Sharenews24

যে চিঠি ফিলিস্তিনিদের জন্য মহাবিপর্যয় ডেকে এনেছে

২০২৫ এপ্রিল ১০ ০৯:২৩:১০
যে চিঠি ফিলিস্তিনিদের জন্য মহাবিপর্যয় ডেকে এনেছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের জনগণের মধ্যকার সংঘাত বিশ্বের অন্যতম দীর্ঘস্থায়ী এবং সহিংস সংঘাত। এর সূত্রপাত একশ' বছর আগে, যখন ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লর্ড আর্থার বালফোর ১৯১৭ সালে ফিলিস্তিনে ইহুদিদের জন্য একটি "জাতীয় আবাস" প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার করেন, যা "বালফোর ঘোষণাপত্র" হিসেবে পরিচিত। এই চিঠি ফিলিস্তিনিদের জন্য মহাবিপর্যয়ের দরজা খুলে দেয় এবং মধ্যপ্রাচ্যে আজও তার পরিণতি চলছে।

১৯১৭ সালের ২ নভেম্বর, বালফোর ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে ব্রিটেন ইহুদিদের জন্য ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে একটি জাতীয় আবাস প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার করে। ব্রিটেনের এই পদক্ষেপ ইহুদিদের জন্য এক আশার আলো হলেও, ফিলিস্তিনি আরবদের জন্য ছিল এক গভীর সংকট। তারা এই ঘোষণাকে নিজেদের জমি ও অধিকার হরণের চেষ্টা হিসেবে দেখেছিল এবং এর বিরুদ্ধে তারা প্রতিবাদ শুরু করে।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর অটোমান সাম্রাজ্যের পতনের পর, ফিলিস্তিন ব্রিটিশ ম্যান্ডেটে চলে আসে। ব্রিটেন এখানে ইহুদিদের জন্য আবাস প্রতিষ্ঠা করার ঘোষণা দিলে, আরবদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ে, কারণ তারা নিজ ভূমির অধিকার হারানোর আশঙ্কায় ছিল। তবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর, হলোকাস্টের ঘটনা ইহুদিদের জন্য একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবি আরো জোরালো করে তোলে।

১৯৪৭ সালে জাতিসংঘ ফিলিস্তিনকে দুটি রাষ্ট্রে ভাগ করার একটি পরিকল্পনা প্রস্তাব করে, কিন্তু আরব দেশগুলো এটি প্রত্যাখ্যান করে। ১৯৪৮ সালে, ব্রিটিশ শাসন শেষ হওয়ার পর, ইহুদি নেতারা স্বাধীন ইসরায়েল রাষ্ট্রের ঘোষণা দেন। এই ঘোষণার পর পরই ১৯৪৮ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধ শুরু হয়। এ যুদ্ধে ইসরায়েল জয়ী হয় এবং ফিলিস্তিনের বহু এলাকা তাদের দখলে চলে আসে। প্রায় সাড়ে সাত লাখ ফিলিস্তিনি বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যায়, যা ইতিহাসে "নাকবা" (বিপর্যয়) নামে পরিচিত।

১৯৬৭ সালের "ছয় দিনের যুদ্ধ"র মাধ্যমে ইসরায়েল গাজা, পশ্চিম তীর, গোলান মালভূমি এবং পূর্ব জেরুজালেম দখল করে নেয়। এই দখলদারি আজও টিকে রয়েছে এবং ফিলিস্তিনিদের ওপর দীর্ঘস্থায়ী শোষণ ও দমনমূলক শাসনের সৃষ্টি করেছে। গাজা, যা বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা, সেখানে ইসরায়েলি আগ্রাসন এবং হামাসের সঙ্গে সংঘাত আজও চলমান।

বর্তমানে ফিলিস্তিনিদের জন্য পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। গাজার বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরে দারিদ্র্য এবং উচ্চ বেকারত্বের মধ্যে জীবন যাপন করছেন। তাদের অধিকাংশই বৈদেশিক খাদ্য সহায়তার ওপর নির্ভরশীল। ইসরায়েলের সাথে তাদের যুদ্ধ এখনও চলমান, এবং তাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম অব্যাহত রয়েছে।

আরিফ/

পাঠকের মতামত:

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ খবর

আন্তর্জাতিক - এর সব খবর



রে