ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারি ২০২৫
Sharenews24

আযমীকে হত্যার জন্য শেখ হাসিনার নির্দেশ: এইচআরডব্লিউ রিপোর্ট

২০২৫ জানুয়ারি ২৯ ১০:৫৮:২৬
আযমীকে হত্যার জন্য শেখ হাসিনার নির্দেশ: এইচআরডব্লিউ রিপোর্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক: ২০১৬ সালের ২২ আগস্ট দিবাগত রাতে জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির প্রয়াত গোলাম আজমের মেজ ছেলে সেনাবাহিনীর সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহিল আমান আযমীকে রাজধানী ঢাকা থেকে সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় দিয়ে তুলে নেওয়া হয়। জামায়াতের পক্ষ থেকে দাবি করা হয় যে, আযমীকে আটক করা হয়, তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এই দাবিকে অস্বীকার করে।

আযমীকে আটকের পর তাকে সেনাবাহিনী থেকে বাধ্যতামূলক অব্যাহতি দেওয়া হয় আওয়ামী লীগ সরকারের নির্দেশে। তবে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে বারবার এই বিষয়টি সামনে আনা হলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। পরে, দীর্ঘ আট বছর পর ৭ আগস্ট আযমী বাড়ি ফিরেন, যখন শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান। এর ফলে, আযমীসহ অনেকেই মুক্তি পান।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, শেখ হাসিনা সরাসরি আযমীকে গুম-খুন করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এই সংস্থার রিপোর্টে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা আযমীর বন্দি হওয়ার এবং তার শারীরিক অবস্থার বিষয়ে অবগত ছিলেন এবং তার মুক্তির জন্য বারবার যে আবেদন করা হয়েছিল, তাও তিনি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। এক পর্যায়ে, শেখ হাসিনা আযমীকে হত্যার পরামর্শ দেন। তবে, এই বিষয়টি নিয়ে একজন সেনা কর্মকর্তার বক্তব্যে বলা হয়েছে যে, তিনি এই পরামর্শটি গ্রহণ করেননি, বরং আযমীর মুক্তির বিষয়টি আর আলোচনায় আনেননি।

এই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার শাসনামলে কমপক্ষে ৩,৫০০ মানুষের গুমের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনার জন্য একটি কেন্দ্রীয় কমান্ড কাঠামো কাজ করছিল, যার তত্ত্বাবধানে ছিলেন শেখ হাসিনা ও তার শীর্ষ কর্মকর্তারা। গুমের সঙ্গে জড়িত ছিলেন মেজর জেনারেল তারিক আহমেদ সিদ্দিক, মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান, পুলিশের সিনিয়র কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম, মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ সহ আরও অনেকে।

এইচআরডব্লিউ'র প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে যে, শেখ হাসিনার শাসনামলে বহুবার গুম ও হত্যাকাণ্ডের নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। এবং তার পালিয়ে যাওয়ার পর, আযমী, মীর আহমেদ বিন কাসেম (আরমান) এবং মাইকেল চাকমা মুক্তি পান, যারা সবাই অবৈধভাবে আটক ছিলেন এবং তাদের ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ কোনও তথ্য দেয়নি। মুক্তি পাওয়ার পর, তারা জানায় যে তারা নির্জন কারাগারে বন্দী ছিলেন এবং সেখানে অন্যান্য বন্দিদের কথাও শুনেছেন।

২০১৬ সালের আগস্টে, আযমী, আরমান এবং হুম্মাম কাদের চৌধুরীকে আটক করা হয়। তারা সকলেই বিরোধী দলের নেতার ছেলে, যাদের পিতার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সহযোগী হিসেবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার করা হয়েছিল। হুম্মাম কাদের চৌধুরী ২০১৭ সালের মার্চে মুক্তি পান, কিন্তু তাকে শর্ত দেওয়া হয় যে তিনি তার বেআইনি আটকের বিষয়ে চুপ থাকবেন।

কেএইচ/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে