ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪
Sharenews24

ন্যাশনাল টি কোম্পানির অনিয়ম খুঁজতে তদন্ত কমিটি গঠন

২০২৪ অক্টোবর ১৭ ২০:৩০:৩৬
ন্যাশনাল টি কোম্পানির অনিয়ম খুঁজতে তদন্ত কমিটি গঠন

নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ন্যাশনাল টি কোম্পানির বিভন্ন অনিয়ম পরীক্ষা করাসহ অন্যান্য বিষয় তদন্তের জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করেছে নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

একইসঙ্গে কোম্পানিটির মূলধন বাড়াতে চাঁদা উত্তোলনের সময় বৃদ্ধির আবেদন মঞ্জুর করা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) বিএসইসি’র নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ এর সভাপতিত্বে কমিশনের সভা কক্ষে অনুষ্ঠিত ৯২৬ তম কমিশন সভায় এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

বিএসইস সূত্রে জানা গেছে, শেয়ারবাজার ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে ন্যাশনাল টি কোম্পানি লিমিটেড (এনটিসি) এর বিগত ৫ বছরে সরকারি শেয়ারধারণ হ্রাসের কারণ, শেয়ার বিক্রয় বা হস্তান্তরের মাধ্যমে উক্ত কোম্পানির মূলধন কাঠামোর উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন, শেয়ারের চাঁদা গ্রহণের সময় বৃদ্ধির আবেদন, বিও হিসাবে শেয়ার ক্রেডিট করার কারণ, বিদ্যমান বর্তমান ঋণের দায় এবং গত তিন বছর ধরে ক্রমাগত লোকসানের কারণ, উক্ত কোম্পানির শেয়ার দরের উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের কারণ, মূলধন বৃদ্ধির সম্মতিপত্রে উল্লেখিত শর্তসমূহের পরিপালিত হয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করাসহ অন্যান্য বিষয়ে তদন্ত পরিচালনার জন্য বিএসইসি এ তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

তদন্ত কমিটিকে আগামী ৬০ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রক্রিয়া শেষ করে রিপোর্ট জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি।

এছাড়াও, কমিশনের সম্মতিপত্রে উল্লিখিত সরকারের শেয়ার ৫১ শতাংশ বৃদ্ধির শর্ত পরিপালন সাপেক্ষে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ন্যাশনাল টি কোম্পানি আবেদন মোতাবেক মূলধন বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রদত্ত সম্মতিপত্রের মেয়াদ (শেয়ারের চাঁদা গ্রহণের সময়সীমাসহ) ২০২৫ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়। একইসঙ্গে, সংগৃহীত চাঁদায় ক্ষেত্রে সরকারের শেয়ার ৫১ শতাংশ বৃদ্ধির শর্ত পরিপালিত না হলে কমিশনের পূর্বানুমোদন ছাড়া কোম্পানিটি উক্ত চাঁদা ব্যাবহার করতে পারবে না মর্মে সিদ্ধান্ত হয়।

প্রসঙ্গত, কোম্পানিটি মূলধন বাড়াতে প্লেসমেন্টের মাধ্যমে বিদ্যমান শেয়ারধারীদের মধ্যে নতুন ২ কোটি ৩৪ লাখ শেয়ার ইস্যুর সিদ্ধান্ত নেয়। গত বছরের এপ্রিল মাসে বিএসইসি বিষয়টি অনুমোদন করে। প্রতিটি শেয়ারের বিক্রয়মূল্য নির্ধারিত হয় ১১৯ টাকা ৫৩ পয়সা। ১০ টাকা অভিহিত মূল্য বা ফেসভ্যালুর সঙ্গে ১০৯ টাকা ৫৩ পয়সা অধিমূল্য বা প্রিমিয়ামসহ দাম নির্ধারণ করা হয়।

প্লেসমেন্টের মাধ্যমে বিদ্যমান শেয়ারধারীদের মধ্যে একটি সাধারণ শেয়ারের বিপরীতে প্রায় তিনটি নতুন শেয়ার ইস্যুর সিদ্ধান্ত হয়। পরিকল্পনা ছিল, নতুন এই শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে ২৮০ কোটি টাকা সংগ্রহ করা হবে।

নিয়ম অনুযায়ী, এনটিসির প্লেসমেন্ট শেয়ারের চাঁদা গ্রহণসহ যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করতে বেঁধে দেওয়া সময়সীমা ছিল ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত। এর মধ্যে গত ১৯ জুন থেকে ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলে চাঁদা গ্রহণের কার্যক্রম।

নির্ধারিত সময়ে ২৮০ কোটি টাকার বিপরীতে চাঁদা জমা পড়ে মাত্র ৫৪ কোটি টাকা, অর্থাৎ প্রত্যাশার মাত্র ১৯ শতাংশ। বাকি ৮১ শতাংশ শেয়ারধারী তাঁদের জন্য বরাদ্দ করা শেয়ারের জন্য চাঁদা জমা দেননি। এ কারণে কোম্পানির পর্ষদের পক্ষ থেকে মূলধন সংগ্রহ কার্যক্রমের সময় আগামী বছরের মার্চ পর্যন্ত বাড়ানোর জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে আবেদন করা হয়।

কমিশন এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানোর আগেই এবং প্লেসমেন্টের আনুষঙ্গিক কার্যক্রম শেষ ছাড়াই ১৯ শতাংশ আবেদনকারী চাঁদা জমা দিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে ২ অক্টোবর শেয়ার বণ্টন করে দেয় কোম্পানি কর্তৃপক্ষ। কোম্পানির পর্ষদের অনুমোদন ছাড়াই কয়েকজন কর্মকর্তা শেয়ার বণ্টনের এই সিদ্ধান্ত নেন। বিশেষ কিছু ব্যক্তিকে সুবিধা দেওয়ার জন্য যোগসাজশ করে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠে।

অন্যদিকে, নানা কারণে নির্ধারিত সময়ে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো শেয়ারের চাঁদা জমা দিতে না পারায় কোম্পানিটিতে সরকারের মালিকানা ৪১ শতাংশ থেকে ১৬ শতাংশে নেমে আসে। এ অবস্থায় কমিশন বিষয়টি খতিয়ে দেখার পাশাপাশি সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে শেয়ারের চাঁদা জমা দেওয়ার সুযোগ করে দিতে সময় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

মিজান/

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে