ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪
Sharenews24

দ্রুত বাইব্যাক আইন চালু করতে সাধারণ বিনিযোগকারীদের দাবি

২০২৪ সেপ্টেম্বর ২৮ ২৩:১১:২৮
দ্রুত বাইব্যাক আইন চালু করতে সাধারণ বিনিযোগকারীদের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক : শেয়ারবাজার ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে অতি দ্রুত বাইব্যাক আইন চালু করতে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা দাবি জানিয়েছেন।

আজ শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকালে সাড়ে ৪টায় রাজধানীর মতিঝিলে অবস্থিত সিটি সেন্টারের সামনে দুই শতাধিক সাধারণ বিনিয়োগকারী এক মানববন্ধনে এই দাবি জানায়।

মানববন্ধনে বিনিয়োগকারীরা বলেন, দেশের শেয়ারবাজারে বাইব্যাক আইন চালু করা হলে ইস্যু ম্যানেজার ও কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ গা ছাড়া ভাব দেখাতে পারবে না। বিনিয়োগকারীরা যাতে নিঃস্ব না হয় সেজন্য অতি দ্রুত নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে এই আইন চালু করতে অনুরোধ জানানো হয়।

বিনিয়োগকারীরা আরো বলেন, শেয়ারবাজার সংস্কারের আগেই তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানিই ডিলিস্টেড করা যাবে না। কোন কোম্পানি যদি বিনিযোগকারীদের সমস্ত বিনিয়োগ যথাযথভাবে প্রদান করে তালিকাচ্যুত হতে চায়, তাহলে সেটা করা যেতে পারে। এর বাইরে কোনভাবেই ডিলিস্টেড করা যাবে না। ডিলিস্টিংয়ে কেবল সাধারণ বিনিয়োগকারীরাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়, নিঃস্ব হয়।

মানববন্ধনে শেয়ারবাজারের উন্নয়ন এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে ১২ দফা তুলে ধরা হয়।

১। বাইব্যাক আইন চালু করতে হবে। এতে ইস্যু ম্যানেজার ও কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ গা ছাড়া ভাব দেখাতে পারবে না। মার্কেটের প্রতি তাদের একটা রেসপন্সিবিলিটি কাজ করবে। যা সাধারণ বিনিয়োগকারীকে নিঃস্ব না হতে ভূমিকা রাখবে। বিনিয়োগেরও সাধারণ বিনিয়োগকারীর আস্থা থাকবে।

২। ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাক্ট পরিপালন করতে হবে। লিস্টেড কোম্পানির একাধিক ব্যাংক একাউন্ট থাকা যাবে না এবং সব কোম্পানিকে ফাইন্যান্সিয়াল হিসাব রাখার জন্য একটাই হোমোজেনাস সফটওয়্যার ব্যবহার করতে হবে সেখানে বিএসইসি, ডিএসই, সিএসই, এনবিআর ও বাংলাদেশ ব্যাংকের এক্সেস থাকবে। কোথাও কোন অনিয়ম পরিলক্ষিত হলে সঙ্গে সঙ্গে অডিটের আওতায় আনতে হবে। এতে সকল প্রকার চুরি বন্ধ হয়ে যাবে, বিনিয়োগকারীরা লাভবান হবে।

৩। মিউচ্যুয়ার ফান্ডগুলোকে মার্কেট সাপোর্টের জন্য সময়োপযোগী করে দক্ষ ফান্ড ম্যানেজার নিয়োগ করতে হবে। জুড়ারিদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে অতি উচ্চ মূল্যে যাতে কোন শেয়ার কিনে পার্কিং করতে না পারে সে বিষয়ে পরিপত্র জারি করতে হবে। মিউচ্যুয়াল ফান্ড সঠিকভাবে কাজ না করলে কোন দেশে কোন শেয়ারবাজার কখনো গতিশীলতা পায় না। আমাদের মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলো মুখ থুবড়ে পড়ে আছে যা মার্কেটের জন্য একটা প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে।

৪। আইসিবি কোন শেয়ার ১০ শতাংশ বেড়ে যাওয়ার পরে বাই করতে পারবে না। জুড়ারীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে অতি উচ্চ মূল্যে কোন শেয়ার পার্কিং করতে পারবে না। এখানে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে এবং প্রত্যেকটা লেনদেন পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। মার্কেট সাপোর্টিং ফান্ড যেন কেউ ব্যক্তিগত স্বার্থ উদ্ধারে ব্যবহার করতে না পারে সেদিকে নজরদারি বাড়াতে হবে।

৫। মার্কেট যখন একটু বাড়ার পরে কারেকশনে গেলে ১০ শতাংশের নিচে কারেকশন হলে ইনস্টিটিউশন মিউচ্যুয়াল ফান্ড আইসিবি এদের প্রতিদিনের সেল ভ্যালু বাই ভ্যালুর উপরে যাবে না এটা আইন করতে হবে কারণ মার্কেট যখন পড়তে থাকে এরা আরো বেশি সেল প্রেশার ক্রিয়েট করে মার্কেটকে ধ্বংস করে দেয়। মার্জিন লোন নিয়ে যারা ব্যবসা করেন তারা ফোর্সড সেলে পড়ে যান। দিনশেষে নিঃস্ব হয়ে বাড়ি ফেরেন।

৬। বারবার কোনে শেয়ারের তদন্তের চেয়ে সফটওয়্যারকে ডেভলপ করতে হবে যাতে কেউ সিরিয়াল ট্রেড করতে না পারে। সিরিয়াল ট্রেড ধরা পড়লে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ওই কোড ১০ কর্মদিবসের জন্য ফ্রিজ হয়ে যাবে এভাবে পরপর দুবার যদি ওই কোড ফ্রিজ হয়, তাহলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ওই কোড ছয় মাসের জন্য ফ্রিজ হয়ে যাবে। শেয়ার কেনাবেচা করা যাবে না। প্রচলিত শিশুসুলব তদন্ত তদন্ত খেলা বন্ধ করতে হবে। এই ধরনের তদন্ত কখনোই মার্কেটের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনে না। এতে সব সময় সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

৭। বাজারে ন্যুনতম পাঁচটা এফটিএফ ফান্ড চালু করতে হবে। এফটিএফ ফান্ডগুলোতে শর্ট সেলের সুবিধা রাখতে হবে। শর্ট সেল চালু থাকলে অকারণে কেউ কোন শেয়ারকে অনেক নিচে নামাতে পারবে না। যা সাধারণ বিনিয়োগকারীর পুঁজিকে নিরাপত্তা দেবে।

৮। কোন শেয়ারের কোন ক্যাটাগরি থাকবে না। কারণ এই ক্যাটাগরি পরিবর্তন ট্রেড ও মার্কেটকে ভোলাটাইল করে সাধারণ বিনিয়োগকারী ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়। যারা ডিভিডেন্ড দিতে সক্ষম হবে না, সেই কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদকে কোম্পানি সকল সুবিধা থেকে বিরত রাখতে হবে। তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

৯। ফরেন ইনস্টিটিউটগুলোকে আমাদের মার্কেটের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে হবে। যেমন আমরা দেখতে পাই ইন্ডিয়ার মার্কেটগুলোতে তাদের উপস্থিতি আছে। মার্কেট যখন পড়তে থাকে এরা ফেয়ার ভ্যালুর কাছাকাছি কোন শেয়ার আসলেই বাই করতে থাকে। যার ফলে সহজেই কোন শেয়ারকে অনেক বেশি ফেলে কেউ বিনিয়োগকারীদের ক্ষতি করতে পারে না।

১০। যে শেয়ারগুলো অনেক উপর থেকে নিচে পড়তে থাকবে, সে শেয়ারগুলোতেই কোয়ারি দিতে হবে। দাম বাড়ার পরে কোন শেয়ারের কোন কোয়ারি দেওয়া যাবে না। এখানে কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব হবে অযৌক্তিকভাবে কোন শেয়ারকে যেন অতিমূল্যায়িত করতে না পারে তা শেয়ার এর মূল্য বৃদ্ধির সময়েই চিহ্নিত করে ব্যবস্থা করতে হবে। কোন শেয়ারকে অতি মূল্যায়িত করে ডিস্ট্রিবিউশন করার পর কোয়ারি দেওয়া এটা সাধারণ বিনিয়োগকারীর উপর রীতিমতো জুলুম ও অন্যায়। এই অন্যায় থেকে কর্তৃপক্ষকে বের হয়ে আসতে হবে।

১১। আমাদের বাজারে যে সকল মার্কেট মেকার আছেন তাদেরকে অকারণে বিরক্ত করা যাবে না। মার্কেট মেকাররা যাতে স্বচ্ছতা ও সততার সাথে মার্কেটে কাজ করতে পারে সেই পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। বেড়া ভেঙে গরু ক্ষেত খেয়ে গেছে, গরুর পিছে না ছুটে ক্ষেতের বেড়াকে শক্তিশালী করতে হবে। শেয়ার লেনদেনের সিস্টেমকে এমনভাবে উন্নত করতে হবে যাতে ইচ্ছা থাকলেও কোনভাবেই অনিয়ম করা না যায়। যত বেশি মার্কেট মেকার তৈরি করা যাবে, শেয়ারবাজার তত বেশি শক্তিশালী হবে, নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে এই সত্যটি অনুধাবন করতে হবে।

১২। সিডিবিএলকে শক্তিশালী করতে হবে। এখান থেকে কোন তথ্য যাতে পাচার হতে না পারে সেদিকে বিশেষ নজরদারি করতে হবে। এটার নিরাপত্তা বাড়াতে হবে। এখানে কারো কোন এক্সেস থাকবে না। কোম্পানির সকল ডিরেক্টর হোল্ডিং লক থাকবে ডিরেক্টরদের কোন শেয়ার আলাদা রাখা যাবে না। বিনা নোটিশে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া কোন শেয়ারই তারা বাজারে সেল করতে পারবে না।

মানববন্ধনে সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করেন-আশরাফুল ইসলাম (আরিনা সিকিউরিটিজ), মামুনুর রশিদ (জাহান সিকিউরিটিজ), রাশিদুল ইসলাম (বিডি সানলাইফ সিকিউরিটিজ), শরিফুল আলম (বিডি সানলাইফ সিকিউরিটিজ) এবং সবুজ আহমেদ (এনএলআই সিকিউরিটিজ)

এস/

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে