ঢাকা, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪
Sharenews24

ভ্যাট যন্ত্র বসানোর তথ্য গোপন জেনেক্সের

২০২৪ সেপ্টেম্বর ০৩ ১১:২১:৩০
ভ্যাট যন্ত্র বসানোর তথ্য গোপন জেনেক্সের

নিজস্ব প্রতিবেদক : ভ্যাট আদায় নিশ্চিত করতে ৬০ হাজার ইলেকট্রনিক্স ফিসক্যাল ডিভাইস (ইএফডি) বসানোর চুক্তি হলেও দুই বছরে ১৪ হাজার যন্ত্র স্থাপনের কথা জানিয়েছে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত জেনেক্স ইনফোসিস। তবে বাস্তবে কোম্পানিটি ১১ হাজার ৩১৩টি যন্ত্র স্থাপন করেছে। এতে করে ইডিএফ স্থানের তথ্য গোপন করেছে কোম্পানিটি।

জানা যায়, খুচরা পর্যায়ে ভ্যাট আদায় নিশ্চিত করতে জাহীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাথে ইলেকট্রনিক্স ফিসক্যাল ডিভাইস (ইএফডি) বসানোর জন্য জেনেক্স ইনফোসিসের চুক্তি হয়।

চুক্তিতে প্রথম ধাপে তিনটি জোনে ৬০ হাজার ইএফডি যন্ত্র বসানোর কথা থাকলেও কোম্পানিটি প্রায় দুই বছরে ১৪ হাজার যন্ত্র স্থাপনের কথা জানিয়েছে এনবিআরকে। বাস্তবে ১১ হাজার ৩১৩টি ইএফডি স্থাপনের প্রমাণ পেয়েছে এনবিআর। অর্থাৎ কম মেশিন সরবরাহ করে বেশি দেখানো হয়েছে। এ ছাড়া কিছু ক্ষেত্রে নির্ধারিত আকৃতির (কনফিগারেশন) বাইরে ইএফডি স্থাপন করারও প্রমাণ পেয়েছে এনবিআর। সংস্থাটির তদন্ত প্রতিবেদনে অনিয়মের এসব চিত্র উঠে এসেছে।

সূত্র জানায়, ২০২২ সালের নভেম্বরে এনবিআরের সঙ্গে ইএফডি বসাতে চুক্তিবদ্ধ হয় জেনেক্স ইনফোসিস লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটি প্রথম বছরে তিনটি জোনে ভাগ করে ২০ হাজার করে মোট ৬০ হাজার ইএফডি মেশিন বসানোর কথা। কিন্তু জেনেক্স ইনফোসিস লিমিটেড ১১ হাজার ৩১৩টি ইএফডি স্থাপন করে ১৪ হাজার ২৪৮টি মেশিন সরবরাহের তথ্য দিয়েছে এনবিআরকে। এ ছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কেন্দ্রীয়ভাবে ১৯৫টি এসডিসি (সেলস ডাটা কন্ট্রোলার) বসানোর দাবি করলেও তদন্ত কমিটি ৯৭টি এসডিসি যন্ত্র বসানোর প্রমাণ পেয়েছে। কেন্দ্রীয়ভাবে বসানো মেশিনেও মিথ্যা তথ্য দিয়েছে জেনেক্স ইনফোসিস। প্রতিষ্ঠানটির সিস্টেমে দেওয়া তথ্যের সঙ্গে ইএফডি বসানোর হিসাবে ব্যাপক গরমিল পেয়েছে এনবিআরের গঠিত তদন্ত কমিটি।

এ বিষয়ে জা জেনেক্স ইনফোসিসের করপোরেট ও রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্সের প্রধান আবু জাহিদ পরাগ বলেন, ইএফডি-সংক্রান্ত প্রতিবেদন সম্পর্কে এনবিআর থেকে এখনো আমাদের জানানো হয়নি। এনবিআর এই প্রকল্পে সফল অগ্রগতির জন্য বেশকিছু শর্ত বেঁধে দিয়েছে। আমরা বিষয়গুলো নিয়ে এনবিআরের সঙ্গে আলোচনা করছি।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, কোম্পানিটি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মাত্র ১৯ শতাংশ কাজ বাস্তবায়ন করেছে। এই হারে ইএফডি বসালে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন দুরূহ হবে বলেও মনে করে এনবিআরের তদন্ত কমিটি। ইএফডি যন্ত্রের সঙ্গে সার্ভার সংযোগ নিয়মিত রাখার ক্ষেত্রে নেটওয়ার্ক সমস্যা রয়েছে বলে তদন্তে উঠে এসেছে। যার কারণে যন্ত্র থেকে সিস্টেমে তথ্য শেয়ার হয় না। একই সঙ্গে বাধাগ্রস্ত হয় রিয়েল টাইমে (সঠিক সময়) কাজ করা। যেভাবে জেনেক্স ইনফোসিস কাজ করছে—এমনটা চললে এনবিআরের বর্ধিত সময়ে (চলতি বছরের জুন) ৬০ হাজার ইএফডি বসানোর সম্ভাবনা খুবই কম বলে জানিয়েছে তদন্ত কমিটি।

এদিকে এনবিআরের গঠিত আরেকটি টেকনিক্যাল কমিটিও ইএফডি সরবরাহের ক্ষেত্রে নানা ধরনের অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে। এই তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি।

জানতে চাইলে ইএফডি-সংক্রান্ত তদন্ত কমিটির এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ইএফডি সরবরাহ থেকে শুরু করে মনিটরিং পর্যায়ে জেনেক্সের নানা ধরনের গাফিলতি রয়েছে। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটি ইএফডি বসানো নিয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়েছে। আর চুক্তি অনুযায়ী, প্রশিক্ষণের কথা থাকলেও জেনেক্স তা মানেনি। কনফিগারেশন অনুযায়ী ইএফডি মেশিন সরবরাহ করেনি তারা।

এস/

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে