ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪
Sharenews24

নির্বাচনী বিতর্কে বাইডেন ও ট্রাম্প : একে অন্যকে যেভাবে ঘায়েল করার চেষ্টা করেছেন

২০২৪ জুন ২৮ ১১:২৬:৫৪
নির্বাচনী বিতর্কে বাইডেন ও ট্রাম্প : একে অন্যকে যেভাবে ঘায়েল করার চেষ্টা করেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের টেলিভিশন বিতর্কে দেখা গেছে দুই প্রধান প্রার্থী জো বাইডেন ও ডোনাল্ড ট্রাম্প একে অপরকে আক্রমণ ও পাল্টা আক্রমণ করেছেন।

আাগামী ৫ নভেম্বরের নির্বাচনকে সামনে রেখে চার বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো মুখোমুখি হয়েছেন তারা।

পররাষ্ট্রনীতি, অর্থনীতি, সীমান্ত ইস্যু, সামাজিক নিরাপত্তা, শিশু যত্ন, কংগ্রেসের ওপর হামলা এবং গর্ভপাতসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলার সময় বাইডেন ও ট্রাম্প একে অপরকে মিথ্যা বলার জন্য অভিযুক্ত করেছেন এবং একে অপরকে কঠোর ভাষায় আক্রমণ করার চেষ্টা করেছেন।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের অর্থনীতি, পররাষ্ট্র নীতির রেকর্ড এবং গণ অভিবাসন পরিচালনায় বাইডেনের কঠোর সমালোচনা করেন।

অন্যদিকে, আদালতে সম্প্রতি ট্রাম্পের সাজার প্রসঙ্গ তুলে ট্রাম্পকে ‘গণতন্ত্রের জন্য হুমকি’ বলে উল্লেখ করেছেন বাইডেন।

বিতর্কে ট্রাম্প এই বলে শেষ করেছেন, আমেরিকান জনগণ এখন নরকে বাস করছে। "আমরা সাড়ে তিন বছর ধরে নরকে বাস করছি"।

অন্যদিকে শেষ ভাষণে বাইডেন আমেরিকানদের জন্য একটি মূল বিষয়, মুদ্রাস্ফীতি কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং বলেছেন যে তিনি কর কমাতে চান। একইসঙ্গে ট্রাম্প কর বাড়াবেন বলেও দাবি করেন।

পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আক্রমণ করেছেন বাইডেন। অন্যদিকে ট্রাম্প্র বাইডেনের ছেলে হান্টার বিডেনের বন্দুক আইনে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার কথা তুলে ধরেন।

২০২০ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পর দ্বিতীয়বারের মতো বাইডেন এবং রিপাবলিকান ট্রাম্প একে অপরের মুখোমুখি হন।

বিতর্কে কথা বলার সময় বাইডেনের কণ্ঠ কর্কশ শোনাচ্ছিল। এই বিষয়ে তার প্রচার দল জানিয়েছে, গত কয়েকদিন ধরে তার ঠাণ্ডার কারণে তার কণ্ঠস্বর এমন শোনাচ্ছে।

কে জিতেছে বিতর্কে?

যুক্তরাষ্ট্রের বিবিসির স্পেশাল করেসপন্ডেন্ড কেইটি লিখেছেন, এবারের বিতর্কের ফরম্যাট ছিলো আমেরিকানদের জন্য তুলনামূলক ভালো।

তবে সঞ্চালকরা তথ্যের সত্যতা যাচাইয়ের চেষ্টা করেননি। এটা ছিলো বাইডেনের জন্য একটি খারাপ রাত।

বাইডেনের অনেক জবাবই পরিষ্কার ছিলো না। তাকে বয়স্ক মনে হচ্ছিলো। তবে বিতর্কের দ্বিতীয় ধাপ তার জন্য কিছুটা ভালো ছিলো এবং তিনি কিছুটা শক্তি পেয়েছিলেন।

বিতর্কে ডোনাল্ড ট্রাম্প জিতেছেন, এমনটা প্রাথমিকভাবে বলা যায়। কিন্তু এটা কী তাকে নির্বাচনে জিততে সহায়তা করবে?

সাবেক রিপাবলিকান কংগ্রেসওম্যান রোডনি ডেভিস বলেছেন, বিতর্কটি ছিলো ‘ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিষ্কার জয়’।

পর্যবেক্ষকরা কী বলছেন?

রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটদের যারা মনোযোগ দিয়ে বিতর্ক দেখেছেন তারা অনেকেই তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

সাবেক ডেমোক্র্যাট কংগ্রেসওম্যান স্টেফাইন মারফি বিবিসিকে বলেছেন, কিছু মূহুর্ত ছিলো যেখানে বাইডেন তার বয়স তুলে ধরেছেন।

কিন্তু অন্যদিকে তার মতে ডোনাল্ড ট্রাম্প কিছু মন্তব্য করেছেন যা ‘সত্যি নয়’ এবং এগুলো সত্যতা যাচাই করা উচিত। তিনি বলেন তার উদ্বেগের জায়গা হলো নির্বাচনের ফল গ্রহণ করবেন কি-না তা বলতে ডোনাল্ড ট্রাম্প অনীহা দেখিয়েছেন।

বিবিসির ম্যাডেলাইন হ্যালপার্টকে দেয়া সাক্ষাতকারে মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রফেসর কোরউইন স্মিডট বলেছেন, বাইডেন তার অনেক দুর্বলতা দেখিয়েছেন এবং খুব বেশি শক্তির জায়গা দেখাননি।

ভিজুয়াল, কণ্ঠ ও জবাব দেয়ার গতির কারণে তাকে অনুসরণ করাটা কঠিন ছিলো।

তিনি বলেন, “অনেক তথ্যভিত্তিক জবাব ও পয়েন্ট প্রেসিডেন্ট বাইডেন দিয়েছেন। কিন্তু বলার ধরণের কারণে সেগুলো দ্রুত হারিয়ে গেছে।”

তিনি বলেন, ‘ট্রাম্পের পারফরমেন্স থেকেও অনেকে বেশি শক্তির জায়গা পাওয়া যায়নি এবং তিনিও কিছু দুর্বলতার প্রদর্শন করেছেন।’

“প্রশ্নের জবাবে তার উত্তরগুলো দৃঢ় ছিলো না। কিন্তু উত্তরগুলো তার ভোটারদের কিছু উদ্বেগ ও ইস্যুকে স্পর্শ করে গেছে,” বলছিলেন প্রফেসর স্মিডট। “তার সমর্থকরা তাকে চার বছর আগের প্রার্থীর মতোই দেখতে চায়”।

ট্রাম্প নির্বাচনের ফল মানবেন?

বিতর্ক পরিচালনাকারী সিএনএন এর সঞ্চালক ট্রাম্পের কাছে দুবার জানতে চান যে নির্বাচনে যে-ই জিতুক তিনি ২০২৪ সালের নির্বাচনের ফল মানবেন কি-না।

জবাবে ট্রাম্প বলেন, “যদি এটি সুষ্ঠু, আইনগত ও ভালো নির্বাচন হয় তাহলে অবশ্যই মানবো”। একই সাথে তিনি ২০২০ সালের নির্বাচন নিয়ে তার বড় ধরণের কারচুপির অপ্রমাণিত দাবির পুনরাবৃত্তি করেন।

প্রার্থীদের বয়স প্রসঙ্গ

বাইডেনকে তার বয়স সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয় যে তিনি যখন দ্বিতীয় মেয়াদ শেষ করবেন তখন তার বয়স হবে ৮৬। তিনি হবেন সবচেয়ে বয়স্ক প্রেসিডেন্ট।

প্রেসিডেন্ট জবাবে বলেন, একসময় তিনি সবচেয়ে কমবয়সী আইন প্রণেতা বলে সমালোচনার শিকার হতেন এবং ট্রাম্প “তিন বছরের ছোট এবং অনেকটাই কম যোগ্য”।

বাইডেন বলেন, “রেকর্ড দেখুন। দেখুন তিনি যে ভয়ানক পরিস্থিতি রেখে গিয়েছিলেন সেখান থেকে কীভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছি।”

অন্যদিকে ট্রাম্পকে বলা হয় যে তার বয়স এখন ৭৮ এবং দ্বিতীয় মেয়াদ শেষে তা হবে ৮২ বছর।

জবাবে ট্রাম্প বলেন, তার স্বাস্থ্য ভালো এবং তিনি এই সময় গলফ খেলার প্রসঙ্গও টেনে আনেন।

এএসএম/

পাঠকের মতামত:

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ খবর

আন্তর্জাতিক - এর সব খবর



রে