ঢাকা, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪
Sharenews24

ঋণ বিতরণে শেয়ারবাজারের ৮ ব্যাংকের এডিআর সীমা লঙ্ঘন

২০২৩ আগস্ট ১০ ১২:০৮:৪৬
ঋণ বিতরণে শেয়ারবাজারের ৮ ব্যাংকের এডিআর সীমা লঙ্ঘন

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অমান্য করে আগ্রাসী ব্যাংকিং করছে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ৮ ব্যাংক। এর মধ্যে প্রচলিত ধারার ৩ ব্যাংক এবং ইসলামী ধারার ৫ ব্যাংক রয়েছে। ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত ঋণ-আমানত অনুপাত সীমা (এডিআর) অতিক্রম করে ঋণ বিতরণ করেছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ জারিকৃত প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, প্রচলিত ধারার ব্যাংক ১০০ টাকা আমানতের বিপরীতে ৮৭ টাকা এবং ইসলামী ধারার ব্যাংক ৯২ টাকা পর্যন্ত ঋণ দিতে পারে, যাকে ব্যাংকিং পরিভাষায় অ্যাডভান্স ডিপোজিট রেশিও (এডিআর) বা ঋণ-আমানত অনুপাত সীমা বলা হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এই বিষয়ে জানান, এর আগে নির্ধারিত আইনে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগ নিশ্চিত করতে টানা পাঁচবার এডিআর সমন্বয়ের সময়সীমা বাড়ানো হয়। অর্থাৎ ব্যাংকগুলোকে সুযোগ দেওয়া হয়। এর পরও অনেক ব্যাংক এটি সমন্বয় করতে পারেনি। পরবর্তী সময়ে করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সীমিত হয়ে পড়ে।

এমন পরিস্থিতিতে বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহে গতি আনার উদ্যোগ নেওয়া হয় এবং ব্যাংক খাতের সার্বিক তারল্য পরিস্থিতির উন্নয়নে বাংলাদেশ ব্যাংক এই এডিআর সীমা ২ শতাংশ বাড়িয়ে দেয়। তবে এই সুবিধা পাওয়ার পর অনেক ব্যাংক তা মেনে চলার চেষ্টা করলেও এখন পর্যন্ত ১১টি ব্যাংকের বিরুদ্ধে এডিআর নির্ধারিত সীমা লঙ্ঘনের তথ্য পেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। যার মধ্যে রয়েছে শেয়ারবাজারের ৮টি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত ৩০ জুন শেষে আইএফআইসি ব্যাংকের ৯০.২৯ শতাংশ, এবি ব্যাংকের ৯২.৩৫ শতাংশ, ইউনিয়ন ব্যাংকের ১০১.৮৭ শতাংশে, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ৯৩.২১ শতাংশ, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের ৯৯. ৫৩ শতাংশ, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ১০৮.৫৩ শতাংশ, প্রিমিয়ার ব্যাংকের ইসলামী উইন্ডোর ১২২.৮২ শতাংশ এবং পূবালী ব্যাংকের ইসলামী উইন্ডোর ৯৫.৮৯ শতাংশ

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অমান্য করে ঋণ বা বিনিয়োগের বিষয়টি ভালো চোখে দেখছেন না অর্থনীতিবিদ ও খাত-সংশ্লিষ্টরা। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম এই বিষয়ে বলেন, আমানতের চেয়ে ঋণ বেশি দিলে ব্যাংক ঝুঁকিতে থাকে। এমনিতেই ব্যাংকগুলোর ঋণ আদায়ের চিত্র খুব একটা সন্তোষজনক নয়।

তিনি বলেন, এমন অবস্থায় অতিরিক্ত ঋণ দিয়ে যদি খেলাপি আরও বেড়ে যায়, তাতে আমানতকারীদের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের আরও কঠোর হওয়া উচিত।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, ব্যাংকগুলোর এডিআর অনুপাত বিভিন্ন সময় ওঠা-নামা করে। কারণ, কোনো একটা ব্যাংকের যদি বড় একটা আমানত আসে, তাহলে তাদের ঋণ দেওয়ার ক্ষমতা বেড়ে যায়।

তিনি বলেন, একইভাবে হঠাৎ করে কোনো গ্রাহক আমানত তুলে নিলে, তখন ঋণ দেওয়ার ক্ষমতা কমে যায়। তখন ব্যাংক তার এডিআর সীমার বাইরে চলে যায়। এটা স্বাভাবিকভাবে হতে পারে। তবে দীর্ঘমেয়াদি এডিআর সীমার বাইরে কোনো ব্যাংক রয়েছে কি না সেটা এখন বাংলাদেশ ব্যাংক নিয়মিত তদারক করছে।

শেয়ারনিউজ, ১০ আগস্ট ২০২৩

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে