ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪
Sharenews24

২০২৩ সালে বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টিকারী ১০টি ঘটনা

২০২৩ ডিসেম্বর ৩১ ১৫:৫২:৩০
২০২৩ সালে বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টিকারী ১০টি ঘটনা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিশ্বজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলো ২০২৩ সালের অনেকগুলো ঘটনা। কিছু ঘটনার প্রভাব পড়েছিল বিশ্বের অন্যান্য দেশেও। এরকম ১০ টি বিষয় এ প্রতিবেদনে তুলে ধরা হলো।

১. গাজা-ইসরাইল যুদ্ধ: আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ২০২৩ সালের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা বলা যায় ইসরাইলে হামাসের হামলা এবং এরপর গাজায় ইসরাইলের পাল্টা আক্রমণের ঘটনা। ৭ই অক্টোবর ইসরাইলে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় হামলা চালায় হামাস। রকেটের পর রকেট হামলা ছাড়াও হামাস যোদ্ধারা শক্তিশালী সীমানা প্রাচীর ভেঙ্গে ইসরাইলের ভেতরে ঢুকে পড়ে। ইসরাইলের ১২০০ জন নিহত হয়, ২৪০ জনকে জিম্মি করা হয়।

প্রশ্ন ওঠে ইসরাইলের সুনিপুণ নিরাপত্তাব্যবস্থা ও গোয়েন্দা তৎপরতা নিয়ে। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু শুরু করেন তার নিজের ভাষায় ‘ভয়ংকর প্রতিশোধ।’ এরপর গাজায় পাল্টা হামলা করতে শুরু করে ইসরাইল। পরের তিনমাস জুড়ে ইসরাইল গাজায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।

গাজার হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এসব হামলায় এখন পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা ২১ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। মাঝে এক সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি হয়। হামাসের হাতে বন্দি ১১০ জনকে মুক্তি দেয়া হয়। ইসরাইলে বন্দী ২৪০ জন ফিলিস্তিনিকেও মুক্তি দেয়া হয়। কিন্তু এর এরপর আবারও হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল।

গাজায় ১৯ লাখ বা প্রায় ৮৫ শতাংশ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে জানাচ্ছে জাতিসংঘ। ফিলিস্তিনিরা এটিকে আরেক ‘নাকবা’ বা মহাবিপর্যয়ের সাথে তুলনা করছে। যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলকে জোরালো সমর্থন জানালেও ব্যাপক সংখ্যক বেসামরিক নাগরিক মৃত্যুতে অস্বস্তি সৃষ্টি হয়েছে সেদিকেও। ওদিকে সউদী আরবের সাথে ইসরাইলের একটা সম্পর্ক তৈরি হওয়ার মতো পরিস্থিতি ভেস্তে যাওয়ায় এই হামলার পেছনে ইরানের সম্পৃক্ততার অভিযোগও ওঠে।

জাতিসংঘ, আরব বিশ্ব থেকে শুরু করে প্রায় সবাই সাধারণ জনগণের জানমালের ক্ষয়ক্ষতিতে নিন্দা জানিয়ে আসছে। গাজায় যুদ্ধবিরতির একটি প্রস্তাব সাধারণ পরিষদে পাস হলেও এখনো যুদ্ধ বন্ধ হয়নি।

২. ভূমিকম্প– তুরস্ক, সিরিয়া, মরক্কো: এবছর সংবাদের শিরোনামে বেশ কিছু ভূমিকম্পের ঘটনা উঠে এসেছে। এর মাঝে সবচেয়ে আলোচিত তুরস্ক-সিরিয়া এবং মরক্কোর ভূমিকম্পের ঘটনা। ৬ই ফেব্রুয়ারি সিরিয়া-তুরস্ক সীমান্তের কাছে প্রায় ১০০ কিলোমিটার ধরে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। যার কারণে ভবনগুলোতে মারাত্মক ক্ষতি হয়। তুরস্ক ও সিরিয়া মিলে মৃত্যু হয় ৫০,০০০ এর বেশি মানুষের, গৃহহীন হয় লাখো মানুষ।

বহু ভবন ধ্বসে মাটির সাথে মিশে যায় এ ভূমিকম্পে। যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ার জন্য বিষয়টি আরও বেশি কঠিন হয়ে যায় কারণ বিধ্বস্ত উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় অঞ্চলটি ছিল বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত যেটি ভূমিকম্পে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতার দিক দিয়ে পিছিয়ে ছিল দেশটি। পরবর্তীতে আরও বেশ কয়েকটি আফটারশক চলতে থাকে, যার মধ্যে দুটির মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ৮ ও ৫ দশমিক ৮।

আর মরক্কোতে ৬ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে ৮ই সেপ্টেম্বর রাতে। মৃত্যু হয় প্রায় ৩০০০ মানুষের। ক্ষতিগ্রস্তদের একটা বড় অংশ দুর্গম এলাকায় হওয়ায় উদ্ধারকাজ ও ত্রাণ পৌঁছাতে বাড়তি সমস্যার সৃষ্টি হয়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ মেদিনার বিভিন্ন অংশ এবং অন্যতম ঐতিহাসিক পর্যটন আকর্ষণ কুতুবিয়া মসজিদের মিনারও।

এর প্রায় একমাস পরে সাতই অক্টোবর আফগানিস্তানের হেরাত প্রদেশে ৬ দশমিক ৩ মাত্রার একটি ভূমিকম্প আঘাত করে, যাতে দুই হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়।

৩. ইউক্রেন যুদ্ধ: ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের এক বছর পূর্ণ হয়। তবে যুদ্ধের খবর ততদিনে কিছুটা পুরনোই হয়ে এসেছে বিশ্বজুড়ে। তবে বড় আলোচনা সৃষ্টি হয় জুন মাসে রাশিয়ার পক্ষে যুদ্ধ করা ভাড়াটে ওয়াগনার বাহিনীর বিদ্রোহের ঘটনায়।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র, ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোশিন রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর সমালোচনা আগে থেকেই করে আসছিলেন। কিন্তু রাশিয়ার ভেতরে সরাসরি বিদ্রোহকে ‘পিঠে ছুরিকাঘাত’ বলে বর্ণনা করেন মিঃ পুতিন। একটি সমঝোতার মধ্য দিয়ে মুখোমুখি অবস্থার অবসান হলেও এরপর থেকে যুদ্ধক্ষেত্রে আর দেখা যায়নি মিঃ প্রিগোশিনকে। মিঃ প্রিগোশিন প্রতিশোধের শিকার হতে পারেন বলে জুলাই মাসে উল্লেখ করে মার্কিন গুপ্তচর সংস্থা সিআইএ।

তবে তিনি আবারও খবরের শিরোনাম হন ২৪শে অগাস্ট, যখন তাকে বহনকারী বিমানটি দুর্ঘটনায় পড়ে তার মৃত্যু হয়। বিমান বিধ্বস্তের পেছনে ক্রেমলিনের হাত ছিল বলে অভিযোগ ওঠে, যদিও তা অস্বীকার করেছে রাশিয়া। তবে আগের বছরের ধারাবাহিকতায় ২০২৩ সালে ইউক্রেন যুদ্ধ সবচেয়ে বড় প্রভাব সৃষ্টি করেছে বিশ্বের অর্থনীতিতে। বিশ্ব বাণিজ্যের সাথে সাথে প্রায় বেশিরভাগ দেশের অর্থনীতিতে সৃষ্টি হয় বাড়তি চাপের।

পশ্চিমা মিত্ররা একসময় ইউক্রেনকে অকুণ্ঠ সমর্থন দিয়ে আসছিল, এবছর তারাও ইউক্রেনের যুদ্ধে জয়ের বিষয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করে। তবে ধুঁকতে থাকা ইউক্রেন যুদ্ধ যেন আরেকটি বড় ধাক্কা খায় হামাস-ইসরাইল যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে। নতুন এ যুদ্ধ সবার মনোযোগের কেন্দ্রে চলে আসে। ইউক্রেন যুদ্ধ এখনো চলছে, আরও কতদিন চলবে বা কীভাবে শেষ হবে তা এখনো অনিশ্চিত।

৪. টাইটানডুবি: টাইটানিকের ধ্বংসস্তূপ দেখতে ১৮ই জুন উত্তর আটলান্টিকের গভীর তলদেশে পাড়ি দিয়ে নিখোঁজ হন ৫ জন আরোহী। ওশেনগেট কোম্পানির টাইটান নামে ছোট সে ডুবোযানটি সাগরে ডুব দেয়ার এক ঘণ্টা ৪৫ মিনিট পরে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। বিপজ্জনক এবং ব্যয়বহুল এ অভিযানে ওশেনগেটের প্রধান নির্বাহীসহ যারা ছিলেন তারা প্রত্যেকেই ছিলেন অত্যন্ত ধনাঢ্য। গভীর সাগরের অন্ধকার ও আবহাওয়ার প্রতিকূলতার মধ্যে খোঁজ চলতে থাকে।

বিষয়টি গোটা বিশ্বে কৌতূহল ও প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। শেষ পর্যন্ত ধ্বংসাবশেষের চিহ্ন মেলে। জানা যায় সাগরে ডুব দেবার ৯০ মিনিট পর ১২,৫০০ ফুট নিচে পানির প্রচণ্ড চাপে টাইটান ধ্বংস হয়ে যায়। মানব দেহাবশেষের চিহ্নও মেলে সেখানে।

৫. ভারত-কানাডা দ্বন্দ্ব: কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়া প্রদেশের একটি শিখ মন্দিরের বাইরে ১৮ই জুন গুলি করে হত্যা করা হয় কানাডার শিখ নেতা হারদিপ সিং নিজ্জারকে। তবে এটি বড় ঘটনায় রূপ নেয় যখন এই হত্যার পেছনে ভারত সরকারের হাত থাকতে পারে বলে মন্তব্য করেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো।

১৮ই সেপ্টেম্বর কানাডার হাউজ অব কমন্সের সভায় মি. ট্রুডো বলেন, কানাডার গোয়েন্দা সংস্থা মি. নিজ্জারের হত্যার সাথে ভারত সরকারের সংশ্লিষ্টতার ‘বিশ্বাসযোগ্য’ প্রমাণ খুঁজে পেয়েছে। এর তীব্র প্রতিক্রিয়া হয় ভারতে। অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে ভারত এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে দাবি করে। একই সাথে ভারতের নিরাপত্তার প্রতি হুমকিস্বরুপ ‘খালিস্তানি সন্ত্রাসী ও চরমপন্থিদের’ আশ্রয় দেয়ার অভিযোগ তোলে কানাডার বিরুদ্ধে।

সম্পর্কের অবনতি ঘটে দুই দেশের মধ্যে। তবে ডিসেম্বর মাসে নতুন অভিযোগ আসে যুক্তরাষ্ট্রের তরফ থেকে।

স্বাধীন শিখ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ‘খালিস্তান আন্দোলনে’ থাকা মার্কিন নাগরিক গুরপতওয়ান্ত সিং পান্নুকে হত্যার ষড়যন্ত্র করার অভিযোগ আনা হয় দিল্লির বিরুদ্ধে। দিল্লি এটিও অস্বীকার করে, তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অভিযোগ তোলার পরে ভারতের দিক থেকে কিছুটা সংযমী বক্তব্য পাওয়ার কথা উল্লেখ করেন মিঃ ট্রুডো।

কানাডার সাথে টানাপোড়েন কেটে যাওয়ার মতো বিশেষ কিছু না ঘটলেও আমেরিকার সাথে সম্পর্কে কোনও প্রভাব পড়বে না বলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

৬. রেকর্ড তাপমাত্রা: ২০২৩ সালের জুলাই মাসে বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রার নতুন রেকর্ড তৈরি হয়েছে। ইউরোপীয় জলবায়ু পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র কোপার্নিকাসের হিসেব অনুযায়ী এ বছরের ৬ই জুলাই গড় বৈশ্বিক তাপমাত্রা ছিল ১৭ দশমিক ০৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ইতিহাসে এই প্রথম গড় বৈশ্বিক তাপমাত্রা ১৭ ডিগ্রির ওপর উঠেছে।

এবার তীব্র গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা পার করেছে ইউরোপ-আমেরিকার কিছু অঞ্চল যেখানে মানুষ শীতের সাথে বেশি অভ্যস্ত। ভয়াবহ দাবানলের ঘটনা ঘটেছে কানাডা, গ্রীস, চিলি, আমেরিকার হাওয়াইয়ের একটি দ্বীপে। ২০২৩ সালে বিশ্বব্যাপী গড় তাপমাত্রা উচ্চতম রেকর্ড ছুঁয়েছে যার একটা প্রধান কারণ ছিল ‘এল নিনো’ নামে প্রাকৃতিক আবহাওয়া চক্র।

অতি উত্তপ্ত এই বিশ্ব আগামী কয়েক বছরের মধ্যে তাপমাত্রা বৃদ্ধির সর্বোচ্চ সীমা ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিজ্ঞানীরা।

৭. সর্বোচ্চ জনসংখ্যা: এ বছর বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ হিসেবে চীনকে ছাড়িয়ে গেছে ভারত। উর্বরতার হার দুটি দেশেই কমছে, কিন্তু বলা হচ্ছে আগামী বছর থেকে চীনের জনসংখ্যা কমার সম্ভাবনা রয়েছে যেটা ভারতের ক্ষেত্রে লাগবে কয়েক দশক। জাতিসংঘ মনে করছে ২০৬৪ সালে সর্বোচ্চ হয়ে এরপর থেকে ক্রমে কমতে শুরু করবে ভারতের জনসংখ্যা।

জন্মহার কমাতে এক সন্তানের নীতিতে বেশ কড়াকড়ি করেছে চীন। দেরিতে বিয়ে উদ্বুদ্ধ করার মতো পদক্ষেপও ছিল। অন্যদিকে ভারতের স্বাধীনতার পরের ছয় দশকে ভারতের জনসংখ্যা তিনগুণেরও বেশি বেড়েছে। উভয় দেশের জনসংখ্যাই ১৪০ কোটির ওপরে এবং গত ৭০ বছর ধরে পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশেরও বেশি বাস করে এ দুটি দেশেই। এখন বলা হচ্ছে চীনের জনসংখ্যা ১৪১ কোটি, ভারতের ১৪২ কোটি।

৮. সৌদি-ইরান সম্পর্ক, আরব লীগে সিরিয়া: এ বছরের আলোচিত একটি ঘটনা ছিল মধ্যপ্রাচ্যের দুই বৈরি দেশ ইরান আর সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের এপ্রিল মাসে বৈঠকের ঘটনা যার মধ্যস্থতা করেছিল চীন। সাত বছর পর দুই দেশের উচ্চ পর্যায়ের মধ্যে বৈঠক হয় এবং দুই দেশ তাদের মধ্যে সম্পর্ক পুনরুদ্ধারে রাজি হয়। চীনের জন্য এটিকে একটি কূটনৈতিক বিজয় হিসেবে দেখা হয়।

আবার মে মাসে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের আরব লীগে পুনরায় যোগদানও ছিল আলোচিত বিষয়। ২০১১ সালে নৃশংস গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর দেশটিকে এই আঞ্চলিক ফোরাম থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল৷ তখন থেকে প্রেসিডেন্ট আসাদ ঐ অঞ্চলে একঘরে হয়ে ছিলেন।

তবে সৌদির জেদ্দায় আরব লীগের সম্মেলনে তিনি যেভাবে প্রবেশ করেন এবং সৌদি যুবরাজ যেভাবে তাকে বরণ করে নেন সেটি সিরিয়ার যুদ্ধে তার বিজয়ের এখনো পর্যন্ত সবচেয়ে বড় স্বীকৃতি হিসেবে দেখা হয়।

৯. রাজার অভিষেক: ২০২২ সালে ব্রিটেনের সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদী রাজশাসক রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুর পর রাজা হন তার ছেলে চার্লস। আর তাঁর অভিষেকের অনুষ্ঠান ছিল এ বছরের ৬ই মে। নানা আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে পালন করা হয় অভিষেক অনুষ্ঠান, আনুষ্ঠানিকভাবে রাজমুকুট পরানো হয় রাজা চার্লসকে। রাজার অভিষেকের কিছুক্ষণ পরই তাঁর স্ত্রী ক্যামিলার অভিষেক হয় রানি হিসেবে। ৭০ বছর পর এসব রীতির পুনরাবৃত্তি দেখলো বিশ্ব। যুক্তরাজ্য ছাড়াও আরও ১৪টি দেশে তাকে রাজা হিসেবে মান্য করা হয়।

১০. কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা: এবছরে প্রযুক্তির জগতে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় বলা যায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে। বিশেষত বছরের শুরু থেকেই চ্যাটজিপিটি ছিল বহুল আলোচিত এবং ব্যবহৃত অ্যাপ্লিকেশন। চ্যাটজিপিটি সাধারণত যে কোনও প্রশ্নের উত্তর লিখিতভাবে দেয়, চাইলে কোডিং, গান বা কবিতা লেখার কাজও করতে পারে।

তবে শুধু চ্যাটজিপিটি নয়, বিভিন্ন ক্ষেত্রে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সক্ষমতা বহুগুণ বেড়েছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রসার নিয়ে যেমন সম্ভাবনার দিক আছে, তেমন আছে ঝুঁকির দিকও। যেমন মানুষের জীবন-যাপন, কাজ-কর্ম সহজ করা বা নির্ভুলভাবে কাজ করানোর সম্ভাবনার জায়গা রয়েছে। তবে একই সাথে রয়েছে অনেক কাজ হারানোর ঝুঁকি বা অপব্যবহারের ঝুঁকি।

যেমন ডিপফেক প্রযুক্তি ব্যবহার একজনের ছবি যে কোনোভাবে অন্য কোনও ভিডিওতে বসিয়ে দেয়ার মত ঘটনা ঘটছে। বিশ্বের শীর্ষ কয়েকজন বিজ্ঞানী কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, এটি একসময় হয়তো মানব প্রজাতির জন্য একটি হুমকি হয়ে উঠতে পারে।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রসারের অনেক জায়গা রয়েছে সামনের বছরগুলিতে, সেই হিসেবে ২০২৩ সালকে এর উত্থানের গুরুত্বপূর্ণ বছর হিসেবে উল্লেখ করাই যায়।

শেয়ারনিউজ, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩

পাঠকের মতামত:

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ খবর

আন্তর্জাতিক - এর সব খবর



রে