ঢাকা, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪
Sharenews24

সর্বোচ্চ ডিভিডেন্ড সত্বেও জেমিনি ফুডের শেয়ারে বড় পতন!

২০২৩ নভেম্বর ০৪ ১২:২৩:০৩
সর্বোচ্চ ডিভিডেন্ড সত্বেও জেমিনি ফুডের শেয়ারে বড় পতন!

সর্বোচ্চ ডিভিডেন্ড সত্বেও জেমিনি ফুডের শেয়ারে বড় পতন

নিজস্ব প্রতিবেদক : সর্বোচ্চ ডিভিডেন্ড দেয়া সত্বেও বিনিয়োগকারীদের শেয়ারদর কমেছে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত জেমিনি সি ফুডের। গত ২৯ অক্টোবর উভয় স্টক এক্সচেঞ্জে কোম্পানিটির ডিভিডেন্ড ঘোষণা আসে। ওইদিন কোম্পানিটির শেয়ারদর ৮০৫ টাকা ১০ পয়সা থেকে কমে দাঁড়ায় ৭৫২ টাকা ৮০ পয়সায়। ডিডিভেন্ড ঘোষণা আসার দিন শেয়ারটির দাম কমেছে ৫২ টাকা ৩০ পয়সা বা ৬.৫০ শতাংশ। ডিএসই সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

কোম্পানিটি ৩০ জুন, ২০২৩ সমাপ্ত অর্থবছরে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ২০ শতাংশ ক্যাশ ও ১০০ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১৫ টাকা ৪৭ পয়সা। যা আগের বছর ছিল ৯ টাকা ৬১ পয়সা।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ডিভিডেন্ড ঘোষণা আসার আগের দিন শেয়ারটির ক্লোজিং প্রাইস ছিল ৮০৫ টাকা ১০ পয়সা। ডিভিডেন্ড ঘোষণা আসার দিন ২৯ অক্টোবর শেয়ারটির দাম সর্বোচ্চ ৯০০ টাকায় লেনদেন হয়। তারপর ক্রমাগত পড়তে থাকে। এক পর্যায়ে ৮০০ টাকার কাছাকাছি নেমে যায়। ওইদিন লেনদেন শেষে শেয়ারটি ৭৫২ টাকা ৮০ পয়সায় ক্লোজি হয়। বর্তমানে এই দরের আশেপাশেই লেনদেন হচ্ছে।

বিনিয়োগকারীরা বলছেন, কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ ৬ বছর পর এবার সর্বোচ্চ ডিভিডেন্ড এবং রেকর্ড মুনাফা ঘোষণা করেছে। ডিভিডেন্ড ও মুনাফা উল্লম্ফনের খবরে যেখানে শেয়ারটির দাম বাড়ার কথা ছিল, সেখানে উল্টো কমেছে। তার মানে ডিভিডেন্ড ও মুনাফার ঝলক দেখিয়ে বড় বিনিয়োগকারীরা শেয়ারটি বিক্রি করেছেন। আর সাধারণ বিনিয়োগকারীরা সেই শেয়ার চড়া দামে লুফে নিয়েছেন।

ডিভিডেন্ড ঘোষণা আসার দিন ডিএসইতে শেয়ারটি লেনদেন হয়েছে ৪ লাখ ৬৩ হাজার শেয়ার। পরের দিন ৩০ অক্টোবর লেনদেন হয়েছে ২ লাখ ৬৫ হাজার, ৩১ অক্টোবর ১ লাখ ২৭ হাজার, ০১ নভেম্বর ১ লাখ ৬৮ হাজার এবং ০২ নভেম্বর ১ লাখ ৪২ হাজার শেয়ার। এতে দেখা যায়, ডিভিডেন্ড ঘোষণা আসার দিন শেয়ারটির লেনদেন ছিল গত ৫ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। তার মানে ওইদিন বড় বিনিয়োগকারীরা বিশাল পরিমাণ শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ধরিয়ে দিয়েছেন।

তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৮ মে, ২০২৩ তারিখে শেয়ারটির দাম ৯২৫ টাকায় উঠেছিল। যা ছিল গত এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ। ওই সময় থেকেই শেয়ারটির ডিভিডেন্ডকে ঘিরে নানা রকম তথ্য বাজারে ছড়ানো হয়। ওই সময়ে কোম্পানিটির আকাশছোঁয়া মুনাফা নিয়ে ডিএসইর একটি তদন কমিটি গঠিত হয়।

তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, কোম্পানিটি মুনাফা ৫০ শতাংশের বেশি সমর্থনে কোনো ডকুমেন্ট দেখাতে পারেনি। এর প্রেক্ষিতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি কোম্পানিটির মুনাফা তথ্য চুড়ান্ত যাচাইয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। এমন অবস্থায় কোম্পানিটি আর্থিক প্রতিবেদন চুড়ান্ত করে ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। কিন্তু সর্বোচ্চ ডিভিডেন্ড ও মুনাফা ঘোষণার পর শেয়ারটির দাম যেখানে বাড়ার কথা ছিল, সেখানে পতনের মধ্যে রয়েছে। বিনিয়োগকারীরা অভিযোগ করছেন, সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে শেয়ারটি অফলোড করার জন্যই সর্বোচ্চ ডিভিডেন্ড ও মুনাফা ঘোষণা করা হয়েছে। যে কারণে ডিভিডেন্ড ঘোষণা আসার দিনই শেয়ারটির বড় পতন হয়েছে।

খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের ‘এ’ ক্যাটাগরির জেমিনি সি ফুড ১৯৮৫ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। কোম্পানিটির অনুমোদিত ও পরিশোধিত মূলধন যথাক্রমে- ৪০ কোটি ৬ কোটি ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকা। বর্তমানে কোম্পানিটির রিজার্ভের পরিমাণ ৫ লাখ টাকা।

কোম্পানিটির ৬১ লাখ ৫ হাজার ২০৬টি শেয়ারের মধ্যে ৩০.০১ শতাংশ উদ্যোক্তা পরিচালক, ১২.১৭ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী, ০.১৮ শতাংশ বিদেশি এবং ৫৭.৬৪ শতাংশ শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে।

শেয়ারনিউজ, ০৪ নভেম্বর ২০২৩

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে