ঢাকা, বুধবার, ২৭ আগস্ট ২০২৫
Sharenews24

বৈশ্বিক ঋণসংকটে বন্ধ হতে পারে অনেক কোম্পানি

২০২৩ অক্টোবর ০৮ ২৩:৪৭:১৮
বৈশ্বিক ঋণসংকটে বন্ধ হতে পারে অনেক কোম্পানি

নিজস্ব প্রতিবেদক : ২০২৪ সালের প্রথম ভাগে ৫০০ বিলিয়ন বা ৫০ হাজার কোটি ডলার পুনঃঅর্থায়নের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার কোম্পানিগুলো।

এর ফলে ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার ঋণনির্ভর অনেক কোম্পানি বন্ধ হয়ে যাওয়ার শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। যদিও নীতি-সুদহার প্রত্যাশিত চূড়ান্ত পর্যায়ে ওঠার কারণে কিছুটা স্বস্তি এসেছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, বহু দিন ইউরোপ ও আমেরিকায় সুদের হার ছিল খুবই কম। কিন্তু এখন সুদের হার বেড়ে যাওয়ায় কোম্পানিগুলোর পক্ষে অর্থ জোগাড় করা কঠিন হয়ে পড়েছে। ব্যাংকগুলোও কঠোর নিয়মকানুনের নিগড়ে পড়ে ঝুঁকির রাশ টানার চেষ্টা করছে।

আর্থিক খাত বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখন থেকে ২০২৫ সালের শেষভাগের মধ্যে যত ঋণ ও বন্ডের মেয়াদ শেষ হবে, তা অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। অর্থাৎ এই সময়ে বিপুল পরিমাণে ঋণ পরিশোধ করতে হবে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোকে।

ঋণ পুনর্গঠনবিষয়ক পরামর্শক কোম্পানি আলভারেজ অ্যান্ড মার্শালের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সামনে ঋণসংকট। ছোট ছোট যেসব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান নতুন বেসরকারি ঋণ খুঁজছে, তাদের সংখ্যা সারা বিশ্বেই বাড়বে।

যে সুদহারে ঋণ নিয়ে তারা ব্যবসা করতে পারে, সেই হারে ঋণ না পেলে অনেক কোম্পানি অসচ্ছল হয়ে যেত পারে। পরিণামে এসব কোম্পানির অনেক কর্মী ছাঁটাই হতে পারেন।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, ছোট ছোট ঋণনির্ভর কোম্পানিগুলোর জন্য ঋণের সুদহার বড় বিষয় হয়ে দাঁড়াচ্ছে। যারা স্বল্প সুদে ঋণ নিয়ে কোনো রকমে ঋণ পরিশোধ করতে পারত, সেই সুযোগ তারা আর পাচ্ছে না।

তাই এমন অনেক কোম্পানির পতনের সময় চলে এসেছে বলে মনে করছেন আর্থিক খাতেরবিশ্লেষকেরা।

এরই মধ্যে দুর্দশার চিহ্ন ফুটে উঠতে শুরু করেছে। যুক্তরাজ্যের অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিসটিকসের তথ্যানুসারে, ইংল্যান্ড ও ওয়েলস অঞ্চলে করপোরেট অসচ্ছলতার হার আগের বছরের চেয়ে ১৯ শতাংশ বেশি।

যুক্তরাজ্যের গবেষণাপ্রতিষ্ঠান বেগবিস ট্রেইনরের ত্রৈমাসিক রেড ফ্ল্যাগ প্রতিবেদন অনুসারে, চলতি বছরের এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে দেশটিতে ৪ লাখ ৩৮ হাজার ৭০২টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান আর্থিকভাবে বড় ধরনের চাপের মুখে ছিল, আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় যা ৮.৫০ শতাংশ বেশি।

ব্রিটেনের খুচরা বিক্রেতা উইলকো ছাড় দেয়ার জন্য বিখ্যাত। চলতি বছরের গ্রীষ্মকালে এই খুচরা বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান ধসে পড়েছে, যা এখন সরকারের নিয়ন্ত্রণে।

ফ্রান্সের ষষ্ঠ বৃহত্তম খুচরা প্রতিষ্ঠান ক্যাসিনো দেউলিয়াত্ব এড়াতে এই কেবল ঋণ পুনর্গঠনের আবেদন করেছে। রিজেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নিকোলা মারিনেল্লি রয়টার্সকে বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো যে আর নীতি সুদহার বৃদ্ধি করবে না, তা নয়। বরং তারা এখন কিছুটা বিশ্রাম নিচ্ছে।

নিকোলো মারিনেল্লি আরও বলেন, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো আশা করছিল যে নীতি-সুদহার বৃদ্ধির ধারা থামবে, কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। তাই এখন আর তাদের পক্ষে উচ্চ সুদহারের প্রভাব লুকিয়ে রাখা সম্ভব নয়।

ব্যাংক অব ইংল্যান্ড ইতিমধ্যে সতর্কতা জারি করেছে যে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণ খেলাপি হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে, যে আশঙ্কা তাদের মোটেও খাটো করে দেখা উচিত হবে না।

এ ছাড়া তারা বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে আরেকটি পরামর্শ দিয়েছে। সেটা হলো, যেসব ঝুঁকি বিশ্লেষণ মডেল খাতভিত্তিক বিশ্লেষণ করে থাকে, তাদের ওপর নির্ভর না করে কোম্পানিভিত্তিক বিশ্লেষণ করা।

২০০৯ সালের পর চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে সর্বোচ্চসংখ্যক কোম্পানি অসচ্ছল হয়ে গেছে। রয়টার্স জানিয়েছে, একটি বড় ব্যাংক প্রতি মাসে গড়ে ১০০টি ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠানের ঋণ পুনর্গঠনের আবেদন পাচ্ছে, দেড় বছর আগেও যা ছিল মাসে ১০টি।

শেয়ারনিউজ, ০৮ অক্টোবর ২০২৩

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

অর্থনীতি এর সর্বশেষ খবর

অর্থনীতি - এর সব খবর



রে