ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪
Sharenews24

কারসাজিতে উড়ছে মিরাকলের শেয়ার, দেখার যেন কেউ নেই!

২০২৩ সেপ্টেম্বর ১২ ১৭:৫৪:৪৩
কারসাজিতে উড়ছে মিরাকলের শেয়ার, দেখার যেন কেউ নেই!

নিজস্ব প্রতিবেদক: রিংশাইন টেক্সটাইল উৎপাদনে ফিরছে এবং মালিকানা পরিবর্তন হচ্ছে এমন খবর দিয়ে কোম্পানিটির শেয়ারদর বৃদ্ধি করা হয়েছিল। একইভাবে সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইলের ক্ষেত্রেও একই রকম ঘটনা ঘটেছে। আলিফ গ্রুপ কোম্পানিটির মালিকানা কিনে নিয়েছে। নতুন করে উৎপাদনে ফেরা কোম্পানিটির উদ্বোধন করেন স্বয় বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবায়েত উল ইসলাম।

কিন্তু উদ্বোধনের দিনই কোম্পানিটির উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকে প্রায় দেড় বছর পার হলেও এখনও কোম্পানিটির উৎপাদনে ফেরার কোন তথ্য জানে না বিনিয়োগকারীরা। কিন্তু এই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারদর দেড় টাকা থেকে বেড়ে ১২ টাকায় হয়েছে। অর্থাৎ কারসাজি চক্র নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য যত প্রকার প্রতারণা করা দরকার, তাই করেছে বিনিয়োগকারীদের সাথে।

ঠিক একইভাবে নতুন করে কাররসাজিতে মেতেছে মিরাকল ইন্ডাস্টিজ্রের শেয়ার নিয়ে। কোম্পানিটির মালিকনা পরিবর্তন ও উৎপাদনে ফেরার খবর দেওয়ার আগেই কোম্পানিটির শেয়ার দরে যেন আগুন লেগেছে। তারপর মালিকানা পরিবর্তন ও উৎপাদনে ফেরার ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে অপ্রতিরোধ্য গতিতে ছুটছে। প্রতিদিনই শেয়ারটি লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়াছে।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কোম্পানিটির শেয়ার নিয়ে যে কারসাজি হচ্ছে, তা খালি চোখেই দেখা যায়। কিন্তু নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি থাকার পর প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা কিছুই দেখতে পারছেন না। অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে কারসাজিকারীরা ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার কর্মকর্তারা একাকার হয়ে গেছেন। শেয়ারবাজারে কারসাজি দেখার মতো যেন কেউ নেই।

তারা বলছেন, কারসাজির অসুস্থ প্রতিযোগিতা শেয়ারবাজারকে আরও বেশি অস্থিতিশীল করে তুলছে। একেক বার একেক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার নিয়ে কারসাজি চালিয়েই যাচ্ছে বিভিন্ন চক্র। আর এই চক্রকে থামানোর মতো ভালো কোন পদক্ষেপও দেখা যায় না। আর পদক্ষেপ হিসেবে নিয়ন্ত্রক সংস্থা কিছু জরিমানা করলেও তা কারসাজি চক্রকে কারসাজিতে উৎসাহিতই করে। কারণ যে পরিমান অর্থ কারসাজি করে আয় করে, তা ১-২ শতাংশ জরিমানা দিয়ে যদি মাপ পাওয়া যায়, তাহলে সেই জরিমানা কারসাজি চক্রের জন্য আশীর্বাদ ছাড়া আর কিছুই না।

গত মে মাসে কোম্পানিটির শেয়ারদর যখন ২৪ টাকা ৪০ পয়সা থেকে বেড়ে ৩৩ টাকা ৭০ পয়সা হয়, তখন ডিএসই থেকে কোম্পানিটির শেয়ার নিয়ে সতর্কতা জানায়। সে সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছিল ৯ টাকা ৭০ পয়সা বা ৩৮ শতাংশের কিছু বেশি। ওই সময় কোম্পানিটির কর্তৃপক্ষ ডিএসইকে জানিয়েছিল, কোন কারণ ছাড়াই শেয়ারটির দর বৃদ্ধি পাচ্ছে।

কিন্ত এরপরই কোম্পানিটির কর্তৃপক্ষ মালিকানা পরিবর্তনের জন্য আগের মালিকের থেকে নতুন মালিকদের শেয়ার কেনার ঘোষণা দেয়। কিন্তু এই খবর আগে থেকেই বাজারে ছড়িয়ে পড়ে। যার কারণে কোম্পানিটির শেয়ারদর পরিকল্পিতভাবে বৃদ্ধি করে কারসাজি চক্র। অথচ জানতে চাইলে কোম্পানিটি ডিএসইকে জানায়, শেয়ারদর বৃদ্ধির মূল্য সংশোধনী কোনো তথ্য নেই।

তার কিছুদিন পরেই কোম্পানিটির কয়েকটি মূল্য সংশোধনী তথ্য ডিএসইর মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের জানানো হয়। কিন্তু সেই বিষয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বা ডিএসই এখন পর্যন্ত কোন প্রকার পদক্ষেপ নেয়নি।

যার কারণে আবারও নতুন করে কোম্পানিটির শেয়ার নিয়ে চলছে কারসাজি। আর সেই কারসাজির শেয়ার নিয়ে যেখানে আরও আগে থেকেই সতর্কবার্তা জানানো প্রয়োজন থাকলেও তা জানিয়েছে ৮১ শতাংশের বেশি শেয়ারদর বৃদ্ধির পর। তাহলে কি শুধু সতর্কবার্তা দিয়েই ডিএসই নিজেদের দায়মূক্ত রাখতে চায়? এমন প্রশ্ন বিনিয়োগকারীদের।

শেয়ারনিউজ, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে