ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪
Sharenews24

চীনের নতুন মানচিত্রে ভারতের অরুণাচল প্রদেশ ও আকসাই

২০২৩ আগস্ট ২৯ ২১:৫৪:১৭
চীনের নতুন মানচিত্রে ভারতের অরুণাচল প্রদেশ ও আকসাই

নিজস্ব প্রতিবেদক: চীন আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের ভূখণ্ডের মানচিত্র হালনাগাদ করেছে। মানচিত্রের ২০২৩ সালের সংস্করণে ভারতের অরুণাচল প্রদেশ এবং আকসাই চিন অঞ্চলকে চীনের অংশ হিসেবে দেখানো হয়েছে।

যদিও দক্ষিণ আফ্রিকায় সদ্য সমাপ্ত ব্রিকস সম্মেলনে চীন ও ভারত সীমান্ত উত্তেজনা কমাতে রাজি হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন ভারতীয় কর্মকর্তারা।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ২৮ আগস্ট প্রকাশিত মানচিত্রটিতে অরুণাচল প্রদেশকে চীনের দক্ষিণ তিব্বত বলে দাবি করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ১৯৬২ সালে চীন-ভারত যুদ্ধে আকসাই চিন নিজেদের ভূখণ্ডের অংশ করে নেওয়া হয়েছে। তাইওয়ান এবং বিতর্কিত দক্ষিণ চীন সাগরকেও নতুন মানচিত্রে চীনা ভূখণ্ডের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

মানচিত্রে দক্ষিণ চীন সাগরের একটি বড় অংশের মালিকানা দাবি করেছে চীন। ভিয়েতনাম, ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া এবং ব্রুনাইও দক্ষিণ চীন সাগর এলাকার মালিকানা দাবি করেছে। এই সাগরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে এই অঞ্চলে ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা বেশ পুরোনো।

চায়না ডেইলি পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, চীনের প্রাকৃতিক সম্পদ মন্ত্রণালয় গতকাল সোমবার চেচিয়াং প্রদেশের ডেকিং কাউন্টিতে জরিপ ও মানচিত্র প্রচার দিবস এবং জাতীয় মানচিত্র সচেতনতা প্রচার সপ্তাহ উদ্‌যাপনের সময় মানচিত্রটি প্রকাশ করে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সীমান্তে ‘উত্তেজনা কমাতে’ রাজি ভারত ও চীনসীমান্তে ‘উত্তেজনা কমাতে’ রাজি ভারত ও চীনসম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে ব্রিকস সম্মেলনের ফাঁকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং সি চিন পিং বৈঠক করেন।

পরে পররাষ্ট্রসচিব বিনয় কোয়াত্রা বলেন, প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে কথোপকথনে প্রধানমন্ত্রী মোদি সীমান্ত অঞ্চলের পশ্চিম অংশে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি) বরাবর অমীমাংসিত সমস্যাগুলোর বিষয়ে ভারতের উদ্বেগ তুলে ধরেছেন।

প্রধানমন্ত্রী মোদি সীমান্ত এলাকায় শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখা এবং ভারত–চীন সম্পর্কের স্বাভাবিকীকরণের জন্য এলএসিকে সমুন্নত রাখা অপরিহার্য বলে উল্লেখ করেছেন। এ বিষয়ে দুই নেতা তাঁদের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রচেষ্টা জোরদার করার নির্দেশ দিতে সম্মত হয়েছেন। এমনটিই জানিয়েছেন নিয়ন কোয়াত্রা।

চায়না ডেইলির প্রতিবেদনে চীনের প্রাকৃতিক সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রধান পরিকল্পক উ ওয়েনঝংয়ের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, জরিপ, ম্যাপিং এবং ভৌগোলিক তথ্য দেশের উন্নয়ন, জীবনের সব স্তরের চাহিদা মেটাতে, প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনায় সহায়তা করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

তিনি বলেন, ‘পরবর্তী পদক্ষেপটি হবে ডিজিটাল মানচিত্র, নেভিগেশন এবং ডিজিটাল অর্থনীতির বিকাশে অবস্থান নির্ণয় করার মতো ভৌগোলিক ডেটার প্রয়োগ ত্বরান্বিত করা।’ ডিজিটাল অর্থনীতি বলতে তিনি স্থান–ভিত্তিক পরিষেবা, নির্ভুল কৃষি, প্ল্যাটফর্ম অর্থনীতি এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যুক্ত যানবাহন পরিচালনাকে বুঝিয়েছেন।

সবগুলো প্রতিবেশী দেশের সঙ্গেই চীনের সীমান্ত বিরোধ রয়েছে। সি চিন পিংয়ের নেতৃত্বে আঞ্চলিক নিয়ন্ত্রণ জোরদার করার চেষ্টা বাড়িয়ে দিয়েছে চীন। সর্বশেষ অরুণাচল প্রদেশের কিছু অংশের ওপর আনুষ্ঠানিক দাবি তুলল। চীন বলছে, এই স্থানগুলো বৃহত্তর তিব্বতের অংশ।

গত এপ্রিলে ১১টি ভারত নিয়ন্ত্রিত অংশের ‘নাম পরিবর্তন’ করেছিল চীন। এর মধ্যে ছিল পর্বত শৃঙ্গ, নদী এবং আবাসিক এলাকা। এর আগে ২০১৭ এবং ২০২১ সালে চীনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও কয়েকটি ভারত নিয়ন্ত্রিত এলাকার নাম পরিবর্তন করে।

চীনের এমন পদক্ষেপের বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি আগে বলেছিলেন, ‘ভারতের অরুণাচল প্রদেশকে অন্তর্ভুক্ত করা চীনের আধিপত্য বিস্তার চেষ্টার অংশ। চীনের এমন প্রচেষ্টা এটাই প্রথম নয়। আমরা এরই মধ্যে এ ধরনের যে কোনো প্রচেষ্টার নিন্দা জানিয়েছি। অরুণাচল প্রদেশের ব্যাপারে আমরা এটাও বলেছিলাম যে, অরুণাচল প্রদেশ ভারতের এবং এই ধরনের উদ্ভাবিত নাম চাপিয়ে দিলে বাস্তবতা একেবারেই বদলাবে না।’

শেয়ারনিউজ,২৯ আগস্ট ২০২৩

পাঠকের মতামত:

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ খবর

আন্তর্জাতিক - এর সব খবর



রে