ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২ অক্টোবর ২০২৫
Sharenews24

ফ্লোটিলা মিশন ব্যর্থ? সংকেতহীন ২৬টি নৌযান ঘিরে রহস্য

২০২৫ অক্টোবর ০২ ১৬:২৪:০১
ফ্লোটিলা মিশন ব্যর্থ? সংকেতহীন ২৬টি নৌযান ঘিরে রহস্য

নিজস্ব প্রতিবেদক : ইসরায়েলের নৌবাহিনী ১৩টি নৌযান আটক করার পরও গাজার উদ্দেশে যাত্রা অব্যাহত রেখেছিল গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার ৩০টি নৌযান। তবে এখন পর্যন্ত ওই ৩০টি নৌযানের মধ্যে মাত্র চারটির অবস্থান শনাক্ত করা গেছে। এগুলো হলো—শিরিন, সামারটাইম জং, মিকেনো এবং মেরিনেত্তি। আন্তর্জাতিক ট্র্যাকিং সংস্থা ফ্লোটিলা ট্র্যাকার ও সিএনএনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাকি ২৬টি নৌযানের কোনো তথ্য নেই—তারা যাত্রা অব্যাহত রেখেছে কি না, নাকি ইসরায়েল কর্তৃক গোপনে আটক হয়েছে, তাও অনিশ্চিত।

শিরিন ও সামারটাইম জং নৌযান দুটি বহরের অংশ হলেও এতে কোনো ত্রাণসামগ্রী ছিল না; এতে ছিলেন আন্তর্জাতিক আইনজীবীরা, যারা ৩১ আগস্ট শুরু হওয়া গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা মিশনে আইনি সহায়তার জন্য যুক্ত হয়েছিলেন। অন্যদিকে মিকেনো ও মেরিনেত্তি ছিল পূর্ণমাত্রায় ত্রাণবাহী, এবং তারা গাজার উপকূলের খুব কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল। পরিকল্পনা অনুযায়ী, এগুলো বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় দুপুরের মধ্যে গাজার উপকূলে পৌঁছানোর কথা ছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা ২১ মিনিটের পর থেকে এই চারটি নৌযানের সঙ্গেও ট্র্যাকিং যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ফলে ধারণা করা হচ্ছে, হয় তারা ইসরায়েলি নৌবাহিনীর দ্বারা আটক হয়েছে, অথবা স্যাটেলাইট ট্র্যাকিং ব্লক করে দেওয়া হয়েছে, কিংবা নিরাপত্তাজনিত কারণে নিজেরাই ট্রান্সমিশন বন্ধ করেছে।

এই ফ্লোটিলা অভিযানটি মূলত গাজা উপত্যকার অবরুদ্ধ জনগণের কাছে মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্যে আয়োজিত হয়েছিল। ৩১ আগস্ট স্পেনের একটি বন্দর থেকে ৪৩টি নৌযান নিয়ে যাত্রা করে ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’, যাতে ছিল খাদ্য, ওষুধসহ জরুরি ত্রাণসামগ্রী। এই মিশনে অংশ নেয় ৪৪টি দেশের প্রায় ৫০০ জন মানবাধিকারকর্মী, রাজনীতিবিদ, আইনজীবী ও স্বেচ্ছাসেবী। উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন সুইডিশ পরিবেশ আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ এবং দক্ষিণ আফ্রিকার প্রয়াত নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার নাতি মান্ডলা ম্যান্ডেলা।

এই বহরটি যখন গাজার উপকূল থেকে ১৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছিল, ঠিক তখনই ইসরায়েলি নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ বহরটির চারপাশ ঘিরে ফেলে এবং প্রথম ধাপে ১৩টি নৌযান জোরপূর্বক আটক করে। সেগুলোর মধ্যে কয়েকটির নাম জানা গেছে—স্পেক্টার, অ্যালমা, সাইরাস, হুগা এবং মালি। ওই নৌযানগুলোতে ছিলেন প্রায় ২০০ যাত্রী ও ক্রু, যাদের সবাইকে ইসরায়েলের একটি বন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়।

১৩টি নৌযান আটকের পরও বাকিগুলো গাজার দিকে যাত্রা চালিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু এরপর থেকেই একে একে তাদের অবস্থান শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়ে। এখন পুরো বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে গভীর উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, ইসরায়েল যদি সত্যিই অবরোধে থাকা গাজার জনগণের জন্য পাঠানো নিরস্ত্র মানবিক বহরের ওপর এই ধরনের দমনমূলক ব্যবস্থা নিয়ে থাকে, তাহলে তা আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

মুসআব/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ খবর

আন্তর্জাতিক - এর সব খবর



রে