ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
Sharenews24

স্ত্রীর লিঙ্গ নিয়ে চাঞ্চল্যকর বিতর্কে প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ

২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৮ ১৯:০৯:৩২
স্ত্রীর লিঙ্গ নিয়ে চাঞ্চল্যকর বিতর্কে প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ

নিজস্ব প্রতিবেদক: ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ও তার স্ত্রী ব্রিজিত ম্যাক্রোঁ—এই দম্পতি বিশ্ব রাজনীতির অন্যতম আলোচিত যুগল। প্রায় ১৭ বছর ধরে একসঙ্গে বসবাস করলেও, সম্প্রতি এক অদ্ভুত দাবি ও বিতর্কে তাদের ব্যক্তিগত জীবন আলোচনার কেন্দ্রে চলে এসেছে।

এই চাঞ্চল্যকর ও ভিত্তিহীন দাবি করেছেন মার্কিন ডানপন্থি ইনফ্লুয়েন্সার ক্যানডেস ওয়েন্স। শুধু তাই নয়, তিনি এই দাবির পক্ষে নানা ‘তথ্য’ ছড়িয়ে দেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে, যা রীতিমতো রাজনৈতিক ও সামাজিক আলোড়ন তোলে।

এই মানহানিকর অভিযোগকে চ্যালেঞ্জ করে যুক্তরাষ্ট্রে ক্যানডেস ওয়েন্সের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ম্যাক্রোঁ দম্পতি। মামলার কেন্দ্রে রয়েছে—ব্রিজিত ম্যাক্রোঁর নারীসত্তা প্রমাণ।

প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এ মামলায় বিজ্ঞানভিত্তিক প্রমাণ, পারিবারিক ছবি ও নথিপত্র আদালতে উপস্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যাতে ওয়েন্সের দাবি মিথ্যা প্রমাণ করা যায়।

ম্যাক্রোঁ দম্পতির পক্ষে আইনি লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের খ্যাতনামা আইনজীবী টম ক্লেয়ার। তিনি জানিয়েছেন:“ব্রিজিত ম্যাক্রোঁ নিজে এই ভিত্তিহীন অভিযোগে মানসিকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন। রাষ্ট্রের প্রথম নারী হয়েও ব্যক্তিগতভাবে এমন অপমানজনক আক্রমণের শিকার হওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক।”

তিনি আরও বলেন:“আমরা এই মামলায় কী ধরনের বৈজ্ঞানিক প্রমাণ আদালতে উপস্থাপন করবো, তা এখনই বলা যাবে না। তবে সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য যা যা প্রয়োজন, আমরা তা আদালতে দেবো। আমাদের কাছে যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে।”

প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ ও তার স্ত্রী মামলায় গর্ভাবস্থার ছবি, সন্তানদের বড় করার সময়ের পারিবারিক ছবি, মেডিক্যাল রিপোর্টসহ নানা নথি আদালতে জমা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

ব্রিটিশ গণমাধ্যম BBC-এর ‘Fame Under Fire’ পডকাস্টে ক্লেয়ার বলেন:“প্রয়োজনে ব্রিজিত ম্যাক্রোঁ নিজের গর্ভাবস্থার ছবি ও সন্তানদের লালনপালনের প্রমাণও দিতে প্রস্তুত।”এমনকি তিনি জানান, এই ধরনের আক্রমণ শুধু ব্যক্তি নয়, পুরো রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ও পরিবারের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

পটভূমি: ব্রিজিত ম্যাক্রোঁ

ব্রিজিত ম্যাক্রোঁ (জন্ম: ১৩ এপ্রিল ১৯৫৩), পেশায় ছিলেন একজন স্কুল শিক্ষিকা।

ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সাথে তার পরিচয় হয় ছাত্র ও শিক্ষিকার সম্পর্কের সূত্রে, যা পরে প্রেমে রূপ নেয়।

তাদের বয়সের পার্থক্য ২৪ বছর হলেও, ২০০৭ সালে তারা বিয়ে করেন।

বিয়ের পর থেকে ফ্রান্সের রাজনীতিতে ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তারা একজন আলোচিত দম্পতি।

বিশ্লেষকদের মতে, এই প্রচার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, যা ইউরোপীয় রাজনীতিতে বিশেষ করে ফ্রান্সে ম্যাক্রোঁর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা।

বিশ্বজুড়ে উগ্র ডানপন্থি গোষ্ঠী যেমন অভিবাসন বিরোধী, নারীবাদ বিরোধী এবং লিবারেল মতাদর্শ বিরোধী, তারা প্রায়ই এ ধরনের ‘কনস্পিরেসি থিওরি’ ছড়িয়ে নিজেদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের চেষ্টা করে থাকে।

একদিকে রাষ্ট্র পরিচালনার গুরুদায়িত্ব, অন্যদিকে স্ত্রীকে নারী প্রমাণের মতো ব্যক্তিগত অপবাদ মোকাবিলা—এই দুই ফ্রন্টেই লড়ছেন প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ।তিনি শুধু আইনি পথেই প্রতিক্রিয়া দিচ্ছেন, যা একজন গণতান্ত্রিক নেতার সংযত ও সুবিবেচিত অবস্থানের দৃষ্টান্ত।

সত্যকে প্রতিষ্ঠা করতে প্রমাণ দরকার, অপবাদকে নির্মূল করতে সময় ও সাহস—দুটোই আছে ফরাসি প্রেসিডেন্টের!

জাহিদ/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ খবর

আন্তর্জাতিক - এর সব খবর



রে