ঢাকা, শনিবার, ২ আগস্ট ২০২৫
Sharenews24

যে গ্রামের সবাই তিন বেলা একসঙ্গে খায়

২০২৫ আগস্ট ০২ ১৮:২৩:৩২
যে গ্রামের সবাই তিন বেলা একসঙ্গে খায়

নিজস্ব প্রতিবেদক: ভিয়েতনামের তাই হাই নামের একটি ব্যতিক্রমধর্মী গ্রাম রয়েছে, যেখানে প্রায় ২০০ জন মানুষ ২২ বছর ধরে একসঙ্গে তিন বেলা খাওয়া-দাওয়া করে আসছেন। প্রতিদিন ভোর ৫টায় কাঠ কাটার শব্দে গ্রামটি জাগে। একে একে ৩০টি ঘরের দরজা খুলে সকালের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন গ্রামের বাসিন্দারা। সবার দিন শুরু হয় একসঙ্গে নাশতা খাওয়ার মধ্য দিয়ে।

নাশতার পর তারা যে যার মতো কাজে বেরিয়ে যান—কেউ চা-বাগানে, কেউ কাঠের কাজে, আবার কেউ পর্যটন গাইড বা খামারে। শিশুদের জন্য রয়েছে নার্সারি, আর বড়রা স্কুলে যায় পরিবারসহ। দুপুর ১১টায় আবার ঘণ্টা বেজে ডাকে মধ্যাহ্নভোজের জন্য। যদিও এখন সবাই আলাদা প্লেটে খায়, তবু একসঙ্গে না খাওয়া পর্যন্ত খাবার শেষ হয় না যেন!

দিনের শেষ খাবারের ঘণ্টা বাজে সন্ধ্যা ৭টায়। কাজ শেষে সবাই ফিরে আসে, একসঙ্গে রাতের খাবার খেয়ে নিজ নিজ ঘরে সময় কাটায় পরিবারের সঙ্গে।

এই গ্রামে সবার আয় যায় একটি কেন্দ্রীয় তহবিলে, যার তত্ত্বাবধানে আছেন গ্রামপ্রধান ও একটি কাউন্সিল। সেখান থেকেই চালানো হয় খাবার, বিদ্যুৎ, চিকিৎসা, পড়াশোনা, এমনকি বিয়ের খরচও। ব্যক্তিগত মালিকানা বা সম্পদের লড়াই এখানে নেই। মোবাইল বা ল্যাপটপ কিনতে হলেও কাউন্সিলের অনুমতি নিতে হয়।

গ্রামটির প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন ৬৩ বছর বয়সী নগুয়েন থি থান হাই। তিনি তাই জাতিগোষ্ঠীর ঐতিহ্য বাঁচিয়ে রাখতে নিজের সব জমি বন্ধক রেখে ২০০৩ সালে ২০ হেক্টর জমিতে ৩০টি প্রাচীন কাঠের ঘর বসিয়ে গ্রামটি গড়ে তোলেন। প্রথমে তাঁর পরিবার ও সংস্কৃতিপ্রেমী কয়েকজন থাকলেও পরে তা হয়ে ওঠে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ কমিউনিটি।

২০১৪ সালে গ্রামটিকে সরকারি পর্যটনকেন্দ্র ঘোষণা করা হয়। এরপর ২০২২ সালে জাতিসংঘের বিশ্ব পর্যটন সংস্থা তাই হাইকে বিশ্বের অন্যতম সেরা পর্যটন গ্রাম হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।

এখানকার শিশুরা তাই ভাষায় কথা বলে, লোকসংগীত শেখে এবং দেশীয় খেলনা দিয়ে খেলে। এখানকার তরুণদের বিশ্বাস—‘এক হাঁড়ি, এক পয়সা’-এই দর্শনেই শান্তি নিহিত। এই গ্রামে ঐতিহ্য, একতা আর ভাগাভাগির মধ্যে গড়ে উঠেছে এক অনন্য শান্তিময় জীবনযাত্রা।

মুসআব/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ খবর

আন্তর্জাতিক - এর সব খবর



রে